odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Monday, 20th October 2025, ২০th October ২০২৫

জরায়ু ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিকার

তানিয়া হোসেন | প্রকাশিত: ৬ February ২০১৭ ০৪:১৩

তানিয়া হোসেন
প্রকাশিত: ৬ February ২০১৭ ০৪:১৩

প্রতি বছর ১১ হাজারের বেশি নারী বাংলাদেশে জরায়ু-মুখ ক্যান্সারের কারণে মারা যায়। অথচ প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করলে এই রোগের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। আসুন জরায়ু ক্যান্সার সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক-

মহিলাদের জরায়ু মুখে যে ক্যান্সার হয় তাকে জরায়ু ক্যান্সার বলে। এই ক্যান্সার অত্যন্ত মারাত্মক যা বিশ্বব্যাপী মহিলাদের মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ। জরায়ুর ক্যান্সার সাধারণত ৩০ থেকে ৫৫ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে বেশি হয়ে থাকে। জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সর্বোচ্চ ঝুঁকির্পূণ অবস্থানে থাকেন বয়স্ক ও দরিদ্র মহিলারা।

হিউম্যান প্যাপিলোমা নামে একধরনের ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে ৯৯% জরায়ু ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। এই ভাইরাস যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনের মধ্যে সংক্রমিত হয়। অন্যান্য কারণেও এই ভাইরাস জরায়ু ক্যান্সার সৃষ্টির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।

যেমন- অল্প বয়সে যৌন সম্পর্ক, একাধিক যৌন সঙ্গী, একাধিক পূর্ণ গর্ভধারণ, কলামাইডিয়া, গনোরিয়া, সিফিলিস বা হরপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-২ সংক্রমণ, ধূমপান, দীর্ঘ সময়ের জন্য গর্ভনিরোধক বড়ি ব্যবহার, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ

জরায়ু ক্যান্সার একটি ধীর বর্ধনশীল ক্যান্সার। এই ক্যান্সার হতে সাধারণত ১০-১৫ বছর সময় লাগে। প্রথম অবস্থায় এই ক্যান্সারের কোন উপসর্গ দেখা যায় না। জরায়ু ক্যান্সার হলে নিম্নোক্ত উপসর্গগুলো হতে পারে।

১. দুই মাসিকের মধ্যে রক্তপাত

২. যৌন সংগমের পর রক্তপাত

৩. পেলভিক পরীক্ষার পর রক্তপাত

৪. পেলভিক ব্যথা যা মাসিক চক্রের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়

৫. ভারি বা অস্বাভাবিক স্রাব, স্রাবে দুর্গন্ধ থাকতে পারে

৬. অনেক বার প্রস্রাব করা আর প্রস্রাব করার সময় ব্যথা অনুভর করা

জরায়ূ ক্যান্সার নির্ণয় পদ্ধতি

একাধিক পরীক্ষার মাধ্যমে জরায়ু ক্যান্সার নির্ণয় করা হয়। সাধারণত ডিএনএ অথবা পেপ টেস্টের মাধ্যমে সম্ভাব্য জরায়ু ক্যান্সারের ডিসপ্লাসিয়া শনাক্ত করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে এইচপিভি সংক্রমণের ঝুঁকি নির্ধারণ করা হয়। বায়পসির মাধ্যমে প্রি-ক্যান্সার বা ক্যান্সার কোষ নিশ্চিত করা হয় জরায়ু ক্যান্সার।

জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধে আমাদের যা করণীয়

হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য এখন টিকা পাওয়া যায়। মেয়েদের বয়স যখন ১০ থেকে ১২ বছর তখন তিনটি ডোজে ছয় মাসের মধ্যে এই টিকা দেওয়া হয়। এই টিকা মূলত বিয়ের পূর্বে অথবা যৌন সক্রিয় হওয়ার আগে দেওয়া উচিত। এছাড়াও নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণের মাধ্যমে জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

১. টিকা প্রদান করে অবিবাহিত মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সার থেকে নিরাপদ রাখা

২. কোন লক্ষণ চোখে পড়লেই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা

৩. জরায়ু ক্যান্সার সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা

৪. নারীদের সাহস জোগাতে এক্ষেত্রে পুরুষদেরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে

৫. ১৮ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত নারীদের বছরে একবার করে পরীক্ষা করা উচতি। তবে পর পর দুইবার রিপোর্ট নেগেটিভ হলে ৩ অথবা ৫ বছর পরপর পুনরায় পরীক্ষা করাবেন। ঝুঁকিপূর্ণ নারীরা ৩ বছর পর পর পরীক্ষা করাবেন।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: