ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১

ভিক্ষাবৃত্তি-মলমূত্র ত্যাগে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৪ জুলাই ২০১৮ ২০:৩০

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৪ জুলাই ২০১৮ ২০:৩০

 ক্যান্টমেন্ট এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি ও মলমূত্র ত্যাগে বিদ্যমান এক টাকার পরিবর্তে ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘ক্যান্টনমেন্ট বিল, ২০১৮’ সংসদে পাস হয়েছে। বুধবার সংসদের বৈঠকে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন সংসদের কাজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সংসদে বিলটি ‘সেনানিবাস বিল’ নামে উত্থাপন করা হলেও সংসদীয় কমিটির সুপারিশে বিলের নাম পরিবর্তন করে ‘ক্যান্টনমেন্ট বিল’ নামে পাস হয়।

শত বছর আগের ‘ক্যান্টমেন্টস অ্যাক্ট-১৯২৪’ বাতিল করে এই নতুন আইন প্রণয়ন হলো। পাসের আগে বিলের ওপর বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্যদের মত যাচাই, বাছাই ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নিষ্পত্তি করা হয়।
পাস হওয়া বিলে দেশের যেকোনও ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় রাস্তাঘাটে মলমূত্র ত্যাগ, মাতলামি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, খোলা অবস্থায় মাংস বহন, এলোমেলোভাবে গাড়ি পার্কিং, অনাবৃত করে বিকলাঙ্গতা ও ব্যাধি প্রদর্শন, ভিক্ষাবৃত্তি বা জুয়া খেলার শাস্তি হিসেবে ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
আগের আইনের ২৯২টি ধারা থেকে কিছু অংশ বাদ দিয়ে এবং নতুন কিছু সংযোজন করে মোট ২১৮টি ধারা রাখা হয়েছে এই বিলে।
বিদ্যমান আইনে সেনানিবাস এলাকায় অবৈধ নির্মাণের জন্য ৫০০ টাকা জরিমানার বিধান থাকলেও প্রস্তাবিত আইনে তা সর্বনিম্ন ২০ হাজার এবং সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার করা হয়েছে। সড়কের সরকারি ভূমি খনন করলে জরিমানা ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে দুই হাজার এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। সেনানিবাস এলাকায় বেসরকারি বাজার বা কসাইখানা স্থাপনের শাস্তি ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। আর লাইসেন্স ছাড়া বাজার বা কসাইখানা খুললে জরিমানা ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে তিন হাজার এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করলে তিন থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার কথা বলা হয়েছে। আগে এই অপরাধের শাস্তি ছিল ২০০ টাকা। তথ্য দিতে অবহেলা করলে আগে ১০০ টাকা জরিমানার বিধান থাকলেও নতুন আইনে তা সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় ট্রাফিক নিয়ম অমান্য করলে জরিমানা ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে দুই হাজার এবং সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। আতশবাজি ফাটালে বা গুলি ছুড়লে আগে ৫০ টাকা শাস্তি ছিল। নতুন আইনে এই শাস্তি কমপক্ষে ৩ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। বসত বাড়ি জরাজীর্ণ থাকলে জরিমানা পরিমাণ ৫০ টাকা বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ৩ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। পশুকে আবর্জনা খাওয়ালে জরিমানার পরিমাণ ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা রাখা হয়েছে। অবৈধভাবে পানি ব্যবহার করলে আগে ৫০ টাকা জরিমানা হতো, নতুন আইনে কমপক্ষে ৩ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপের কথা বলা হয়েছে। ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সরকারি কাজে বাধা দিলে জরিমানা ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে ৩ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করার কথা বলা হয়েছে। সেনানিবাস এলাকায় নিবন্ধনের বাইরে কুকুর পুষলে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে মন্ত্রী বলেন, ‘ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে ইংরেজিতে প্রণীত আইনগুলো বাংলায় ভাষান্তরে মন্ত্রিসভার নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং ক্যান্টনমেন্ট অ্যাক্ট-১৯২৪ হালানাগাদ করে ‘ক্যান্টমেন্ট আইন-২০১৮’ প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: