05/25/2025 রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান ফিনল্যান্ডের
Akbar
১১ এপ্রিল ২০১৯ ২২:৩১
ঢাকা: বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিনল্যান্ডের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত নিনা ভাসকুনলাতি রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদেরকে দ্রুত নিজ বাসভূমে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের চাপ অব্যাহত রাখতে হবে।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসে এ আহ্বান জানান। সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
১০লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর প্রবেশ এবং কক্সবাজারে আশ্রয় গ্রহণের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের সংখ্যা বর্তমানে স্থানীয়দেরকেও ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের স্থানীয় জনরা কেবল মানবতার স্বার্থে তাদের সব দুর্ভোগ বরণ করে নিয়েছে।’ ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত এ সময় বিগত নির্বাচনে বিপুল বিজয় অর্জন করে চতুর্থবারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।
ফিনল্যান্ডের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত নিনা ভাসকুনলাতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চমকপ্রদ উন্নয়নেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আপনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুতলয়ে এগিয়ে চলছে।
বাংলাদেশের বস্ত্র এবং জ্বালানি খাতে তার দেশের বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা বর্জ্য থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চাই।
তিনি বলেন, ফিনল্যান্ড বাংলাদেশের সঙ্গে শিক্ষা এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী। বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থীর ফিনল্যান্ডে পড়াশোনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত বলেন, দুটি দেশের মধ্যে আগামী মে মাসে ফরেন অফিস কনসালটেন্সি অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ উচ্চ মানসম্পন্ন চামড়া এবং চামড়াজাত দ্রব্য প্রস্তুত করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিনল্যান্ড চাইলে এখান থেকে এসব পণ্য নিজ দেশে আমদানি করতে পারে।
দেশের সামগ্রিক উন্নয়নই তার সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে তার সরকার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ তার সরকার জিডিপি ৮ দশমিক ১ শতাংশে বৃদ্ধির আশা করছে।
তিনি বলেন, আমাদের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর বাসযোগ্য আবাসস্থল গড়ে তুলতে নেদারল্যান্ড সরকারের সহযোগিতায় ডেল্টা প্লান-২১০০ প্রণয়ন করেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন এবং ফিনল্যান্ডের অনারারী কনসাল জেনারেল আজিজ খান।
এর আগে সফররত ভারতীয় প্রতিরক্ষা সচিব সঞ্জয় মিত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক ল্যান্ড বাউন্ডারি এগ্রিমেন্টের (এলবিএ) কথা উল্লেখ করে চুক্তিটি ভারতের জাতীয় সংসদে সর্ব সম্মতিক্রমে পাশ হওয়ায় ভারত সরকার এবং দেশটির সব রাজনৈতিক দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ভারতের সব রাজনৈতিক দল দেশটির সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে এই সীমান্ত চুক্তি বিলটি পাশ করেছে।’ প্রধানমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের দ্ব্যর্থহীন সমর্থনের কথা স্মরণ করেন।
ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা বিষয়ে দুই দেশের সহযোগিতার বিষয়গুলো উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহফুজুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন এবং ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা দাস গাঙ্গুলী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।