ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে

স্কুল সেরা হলেন প্রতিবন্ধি আলীনুর ইসলাম

আহসানুল ইসলাম আমিন | প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২৩ ০০:৫৭

আহসানুল ইসলাম আমিন
প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২৩ ০০:৫৭

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রতিবন্ধকতা কখনোই সাফল্যকে আটকে দিতে পারে না। প্রতিবন্ধীরা বুঝা নয়,সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা পেলে ওরাও বদলে দিতে পারে সমাজ, সংসার ও পরিবার। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের আলীনুর ইসলাম এমনি একটি উদাহারন। অক্ষমতাকে জয় করে সে এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ । ছেলের  এমন সাফল্য এলাকার মানুষ,প্রতিবেশি ও তার স্কুলের শিক্ষকদের মাঝে ব্যাপক আনন্দের জোয়ার বইছে। গোটা উপজেলার মানুষের ভালবাসায় প্রশংসার জোয়ারে ভাষছে আলীনুর ইসলাম। ২০২৩ সালে সৈয়দপুর আব্দুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএস সিতে অংশ নেয় আলীনুর ইসলাম । প্রতিষ্টানটির অধ্যক্ষ মিয়া ফরিদ আহমেদ জানান,আমার প্রতিষ্টান থেকে এ বছর ৭৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাশ করে ৬১ জন । ৬১ জন পাশের মধ্যে একটি মাত্র জিপিএ-৫  পায় যেটা প্রতিবন্ধি মেধাবী আলীনুর ইসলাম পেয়েছে।

উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ফুলহার গ্রামের বাসিন্দা আলীনুর ইসলাম । আলীনুরের জন্মের ককেক বছর পরই বাবা আফতাব খান মারা যান । বাবা মার একমাত্র সন্তান আলীনুর ইসলাম ।  জন্মগতভাবেই তার দুটি পা অচল। মনের জোরে হুইলচেয়ারে বসে পড়ালেখার হাতেখড়ি ।  নিজের অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর মায়ের সহযোগিতায় এখন তিনি জেলা প্রশাসক  হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

মা নুরুন নাহার বলেন,ছেলের এমন ফলাফলে  আমি অনেক খুশী ,আমি ছেলের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই ছেলে যেনো তার  স্বপ্নের জায়গায় পৌছাতে পারে ।

 পরিবার ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আলীনুরের মা নুরুন নহার বেগম প্রতিদিন একটি হুইল চেয়ারে বসিয়ে  ছেলেকে স্কুলে আনা-নেওয়া করতেন,শিক্ষকদের আদেশ নিষেধ মেনে চলা ও মনযোগ ছিল চোখে পড়ার মত । অসম্ভবকে সম্ভব করে মেধার স্বাক্ষর রেখে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে আলীনুর ইসলাম ।

স্বপ্নের বিষয়ে জানতে চাইলে আলীনুর ইসলাম  বলেন,  স্বপ্ন দেখি একদিন জেলা প্রশাসক  হবো। আমার সফলতা আমার মায়ের পরিশ্রম আর শিক্ষকদের অনুপ্রেরনা । 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শীরফুল ইসলাম তানভীর বলেন,বিষয়টি শোনে আমি খুব খুশী হয়েছি । শারীরিক চ্য্যলেঞ্জ উপেক্ষা করে যে যুদ্ধে সে অবতীর্ন হয়েছে এটা একান্তই তার মনোবল এবং তার মায়ের পরিশ্রমের ফসল । ভবিষ্যতে আলীনুরের উচ্চ শিক্ষার জন্য যদি আমাদের কোন সাহায্য সহযোগিতার প্রয়োজন হয় তাহলে উপজেলা প্রশাসন তার পাশে থাকবে।

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মিয়া ফরিদ আহমেদ বলেন,‘আমার স্কুল থেকে একটি এ প্লাস পেয়েছে সেটা মেধাবী ছাত্র আলীনুর ইসলামই  পেয়েছে । আসলে ও এমনিতেও মেধাবী এ ছাড়া ওর মা খুব পরিশ্রম করেছে ।  প্রতিদিন ওর মা হুইল চেয়ার করে ছেলেকে স্কুলে  আনা নেওয়া করতেন । ওর ভালো রেজাল্টে আমরা ভীষন খুশী । ও আমাদের শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের সুনাম ভয়ে এনেছ ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: