সোনা ঝরা রোদ ছড়াতে ছড়াতে প্রকৃতি এখন চৈত্রের শেষ প্রান্তসীমায়। ধুলোমাখা বাউল বেশে নাচতে নাচতে আসছে বৈশাখ। দিকে দিকে চলছে নতুন বছরকে বরণের প্রাক প্রস্তুতি।  ১৪২৩ বাংলাকে বিদায় জানিয়ে ১৪২৪ কে স্বাগত জানাতে মালয়েশিয়ায় বাঙালি কমিউনিটির মধ্যে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। 

 

প্রবাহমান ধারায় নানা লোকাচার উৎসবে প্রাণ পেয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে বাঙালির কৃষ্টি। বাঙালির প্রাণের এই উৎসব মূলত বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও জাতিসত্তার প্রতীকী উপস্থাপনা। এসব উৎসবের দিনগুলোতে বাংলাদেশের মানুষ বাঙালিত্বের মন্ত্রে দীক্ষিত হয় আরো একবার। বাংলাদেশের সাথে আত্মিক পরিচয় ঘটাতে মালয়েশিয়ায় জন্ম এবং বেড়ে ওঠা শিশুদের জানান দিতে প্রতিবছর কমিউনিটির সামাজিক সংগঠনগুলো বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে শিখিয়েছে যে বৈশাখ, পুরনোকে পেছনে ফেলে নতুনকে বরণ করে নিতে বছর শেষে আবার আসছে সেই বৈশাখ। আর মাত্র তিনদিন  পরেই পহেলা বৈশাখ। ১৪২৪ বাংলা বছরের প্রথম দিন। বৈশাখের প্রথম দিনটিকে ঘিরে গান-বাদ্য আর উৎসব আমেজে মেতে ওঠা বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য। রাত-দিন নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি ও কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন রংয়ের মিশ্রণে অনবদ্য শৈলির আমন্ত্রণপত্র তৈরি করা হয়েছে। বিতরন  চলছে দাওয়াত নামা। প্রবাসীদের আয়োজনে প্রতিবারের মতো এবারও বর্ষবরণের অনুষ্ঠান মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ক্লাবে অনুষ্ঠিত হবে। সময়ের পরিক্রমায় মালয়েশিয়ায় বৃহৎ ও সার্বজনীন এক উৎসবে পরিণত হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন অনেকে। এমনটাই জানিয়েছেন মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ষ্টুডেন্ট ইউনিয়ন, বাংলাদেশ কমিউনিটি জহুর ও আমরা প্রবাসী যুব সংঘের  কর্মকর্তারা।

 

এ দিকে ১৪ এপ্রিল পর্যটন খ্যাত বুকিতবিনতাং এলাকায় রসনা বিলাস রেষ্টুরেন্টে বৈশাখী আয়োজনে রয়েছে,পান্তা ইলিশ ভোজন ও  দিন ভর বাউল গানের আসর। বাঙালির নিজস্ব উৎসবের একটি হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এই দিনটির মাধ্যমে স্বাগত জানাবে  নতুন বছরটিকে। বাংলাদেশের কৃষ্টি কালচার, ইতিহাস ও ঐতিয্য এই অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হবে বলে জানান রসনা বিলাস রেষ্টুরেন্টের কর্ণধার এস এম রহমান পারভেজ। তিনি বলেন,পহেলা বৈশাখে দিন ব্যাপী চলবে বাউল গানের আসর। রসনা বিলাশের এ আয়োজনকে সফল করতে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত সর্বস্তরের প্রবাসীকে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ২৪ এপ্রিল দেওয়ান সেরি ইস্কান্দার হলে বাংলাদেশ ষ্টুডেন্ট ইউনিয়ন ও ২৯ এপ্রিল কুয়ালালামপুরের ক্যাফ্ট কালচারাল কমপ্লেকসে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন দিন ব্যাপী নাচ, গান, আবৃত্তি, অভিনয়, কৌতুক ও বৈশাখী মেলার আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের।