04/22/2025 মাটি বিক্রি ও নিন্মমানের কাজের অভিযোগ নির্মানের শুরুতেই বেহাল দশা শেরপুর- ভবানীপুর রাস্তার
Mahbubur Rohman Polash
২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৬:২৬
আব্দুর রাহিম, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি:
এখনো নির্মান কাজের মেয়াদ শেষ হয়নি! ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি
তড়িঘড়ি করে নির্দিষ্ট সময়ের তিন মাস আগেই রাস্তাটি
নির্মান কাজ শেষ করে সম্পূর্ন বিল উঠিয়ে নেয়ার পাশাপাশি
জনগনের চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করা হয়েছে। অথচ রাস্তাটি উম্মুক্ত
করে দেয়ার ৭দিনের মধ্যে কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট বড়
অসংখ্য খানা খন্দেও সৃষ্টি হয়। সে সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য
বিষয়টি নিয়ে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিলে কোন রকমে
রাস্তাটি মেরামত করা হয়। পরবর্তিতে ২ মাসের ব্যবধানে রাস্তাটির
বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হয়ে পরেছে। দুরাবস্থায় পতিত
রাস্তাটি হলো বগুড়ার শেরপুরের শেরুয়া বটতলা হতে ভবানীপুর
রোডের ব্রাক বটতলা পর্যন্ত।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সুত্রে জানা যায়, শেরপুর উপজেলার
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি রাস্তা হলো শেরপুর-ভাবনীপুর রাস্তাটি।
উপজেলার শেরুয়া বটতলা হতে মহাসড়ক থেকে বাইপাস হয়ে ব্রাক
বটতলা দিয়ে ভবানীপুরে যাতাযাত করা যায়। বেশ কয়েক বছরে
বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তাটি পাকা হলেও
আন্দিকুমড়া হতে ব্রাক বটতলা পর্যন্ত ২৪শ ৩৫ মিটার পাকা না
হলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারন করে। পরবর্তিতে স্থানীয় সংসদ
সদস্যেও প্রচেষ্টায় এলজিইডির অর্থায়নে ২০১৭/১৮ অর্থবছরে ১
কোটি ৪৮ লক্ষ ৮৫ হাজার ৩শ ৪৫টাকা ব্যয়ে রাস্তাটি নির্মানের
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেন। টেন্ডারে রাস্তাটির কাজ পান
ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিটিএসএল। ওই ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠান হতে কাজ কিনে নেন বগুড়ার ইসলাম এন্টারপ্রাইজ।
কাজটি শেষ করার সময় নির্ধারণ করে দেয়া ৩০ আগষ্ট ২০১৮।
কাজটির ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয় ৫ নভেম্বর ২০১৭। সংশ্লিষ্ট
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় তিন মাস আগেই
নির্মান কাজ শেষ করেন এবং রাস্তাটি চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে
দেয়া হয়। উম্মুক্ত হওয়ার ৭দিনের মধ্যেই রাস্তাটির বিভিন্ন যায়গায়
কার্পেটিং উঠে খানা খন্দ সৃষ্টি হয় ও বিভিন্ন স্থানে দেবে
গিয়ে যান চলাচলে বিঘœ ঘটতে থাকে। সে সময় উপজেলা
প্রকৌশলী অফিস প্রয়োজনী ব্যবস্থা না নেয়া ও পর্যাপ্ত তদারকি
না করায় জনমনে অসন্তোষ দেখা দিলে পরবর্তিতে সংসদ সদস্য
আলহাজ্ব হাবিবর রহমানের চাপের কারনে রাস্তাটি কোন রকমে
মেরামত করা হয়।
এলাকাবাসি জানায়, রাস্তাটি নির্মানের সময় যে পরিমান মাটি
খননের প্রয়োজন ছিল তার চাইতে অনেক বেশি খনন করে মাটি
স্থানীয় ব্যাক্তিদের নিকট মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করা হয়।
পরবির্তিতে নিন্ম মানের বিটবালু ও খোয়া দিয়ে রাস্তাটি
নির্মানের সময় দুধারের চাইতে বেশ কয়েক ইঞ্চি নিচু করে
নির্মান করা হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা উপজেলা প্রকৌশলী
অফিসে গিয়ে বারবার অভিযোগ দিলেও কোন এক কালো হাতের
ইশারায় কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে এই ২৪শ ৩৫ মিটার রাস্তার
অধিকাংশ স্থানে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায় এবং অসংখ্য
খানা খন্দ সৃষ্টির পাশাপাশি কিছুটা দেবে গিয়ে জনদুর্ভোগের
সৃষ্টি করে। অতিগুরুত্বপূর্ন রাস্তাটি তৈরীর পর পরই এমন বেহাল
অবস্থায় উপনিত হওয়ায় জনমনে নানা অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ওই
এলাকার সাধারণ জনগনের দাবী রাস্তাটি নতুন করে তৈরী করতে
দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হোক।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক
আব্দুল হান্নান তালুকদার জানান, আমরা জনগুরুত্বপূর্ন রাস্তাটি
নির্মানের সময় কাজের নিন্মমান, ২ নং ইটের খোয়ার ব্যবহার ও
রাস্তা থেকে মাটি তুলে অন্যত্র বিক্রির বিরোধীতা করি। পরবর্তিতে
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় এমপি মহোদয়ের স্মরনাপন্ন হই। তারপরেও
প্রকৌশলী অফিস কোন ব্যবস্থা নেননি। এমনকি রাস্তাটি
নিন্মমানের কাজ হলেও সংশ্লিষ্ট অফিস ঠিকাদারের সম্পূর্ন বিল
পরিশোধ করেছেন। সেখানে বড় অংকের কমিশনের অভিযোগ
উঠেছে।
কাজের তদারকির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি প্রকৌশলী আব্দুর
রশিদ জানান, কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি হয়েছে। এবং
সাংবাদিকদেরকে না লেখার অনুরোধ করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী নুর মোহাম্মদ বলেন, নিয়ম মেনেই
কাজ করা হয়েছে, তবে রাস্তাটির দুধার উচু হওয়ায় খুব দ্রত
কার্পেটিং উঠে গেছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে মেরামতের জন্য
তাগিদ দেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, যদি
অনিয়ম করার কারনে রাস্তার এ অবস্থা হয়ে থাকে তাহলে আইনানুগ
ব্যবস্থা নেয়া হবে।