
ঢাকা: ঢাকাসহ সারাদেশে ফলের বাজার ও আড়তে আমসহ কোনো ফল পাকাতে ও সংরক্ষণে যাতে কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করতে না পারে তা তদারকির জন্য মনিটরিং টিম গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজি), র্যাব মহাপরিচালক, বিএসটিআই চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট পরিচালককে সাতদিনের মধ্যে এই মনিটরিং টিম গঠন করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ১৮ জুনের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত। আদালতে আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এর আগে গত ৯ এপ্রিল হাইকোর্ট এক আদেশে সাতদিনের মধ্যে রাজশাহীসহ সারাদেশে আম বাগানে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের সঙ্গে আইন শৃংখলা বাহিনীর তদারকির ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে ঢাকাসহ সারাদেশে ফলের বাজার ও আড়তে আমসহ অন্যান্য ফলে কেমিকেল ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা তা মনিটর করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি রাসায়নিক মিশিয়ে বাজারে ফল বিক্রি করা হচ্ছে কি না তাও তদারকি করতে নির্দেশে দেওয়া হয়। এজন্য পুলিশ, র্যাব, বিএসটিআই ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে টিম গঠন করতে বলা হয়। এসব আদেশ কার্যকর করে একমাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে খাদ্য, স্বরাষ্ট্র ও শিল্প সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, পুলিশের আইজি, র্যাবের মহাপরিচালক, বিএসটিআইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক (কেমিকেল টেস্টিং উইং), রাজশাহী জেলা প্রশাসক এবং পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজিকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ আদালতে একটি আবেদন দিয়ে বলেন, এখন আমসহ বিভিন্ন মৌসুমী ফল বাজারে আসছে। বিশেষ করে আমের মৌসুম শুরু হয়েছে। হয়তো কেউ আম বাগানে কেমিক্যাল ব্যবহার করলো না। কিন্তু আড়তে এনে কেমিক্যাল ব্যবহার করতে পারে। তাই এটা ঠেকাতে আড়ত ও বাজার পর্যবেক্ষনের জন্য কমিটি থাকা দরকার। এজন্য আদালতের আবারো আদেশ দেওয়া প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করি।
এরও আগে এইচআরপিবি’র করা এক রিট আবেদনে ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি এক রায়ে হাইকোর্ট আম বাগানে আইন শৃংখলাবাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে আমদানি করা ফল-এ রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে স্থল ও সমুদ্র বন্দরসহ সকল আমদানি পয়েন্ট-এ ফল পরীক্ষার ব্যবস্থা (কেমিকেল টেস্টিং ইউনিট) চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ফল-এ রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া কাচা আম পাকাতে কেমিকেলের ব্যবহার বন্ধের জন্য ৬ মাসের মধ্যে একটি গাইডলাইন তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এইচআরপিবি’র করা আবেদনে হাইকোর্ট নতুন করে আদেশ দিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: