বিতর্ক দিয়ে শুরু হলো ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ক্রিকেট দ্বৈরথ-এ্যাশেজ। দুই দেশের মধ্যে গতকাল শুরু হওয়া এ মর্যাদার লড়াইয়ে প্রথমে করমর্দন অনুষ্ঠান বাদিল। তার পর অস্ট্রেলিয়া ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের উদ্দেশ্যে সিরিশ কার্ড দেখানো। যা নিয়ে মাঠের বাইরেও জমে উঠেছে লড়াই।
পাঁচ ম্যাচ সিরিজে এজবাস্টনের প্রথম ম্যাচে টস জিতে অস্ট্রেলিয়া আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ইনিংস শুরু করেন ২০১৮ সালের মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিং-এর দায়ে নিষেধাজ্ঞার শাস্তি পাওয়া ক্যামেরন বেনক্রফট ও ডেভিড ওয়ার্নার। দলকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি বেনক্রফট ও ওয়ার্নার। চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে আউট হয়ে যান ওয়ার্নার। তাকে ২ রানে থামিয়ে দেন ইংল্যান্ডের ডান-হাতি পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড।
আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে থাকেন ওয়ার্নার। তার মাঠ থেকে বের হবার ঠিক আগ মূর্হুতে গ্যালারির এক অংশের দর্শক উঠে দাঁড়িয়ে ওয়ার্নারকে উদ্দেশ্য করে ‘সিরিশ কাগজ’-এর হলুদ কার্ড দেখান। ওয়ার্নারকে উদ্দেশ্য করে দর্শকদের এই ‘সিরিশ কাগজ’ দেখানো ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট।
এটি দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক লেগ-স্পিনার ও কিংবদন্তি খেলোয়াড় শেন ওয়ার্ন। তিনি বলেন, ‘দর্শকদের কাছ থেকে এমন আচরন দুঃখজনক। প্রত্যক খেলোয়াড়কেই সম্মান করা উচিত দর্শকদের। নয়তো ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।’
গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ওয়ার্নার-স্মিথকে উদ্দেশ্য গ্যালারি থেকে কুটক্তি করেছিলো বিরাট কোহলির দেশের সমর্থকরা। এমনটি দেখে, মাঠ থেকেই গ্যালারির দর্শকদের উদ্দেশ্যে কোহলি আকার-ইঙ্গিতে হাত নেড়ে বুঝিয়ে দেন- স্মিথ-ওয়ার্নারকে উদ্দেশ্য করে কোন কুটক্তি নয়, তাদের উৎসাহ করা হোক।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বল টেম্পারিং-এর দায়ে বেনক্রফট নয় মাস, স্মিথ-ওয়ার্নারকে এক বছরের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। ওয়ানডে বিশ্বকাপ দিয়ে দলে ফিরেন স্মিথ-ওয়ার্নার। আর অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্ট আঙ্গিনায় একসাথে পথচলা শুরু করলেন স্মিথ-ওয়ার্নার-বেনক্রফট।
এতো গেল দর্শকদের প্রতিক্রিয়া। মাঠে প্রথম বল গড়ানোর আগেই দু’দলের এক ম্যাচ হয়ে গেছে। যে ম্যাচের কেন্দ্র বিন্দু ছিল ‘করমর্দন অনুষ্ঠান।’
বৃটিশ গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক টিম পাইন চেয়েছিলেন ম্যাচের আগে দুই দলের খেলোয়াড়রা করমর্দন করুক। যেটা এর আগে ওয়ানডে সিরিজে করা হয়েছে। মুলত অসি ক্রিকেটারদের ভাবমুর্তি আরো উজ্জল করতেই অধিনায়কের এমন চিন্তা।
করমর্দনের বিষয়টি ম্যাচ রেফারি রঞ্জন মাদুগালের সঙ্গে বৈঠকের সময় বিষয়টি প্রথম জানতে পারেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুট ও কোচ ট্রেভর বেলিস। ইংল্যান্ড াধিনায়ক ও কোচের কাছ থেকে অনুমতি না নিয়েই এ করমর্দন সুচি রাখা হয়েছিল। যাতে সম্মত ছিলনা স্বাগতিক অধিনায়ক ও কোচ। যে কারণে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন শেষ হওয়ার পরই অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটাররা ড্রেসিং রুমের দিকে হাটা শুরু করেন। ইংল্যান্ড খেলোয়াড়রা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন ফিল্ডিংয়ে নামার।
অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের প্রথম বেনক্রফট ৮ ও ওয়ার্নার ২ রান করে ফিরলেও, ২১৯ বলে ১৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৪৪ রান করেন স্মিথ। সাবেক অধিনায়কের ব্যাটিং দৃঢ়তায় প্রথম ইনিংসে ২৮৪ রান করে অস্ট্রেলিয়া। অথচ ১২২ রানেই ৮ উইকেট হারিয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া।