
নিরাপদ পানিকে নাগরিকের ‘মৌলিক অধিকার’ হিসেবে ঘোষণা করে আগামী এক বছরের মধ্যে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগমস্থলে (পাবলিক প্লেস) বিনামূল্যে নিরাপদ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল এবং বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ এ রায় দেন।
আজকের রায়ে আগামী ১০ বছরের মধ্যে সাশ্রয়ী দামে নিরাপদ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নদী, খাল, বিল, পুকুর, ডোবা, জলাশয় বা জলাধারের মত পানির সব উৎস সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে আজকের “রায়টিকে চলমান বিষয় (কন্টিনিউয়াস মেন্ডামাস) হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে এই রায় না মানলে যে কেউ প্রতিকার চেয়ে আদালতে আসতে পারবেন।”
হাইকোর্টের রায়ে আরো বলা হয়েছে, ‘সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুসারে দেশের নিরাপদ পানি দেশের প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।’
নিরাপদ পানি নিয়ে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ স্বপ্রণোদিত রুল জারি করেন হাইকোর্ট। দেশের মানুষের জন্য বিনামূল্যে নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
রুল শুনানির এক পর্যায়ে বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় হাইকোর্ট গত ৫ জানুয়ারি বিশেষজ্ঞ ও আইনি মতামত জানতে ৮ জন অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) নিয়োগ দেন। তাঁরা হলেন- অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল, মো. জয়নাল আবেদীন, মনজিল মোরসেদ, আহসানুল করিম, মোস্তাফিজুর রহমান খান, মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)’র নির্বাহী পরিচালক। আদালতের বন্ধু হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মঞ্জিল মোর্শেদ, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, মানবাধিকার সংগঠন বেলার পক্ষ থেকে মিনহাজুল ইসলাম।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: