04/19/2025 সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০৪০ সাল নাগাদ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ -তথ্যমন্ত্রী
Mahbubur Rohman Polash
২৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৯:০৪
ঢাকা: বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯
সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০৪০ সাল নাগাদ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ রচনা করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে সিরডাপ সেমিনার হলে বেসরকারি সংস্থা প্রজ্ঞা ও আত্মা আয়োজিত ‘ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল আর্টিক্যাল ৫.৩ বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন’ প্রকাশ ও তামাক বিরোধী গণমাধ্যম পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে তামাকজাত পণ্য ব্যবহারকারীর সংখ্যা বা হার ধীরে ধীরে কমছে। সেটি ৪০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশে নেমে এসছে। এক্ষেত্রে সরকার অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আইন করা হয়েছে, আইনের প্রয়োগও হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই দেখবেন, জনসম্মুখে সিগারেট খাওয়ার কারণে জরিমানা করা হয়েছে। এই খবরগুলো খুব বেশি কাগজে ছাপানো হয় না। সে কারণেই আপনারা বা আমরা জানতে পারি না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য ও নির্দেশনায় তামাকজাত পণ্য ব্যবহার হ্রাসে অনেক অগ্রগতিও হয়েছে, উল্লেখ করে আজীবন অধূমপায়ী ড. হাছান বলেন, ‘সরকার সবাইকে সাথে নিয়ে এই কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। আমি মনে করি আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা বাংলাদেশের নির্ধারিত লক্ষ্য, ২০৪০ সাল নাগাদ একটি তামাকমুক্ত বাংলাদেশ রচনা করা, সেটি সম্ভবপর হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘৩৫ শতাংশ মানুষ তামাক ব্যবহার করে এবং এখান থেকে আস্তে আস্তে ২১ বছর সময়ে পুরোপুরি তামাকমুক্ত দেশ রচনা করার লক্ষ্যেই আমরা কাজ করবো। সেজন্য আমি আপনাদের সুপারিশগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের যারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তাদের কাছে পৌঁছে,দেব। একজন অধূমপায়ী হিসেবে আপনাদের সাথে আমি আছি, থাকব এবং দেশকে ধূমপানমুক্ত করার জন্য আপনাদের কার্যক্রমের সাথে আমি একমত পোষণ করি।’
বিদেশি প্রতিষ্ঠান প্রণীত প্রতিবেদনে দেশকে খাটো করে দেখানোর বিষয়ে সতর্ক করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের একটি বিষয় লক্ষ্য করা প্রয়োজন, পৃথিবীর বিভিন্ন সংস্থা বাংলাদেশকে অনেক সময় নিচের দিকে নামানোর চেষ্টা করে। এই সমস্ত প্রতিবেদনগুলোর সাথে আমি একমত নই। আমি ইউরোপে পড়াশুনা করেছি, আমি বহুবছর ছিলাম এবং সরকারি ও নানা কাজে যেতে হয়। ইউরোপে সমস্ত ক্যাফেতে ছেলে-মেয়ে যেভাবে ধূমপান করে সেখানে অধূমপায়ীর জন্য বসে থাকা কঠিন। আমাদের দেশে কিন্তু সেই পরিস্থিতি নেই। সেকারণে, যারা এই সমস্ত প্রতিবেদন তৈরি করে, তাদেরকে আমি বলবো, তৃতীয় বিশ্বের দেশ বিধায় আমাদেরকে ছোট করে দেখানো, আমাদের এখানে পরিস্থিতি খারাপ, সেটি বলার চেষ্টা করা উচিত নয়। আমাদের প্রতি অন্যায় করা হয়। এই অন্যায় প্রতিবেদন যারা তৈরি করেন, দয়া করে তা করবেন না।’
ই-সিগারেটের বিষয়ে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ই-সিগারেট কিন্তু ধীরে ধীরে বাড়ছে। এবং এই ই-সিগারেটটা পুরোপুরি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। ভারতে সেটিকে আমদানি বন্ধ করা হয়েছে। আমাদের দেশেও এর আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। ইতোমধ্যে আমি এ বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গোচরে এনেছি।’
ধূমপান কমানোর জন্য আমি মনেকরি, ‘বিড়ি এবং সিগারেটের বিজ্ঞাপনে শুধু ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, ধূমপান মৃত্যুর কারণ ঘটায়- এটিও লিখে দেয়া উচিত। এবং কোনো সিনেমা যদি তামাক ব্যবহারের দৃশ্যে এটি সঠিকভাবে না লেখে তাহলে সেন্সর বোর্ড সেটিকে অনুমোদন দেয় না। অর্থাৎ প্রচার মাধ্যমে তামাকের বিরুদ্ধে অন্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে ব্যাপক প্রচারণা আছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে সভায় সম্মানীয় অতিথি হিসেবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ইন্টারপার্লামেন্টারি-আইপিইউ’র অনারারি প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে সিটিএফকে গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসি ইনকিউবেটরের বাংলাদেশ সমন্বয়ক মুহাম্মাদ রুহুল কুদ্দুস ও সেন্টার ফর গুড গভার্নেন্স ইন টোব্যাকো কন্ট্রোল (জিজিটিসি) প্রধান ড. মেরি আসুন্তা এবং আয়োজকদের পক্ষ থেকে অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এ্যলায়েন্স (আত্মা’র) আহবায়ক ও বিডিনিউজ২৪.কম এর চিফ ক্রাইম করসপনডেন্ট মর্তুজা হায়দার লিটন ও প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আত্মার সহ-আহবায়ক নাদিরা কিরণ।
অনুষ্ঠানে দৈনিক প্রথম আলোর সোহাদা আফরিন, বাংলানিউজ২৪’র শরীফ সুমন ও সময় টিভি’র মামুন আব্দুল-াহ’র হতে প্রজ্ঞা তামাক নিয়ন্ত্রণ সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০১৯ তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী। এ ধরনের ধারাবাহিক আয়োজনের জন্য মন্ত্রী প্রজ্ঞা ও আত্মাকে এবং তামাকের বিরুদ্ধে সাংবাদিকতায় পুরস্কৃত এবং অংশ নেয়া সকলকে ধন্যবাদ জানান।
###
-মীর আকরাম PRO