সবচেয়ে জনপ্রিয় ও পঠিত নন্দিত লেখক, চলচ্চিত্রকার এবং নাট্যকার-নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ৭১তম জন্মদিন। মোহনগঞ্জে নানার বাড়িতে তিনি ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণা জেলার  জন্মগ্রহণ করেন। বাবা পুলিশের কর্মকর্তা হওয়ার সুবাদে তাকে দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে থাকতে হয়েছে।  তিনি গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তারপর পলিমার কেমিস্ট্রির ওপর পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রি বিভাগে। 

হুমায়ূন আহমেদ তার অনবদ্য রচনা, চিত্রনাট্য ও পরিচালনার জন্য অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন বিভিন্ন মাধ্যম থেকে। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, শিশু একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, জয়নুল আবেদীন স্বর্ণপদক প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তার অন্ত্রে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১২ সালের ১৯ জুলাই নিউ ইয়র্কে তিনি ইন্তেকাল ত্যাগ করেন।

তার রচিত প্রতিটি বই পাঠকগ্রহণ করেছেন সাদরে। বাংলা সাহিত্যের এ মহানায়ক বাংলাদেশের মিডিয়া অঙ্গনে অন্যতম শক্তিশালী একটি জায়গা দখল করে আছেন। টেলিভিশন নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়েছে তার রচিত উপন্যাস ও গল্প নিয়ে। বিশেষ করে হিমু, মিসির আলী আর বাকের ভাইয়ের মতো চরিত্র তৈরিতে তিনি যে লেখনীর দক্ষতা দেখিয়েছেন তাতে তাকে ও তার সৃষ্টিকে আজীবন মনে রাখবেন পাঠক। ‘হিমু’ সিরিজের বই, ‘মিসির আলী’ সিরিজের বইসহ, শঙ্খনীল কারাগার, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’,  ‘লীলাবতী’, ‘অপেক্ষা’, ‘রূপার পালঙ্ক’, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা ‘জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প’সহ অসংখ্য সুপাঠ্য বই বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য তিনি উপহার দিয়েছেন । তারই রচিত অনেক উপন্যাস ও গল্প নিয়ে রচিত হয়েছে নাটক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক তার চিত্রনাট্যেই তৈরি হয়েছে। এসব নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘অয়োময়’, ‘বহুব্রীহি’, ‘কোথাও কেউ নেই’ ‘আজ রবিবার’ প্রভৃতি। এসব নাটকের কথা দর্শক চিরদিন মনে রাখবেন। তার রচিত উপন্যাস অবলম্বনে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ‘আগুনের পরশমণি’, ‘আমার আছে জল’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘দুই দুয়ারি’, ‘দূরত্ব’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’, ‘নন্দিত নরকে’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘প্রিয়তমেষু’ প্রমুখ। তার সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘ঘেটুপুত্র কমলা’।