বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘একনায়ক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে, এরশাদের বিরুদ্ধে ৯ বছর লড়াই করেছি। কিন্তু এত খারাপ সময় আমরা কখনও পার করিনি। পাকিস্তানের সঙ্গে ৯ মাস যুদ্ধের সময় ভয়াবহ অবস্থা ছিল। কিন্তু তার আগে পাকিস্তানিরা এভাবে উলঙ্গভাবে মানুষ হত্যা করেনি, আজ আওয়ামী লীগ যেভাবে করছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এখন সময় এসেছে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, রুখে দাঁড়াবার। আজ বাংলাদেশের প্রতিটি বিবেকবান মানুষের দায়িত্ব হচ্ছে এই ভয়াবহ পরিণতি থেকে দেশকে রক্ষা করা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারি না কিছু প্রতিষ্ঠানের ওপর এখনও আস্থা আছে কীভাবে? হাইকোর্ট জামিন দিয়েছেন, অথচ সর্বোচ্চ আদালত সেটি স্টে করে দিয়ে কৌশলের অবলম্বন করে ছুটির পরে দেওয়া হবে বলে মাসের পর মাস খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। আমি জানি না একথা বলার কারণে আদালত অবমাননা হবে কিনা। হলেও কিছু যায় আসে না। কারণ, এখন আর হারাবার কিছু নেই। এখন সময় এসেছে রুখে দাঁড়াবার, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করার।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বহুবার সরকারকে আহ্বান জানিয়েছি আলোচনা করে এ পরিস্থিতির পরিসমাপ্তি ঘটান। কিন্তু তারা কিছুতেই কর্ণপাতই করেছেন না। তারা সব সময় বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সবকিছু হবে। এই সংবিধান তো আপনারা কেটেকুটে শেষ করে দিয়েছেন। আপনাদের সুবিধামতো আপনারা সংবিধান সাজিয়ে নিয়েছেন, কীভাবে আবার ক্ষমতায় আসতে পারবেন সেই রকম করে।’
‘মানুষ নিজের বাসার ড্রইং রুমেও কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না’ মন্তব্য করে করেন বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কেউ যদি রেকর্ড করে নিয়ে যায় সেই ভয়তে এখন কেউ কথা বলে না। এমনকি রাজনৈতিক কর্মীরাও পারস্পরিক কথাবার্তা সাবধানে বলেন। কারণ, পারস্পরিক সেই কথার কারণে আবার সমস্যা না হয়।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বক্তব্য দেওয়ার দিন শেষ। এখন আমাদের কাজে নামতে হবে, দেশরক্ষার কাজে। খালেদা জিয়া শুধু একজন ব্যক্তি বা বিএনপির চেয়ারপারসন নন। তিনি দেশের গণতন্ত্রের ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাকে এভাবে গায়ের জোরে কারাগারে আটক রাখার অর্থই হচ্ছে দেশের গণতন্ত্রকে পুরোপুরি ধ্বংস করা, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করা, জনগণের অধিকার হরণ করে একক ব্যক্তির শাসন প্রতিষ্ঠা করা।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনসি বজলুল বাসিত আনজু প্রমুখ।