ঢাকা | শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

এমনটা গত ১০ বছরে দেখেনি টেস্ট ক্রিকেট!

Admin 1 | প্রকাশিত: ৬ মে ২০১৭ ০১:৫৩

Admin 1
প্রকাশিত: ৬ মে ২০১৭ ০১:৫৩

শুধু পাকিস্তানের পক্ষেই সম্ভব এমন কিছু করা! কথাটা ক্রিকেটে অনেকবারই শুনেছেন। নিশ্চিত পরাজয়ের মুখ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার কীর্তি দলটার কম নয়। নিশ্চিত জয় পায়ে ঠেলে দিয়ে আসারও ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে। ‘অননুমেয়’ শব্দটা তো আর এমনি এমনি লাগেনি তাঁদের নামের আগে! পাকিস্তান যদি অননুমেয় হয়ে থাকে, কালকের ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছিল অবিশ্বাস্য।

যেন আশির দশকের সময়টাতে ফিরিয়ে নিয়ে গেল! ক্যারিবীয় পেসাররা প্রতিপক্ষকে ছিঁড়েখুঁড়ে খাচ্ছেন, এমন দৃশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের স্বর্ণসময়ে দেখা যেত। কাল পুরোনো রোমাঞ্চটাই যেন ফিরিয়ে আনলেন তিন পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, জেসন হোল্ডার ও আলজারি জোসেফ! তিনজনে মিলেই কাল ব্রিজটাউন টেস্টের পঞ্চম দিনে মাত্র ৮১ রানেই গুঁড়িয়ে দিলেন পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ! তাতে মাত্র ১৮৮ রানের লক্ষ্য দেওয়ার পরও ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেল ১০৬ রানের দুর্দান্ত এক জয়, তিন টেস্টের সিরিজে ফেরাল ১-১ সমতা।
এক কীর্তিতেও নাম লেখাল। পেস বোলিংয়ে টেস্ট ক্রিকেটের রোমাঞ্চ খুঁজে বেড়ানো ক্রিকেটামোদীরা রেকর্ডটাতে বেশ মজা পাবেন। টেস্টের শেষ দিনে এসে শুধুমাত্র পেসাররা প্রতিপক্ষের দশটি উইকেটই তুলে নিয়েছেন, এমন ঘটনা যে গত দশ বছরে একবারও দেখেনি টেস্ট ক্রিকেট! শেষ দিনের পিচের জুজু ছিলই। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে সেটির প্রভাব দেখা গেছে স্পষ্ট। প্রথম ছয় ওভারে দুই ওপেনার আজহার আলী ও আহমেদ শেহজাদ মিলে নিয়েছেন মাত্র ৬ রান! তাঁদের ভয়, আর ক্যারিবীয় বোলারদের ত্রাস, দুইয়ে মিলেই শেষ হলো পাকিস্তান! সপ্তম ওভারে আজহারকে দিয়ে পতনের মিছিল শুরু। স্কোরবোর্ডে রান তখন মাত্র ১০। ৯৫ বল পর, স্কোরবোর্ডটা হয়ে গেল ৩৬-৭! তখন তো টেস্টে পাকিস্তানের সর্বনিম্ন স্কোর নিয়েই টানাটানি (৪৯, ২০১৩ সালে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে)।
অষ্টম উইকেটে আমির (২০ রান) ও সরফরাজের (ইনিংস সর্বোচ্চ ২৩ রান) ৪২ রানের জুটিতে সেই লজ্জা এড়িয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু ক্যারিবীয় পেসারদের পেসে অসহায় আত্মসমর্পন করে যেভাবে টেস্ট হারল তা এই সিরিজে এখন পর্যন্ত তাদের পারফরম্যান্সের সঙ্গে একটু বেমানানই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের তিন পেসার এমনই দুর্দান্ত বোলিং করছিলেন, আর কারও বোলিংয়ে আসার দরকারই পড়েনি। ৩৪ ওভার ৪ বলে অলআউট হয়েছে পাকিস্তান, ওভারগুলো নিজেরাই ভাগাভাগি করে করেছেন গ্যাব্রিয়েল-হোল্ডার-জোসেফ। গ্যাব্রিয়েল করেছেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং—১১ রানে ৫ উইকেট! ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এর চেয়ে কম রানে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তিই আছে আর একটি (জার্মেইন লসন, ৩ রানে ৬ উইকেট, বাংলাদেশের বিপক্ষে, ২০০২-০৩ সালে ঢাকায়)। হোল্ডার উইকেট নিয়েছেন ৩টি, বাকি দুটি জোসেফের।
যে টেস্টটায় আগের চার দিনই আধিপত্য ছিল পাকিস্তানের সেটিই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ঘুরিয়ে নিয়ে গেল শেষ দিনের অবিশ্বাস্য নাটকীয়তায়। নাহ, নাটকীয়তা শব্দটা ঠিক হলো না। টেস্টটা ক্যারিবীয়রা ঘুরিয়ে নিয়ে গেল ক্যারিবীয় শৌর্য-বীর্যে! প্রায় বিস্মৃত ক্যারিবীয় পেসের রোমাঞ্চ ছড়িয়ে। সূত্র: ক্রিকইনফো



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: