ঢাকা | শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
শেখ হাসিনা

আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার

odhikar patra | প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২২:৫২

odhikar patra
প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২২:৫২

১৯৪৭ সালের আজকের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ঘর আলো করে এসেছিলেন হাসু। রাজনৈতিক পরিবারের জন্ম নেওয়া হাসু জাতির জনকের প্রথম সন্তান হিসাবে বাবার স্নেহ আদর থেকে শুরু থেকেই বঞ্চিত ছিলেন। কারণ বাবা সারাক্ষন থাকতেন রাজনীতি নিয়ে যার অধিকাংশ সময় কেটেছে জেলখানায়। সুখ দুঃখেই কেটেছে তার জীবন। আজকের আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি, বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৩তম জন্মদিন।

রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে ছাত্রজীবন থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি অর্জনকারী শেখ হাসিনা তৎকালীন ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা ছিলেন। ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হবার আগে ছোট বোন শেখ রেহানাসহ শেখ হাসিনা ইউরোপ যান। সেখানে অবস্থানকালে তিনি বাবা-মাসহ পরিবারের সবাই নিহত হবার খবর পান। তাৎক্ষণিকভাবে দেশে ফেরার কোনো পরিবেশ না থাকায় তিনি ইউরোপ ছেড়ে স্বামী-সন্তানসহ ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।

আজ তিনি বিশ্বমানবতার মা। তিনি আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন সেই স্বপ্ন রূপায়নের দায়িত্ব নিয়ে বাঙালি জাতির আলোর দিশারী হওয়ার ইতিহাস। যার জন্ম না হলে আজ বাংলাদেশ সোনার বাংলা হত না। ভারতে থাকা অবস্থাই ১৯৮১ সালের ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তাঁকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। আর ঐ বছরেরই ১৭ মে দীর্ঘ ৬ বছর প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরে আসেন।

দেশে ফিরে আসার পর থেকেই তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র চলে সব বাধা অতিক্রম করে জনগণের ভালবাসা নিয়ে বাবার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজে হাত দেয়। দেশে এসে প্রথমে জিয়া সরকারের আক্রমনের শিকার হয়। বাবার বাড়িতে যেতে দেয়নি তাকে। এর পর আসে এরশাদের সামরিক শাসন। তিনি ভুলে যাননি ১৯৭৫ সালে ১৫ অগাস্ট জাতির জনক ও তার পরিবারকে হত্যার পর যারা অস্ত্র হাতে এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করে জিয়ার সামরিক আদালতে ফাঁসি ও যাবতজীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের ছাড়িয়ে আনতে। সেই ফাঁসির আসামী বজলুর রহমান, মানু মজুমদার, অসিত কুমার সজল সহ অন্যদের। জেল থেকে বের হবার পর বজলুর রহমান ও মানু মজুমদারকে তার সাথেই রেখেছেন। বজলুর রহমান মারা গেছেন আর মানু মজুমদার বর্তমানে এক জন সংসদ সদস্য।

এরশাদের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে তিনি আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যান এর মধ্যে তাকে কয়েকবার হত্যার পরিকল্পনা করে কিন্তু জনগণের ভালবাসায় তিনি বেঁচে যায়। আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী এরশাদ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেয়। ১৯৮৬ সালে সেই নির্বাচনে প্রথমবারের মত প্রার্থী হয়ে সংসদ নির্বাচনে তিনি তিনটি আসন থেকে নির্বাচিত হন। কিন্তু সেই নির্বাচন বেশী দিন টেকেনি বিরোধী দল গুলোর আন্দোলনের মুখে ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির এরশাদ আবারো সংসদ নির্বাচন ঘোষণা করেন। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএন পিসহ অনেক দল অংশ গ্রহন করেনি। ফলে ১৯৯০ সালে স্বৈরশাসক এরশাদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। কিন্ত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে বেশী ভোট পেয়েও ক্ষমতায় আসতে পারেনি। তার পর গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে জন নেত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন। সেই নির্বাচনে জাতির জনকের হত্যাকারীর বিচার করা ছিল নির্বাচনী ইশতেহারের একটি বড় অংশ।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠন করে এবং সে বছরের ২৩ জুন দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার কাজে হাত দেয়। মাত্র ৫ বছরে বিদ্যুৎ, দারিদ্র, শান্তিচুক্তিসহ অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ করেন। মোবাইল ফোন ও কম্পিটার মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসেন। মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা কারো কাছে মাথা নত করে দেশকে অন্যের হাতে তুলে দিতে রাজি হয়ার লোক নয়।

২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশীদের কাছে গ্যাসসহ নানা বিষয়ে মাথা নত না করায় দেশী ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে হারানো হয়। জননেত্রী শেখ হাসিনা আবারো সংসদে বিরোধী দলীয় নেত্রী নির্বাচিত হয়। ১৯৭৫ সালের পর, ২০০১ সালের নির্বাচনের পরও আওয়ামী লীগের উপর আসে নিপীড়ন আর অত্যাচার। যেখানে সহিংসতা, সংখ্যাল্গু দের উপর অত্যাচার সেখানেই ছোটে গেছেন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। সন্ত্রাস জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে তিনি সুচ্ছার হন। 

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী জনসভায় সরকারী মদদে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়। জনগণের ভালবাসা ও দলীয় নেতা কর্মীদের জীবনদানে তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়। ওই হামলায় আই ভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত এবং পাঁচশ’ নেতা-কর্মী আহত হন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে বিশাল বিজয় অর্জন করে। এই বিজয়ের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনা দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। দেশের উন্নয়নে তিনি মনোযোগী হন। জাতির জনকের হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় এনে তাদের সাজা দিয়ে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি সম্পাদন, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতিসহ জাতীয় জীবনের বহুক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি।

বিশ্ব দরবারে শেখ হাসিনা একটি নাম যার জন্য আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বাবার স্বপ্নের সোনার বাংলা আজ আর স্বপ্ন নয় বাস্তব। পর পর তিন বার প্রধানমন্ত্রী হয়ে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। স্থায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, খাদ্যে স্বনির্ভরতা, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ অবকাঠামো, যোগাযোগ, জ্বালানী ও বিদ্যুৎ, বাণিজ্য, আইসিটি এবং এসএমই খাতে এসেছে ব্যাপক সাফল্য। । যেখানে দেশের ৬৩ জেলায় বোমা মেরে জঙ্গিবাদের হুমকির মুখে ছিল বাংলাদেশ সেখান থেকে সরকারের জিরো ট্রলারেন্সের কারনে জঙ্গি শুন্য বাংলাদেশ।

মাদক বিরোধী অভিযানেও নিজের দলের নেতাদেরকে ছাড় না দেওয়া এখন কমে এসেছে মাদক ক্রেতা বিক্রেতা। এখন চলছে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান প্রথম দিনেই দলের নেতাকে গ্রেফতার করে শুরু করেছেন এই অভিযান। দেশের মানুষ সব অভিযানকেই স্বাগত জানিয়েছে। নিজেই যখন নিজের সমালোচক তখন বাইরের বা বিরোধী দলের সমালোচনার দরকার কি?

কোন বিরোধী দলের নেতা বলে দেয়নি যে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চালাতে। জাতির জনকের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাই দুর্নীতি বিরোধী অভিযান শুরু করেছেন। দেশের এত উন্নয়ন কিছু নেতার জন্য তা ভেস্তে দেওয়া যায় না। দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশের জন্য কাজ করে বিদেশে দেশের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল করেছেন ।

 মাননীয় প্রধান মন্ত্রী। দেশের জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা শেখ হাসিনা। 

হে নেত্রী

আজ তোমার জন্মদিন

তুমি আজো আমার অন্তরে

তুমি আজো বাংলার মানুষের অন্তরে।

যত দিন তোমার হাতে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।

জন্ম দিনের শুভেচ্ছা-

সুমন ভৌমিক

সদস্য, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা কেন্দ্রীয় উপ কমিটি

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: