নড়াইল জেলার কালিয়াবাসীর স্বপ্ন সত্যি হচ্ছে। নবগঙ্গা নদীর বারইপাড়া এলাকায় নির্মিত হচ্ছে স্বপ্নের সেতু। সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে নবগঙ্গা নদীর দুপাড়ের প্রায় তিনলক্ষ মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার সহজ হবে।
জানা গেছে, জেলা সদরের সঙ্গে এ উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ কোন ব্যবস্থা নেই। কালিয়া উপজেলাকে নড়াইল জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে এ নদী। জেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হত এ উপজেলার মানুষদের। সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের জন্য কালিয়ার বারইপাড়া ঘাটে একটি সেতু নির্মাণ এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বারইপাড়া ঘাট দিয়ে নদী পার হয়ে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, হাসপাতালে বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াত করে থাকেন। যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় এখানে গড়ে ওঠেনি কোন শিল্প-কলকারখানা। এলাকায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য শহরে আনতে পড়েন চরম দুর্ভোগে। কোন দুর্ঘটনা ঘটলে থানা থেকে পুলিশ যথাসময়ে আসতে পারে না। কালিয়ার আগুন লাগলে দ্রুত পৌছাতে পারে না ফায়ার সাভির্সের গাড়ী ও জরুরী রোগী পরিবহনের জন্য এ্যা¤ু^লেন্স। ঘাটে যেয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় নদীর পার হওয়ার জন্য। স্থানীয় সংসদ সদস্যের আন্তরিক প্রচেষ্টায় কালিয়াবাসীর চলাচলের জন্য সেই কাঙ্খীত সেতুটি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
বারইপাড়া গ্রামের বাদশা মিয়া বলেন, নৌকায় নদী পার হতে হলে প্রতিদিন প্রচুর সময় নষ্ট ও অর্থ ব্যয় হয়। বিশেষ করে রোগীদের শোচনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয় এখানে। সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে কালিয়া উপজেলা সদরের সাথে আমাদের যোগাযেগ ব্যবস্থা সহজ হবে।
কালিয়া সরকারি শহীদ আব্দুস সালাম ডিগ্রী কলেজে ছাত্রী আছিয়া খানম বলেন, আমি কায়িলা উপজেলা সদরে অবস্থিত কলেজে লেখাপড়া করি কিন্তু নদী পারাপারের জন্য অনেক সময় নষ্ট হয় যার কারণে ঠিকমত ক্লাস করতে পারিনা। সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে সময়মত কলেজে যেতে পারব এবং ক্লাস করতে পারব।
কলেজ ছাত্র রনি রহমান বলেন, সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের নদী পারাপার হতে হয়। সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে আমাদের আর সমস্যা থাকবেনা। রনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তিকে অভিনন্দন জানায় সেতুটি নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।
নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফরিদ উদ্দিন বাসস’কে বলেন, নড়াইল-কালিয়া সড়কের ২১ তম কিঃ মিঃ নবগঙ্গা নদীর উপর বারইপাড়া সেতু নির্মাণের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোঃ মইনুদ্দীন বাসী ও মোঃ জামিল ইকবাল যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করছে। প্রায় ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দৈর্ঘ ৬৫১.৮৩ মিটার এবং ১০.২৫ মিটার প্রস্থ সেতুটি নির্মাণ হবে। সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে ১৮ মার্চ ২০১৮। মূল সেতুর এবার্ট পাইলিং এর কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে আগামী ২০১৯ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি বাসস’কে বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের মহাসড়কের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছায় বারইপাড়া সেতুটি নির্মান কাজ শুরু হয়েছে। বারইপাড়া এলাকায় এ সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হলে এ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন হবে।