04/22/2025 বাজেট প্রসঙ্গে বিএনপি ও সিপিডিকে তথ্যমন্ত্রীর একহাত
odhikar patra
১৬ জুন ২০১৯ ০০:২১
চট্টগ্রাম, শনিবার ১৫ জুন ২০১৯ : বাজেট নিয়ে 'অযথা সমালোচনা' করায় বিএনপি ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি'র তীব্র সমালোচনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার বিকেলে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে রেড ক্রিসেন্ট আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমসাময়িক বিষয়ে দৃষ্টিপাত করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট, ভারতের প্রধানমন্ত্রী, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদসহ সমগ্র বিশ্ব প্রশংসা করে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এনিয়ে আক্ষেপ করেন, অথচ শুধু প্রশংসা করতে পারে না একটি পক্ষ। ওনারা পণ্ডিতি ফলানোর জন্য নানা ধরনের কথা বলেন। গত ১০ বছরে বাজেট দেওয়ার পর কী কী ভুল-ত্রুটি সেগুলোই শুধু সিপিডির দেবপ্রিয় বাবুরা বলেছেন। আমি তাদের কাছে প্রশ্ন রাখি, গত ১০ বছর ধরে ভুল বাজেট দেওয়ার কারণেই দারিদ্র্যতা কি ২০ শতাংশে নেমে আসার মতো যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন হয়েছে?'
‘আপনারা গত ১০ বছর ধরে বাজেটের পর গৎবাঁধা সমালোচনা করে আসছেন, আর এদিকে গত ১০ বছরে দেশে মাথাপিছু আয় ৬০০ ডলার থেকে ২০০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। বাজেটে ভুল থাকলে মাথাপিছু আয় তিনগুণ কী করে হলো? কীভাবে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হলো?' প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, 'আমরা যখন সরকার গঠন করি, তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল। ২০০৯ সালে দেশের লোকসংখ্যা ছিল প্রায় ১৫ কোটি। আমরা তখন ৪০ লক্ষ টন খাদ্য ঘাটতি নিয়ে শুরু করেছিলাম। আজকে দেশে লোকসংখ্যা ১৭ কোটি। এখন বাংলাদেশ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। এগুলো কি সরকারের অর্জন নয়?’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'প্রতি বাজেটের পর ওনারা (সিডিপি-বিএনপি) একটি সংবাদ সম্মেলন করে বিশেষজ্ঞের মতামত দেন। অর্থাৎ ওনারা পণ্ডিত্য দেখানোর চেষ্টা করেন। তারা কি গবেষণা করেন, আমরা জানি না। সিডিপিতে আদৌ কোনো গবেষণা হয় কিনা আমার প্রশ্ন আছে, সন্দেহ আছে।'
'তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, গত ১০ বছরে দেশটা কীভাবে এগোলো? দারিদ্র্যসীমা অর্ধেকে কীভাবে আসলো? মানুষের মাথাপিছু আয় সাড়ে ৩ গুণ কীভাবে বাড়লো? ক্রয়ক্ষমতা কীভাবে আড়াই গুণ বাড়লো? খাদ্যঘাটতির দেশ থেকে কীভাবে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হলো? বাংলাদেশ সমগ্র পৃথিবীর কাছে কীভাবে উদাহরণ হলো?' জিজ্ঞাসা করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'প্রতি বাজেটের পর বিএনপি বলে, এটি গণমুখী বাজেট নয়। এটি দরিদ্র মানুষের জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না। অথচ বিশ্লেষণ করলে দেখবেন, বাজেটে শিক্ষাখাতে প্রায় ১৭ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে ১২ শতাংশের মত বরাদ্দ। সামাজিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করতে চাই আমরা। এজন্য সামাজিক উন্নয়ন খাতে ব্যাপক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উনারা এগুলো দেখেন না। তাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, দেশ গত ১০ বছরে কীভাবে এতটা এগিয়েছে সেই প্রশ্নের উত্তর দিন। সেটা দিতে না পারলে, আপনারা যে সমালোচনা করেন, সেই পথ পরিহার করুন। অবশ্যই আপনারা ভুল-ত্রুটি তুলে ধরবেন। সেটিকে আমরা বিবেচনায় নেবো। কিন্তু পত্রিকার পাতা উল্টালে দেখা যায়, গত ১০ বছরে একই ধরনের বক্তব্য, গৎবাধা সমালোচনা। সিপিডির বক্তব্য ও বিএনপির বক্তব্য একই।'
তথ্যমন্ত্রী বলেন, '২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে গিয়েছিলেন। এরপর টানা ৫ বছর বিএনপির দেশ পরিচালনার পর খাদ্যঘাটতি দাঁড়িয়েছিল প্রায় ৪০ লক্ষ টনে। তাদের ক্ষমতায় থাকাকালীন দারিদ্র্যসীমার নিচে লোকসংখ্যা কমেনি এবং বাংলাদেশ ঋণনির্ভর হয়ে পড়েছিল। বর্তমানে আমাদের বাজেট সামান্য ঋণনির্ভর। বাকিটা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আমরা সংগ্রহ করছি।'
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'গবেষণার নামে যারা বাজেট নিয়ে সমালোচনা করেন, তারা তো এক-এগারোর কুশীলব। এক-এগারোর সরকারের সময় তারা নানাভাবে সুবিধা নিয়েছিলেন। আর বিএনপি'র মনোভাব হচ্ছে, আমরা করতে পারলাম না, তারা করবে কেন। অর্থাৎ যারে দেখতে নারি, তার চলন বাঁকা- সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তারা বাজেট নিয়ে সমালোচনা করছে।'
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ব্যবস্থাপনা বোর্ড সদস্য ও চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. শেখ শফিউল আজমের সভাপতিত্বে আয়োজিত সেমিনারে আলোচনা করেন সিটি ইউনিটের ভাইস চেয়ারম্যান এমএ ছালাম, সেক্রেটারি আবদুল জব্বার, জেলা ইউনিটের সেক্রেটারী নুরুল আনোয়ার চৌধুরী বাহার প্রমুখ।