
বাংলাদেশের ২০২০-২০২১
বাজেটের শিরোনাম ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যতের পথপরিক্রমা’ দিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। এখন বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কী করে করোনা পরিস্থিতির ক্ষত দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা যায় । এখনই অর্থনীতির পুনর্জীবনের ভিত্তি নির্মাণ করার বিকল্প নাই।
অর্থমন্ত্রী করোনা মোকাবিলায় ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল ঘোষণা করেছেন।
করোনাভাইরাসের অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে। ফলে এর প্রতিরোধ ও প্রভাব মোকাবেলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রেই জরুরিভাবে অর্থ প্রয়োজন হবে এবং সাড়া দিতে না পারলে অনেক ক্ষতি হবে।
প্রকৃত স্বাস্থ্য খাতে অর্থাৎ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে বরাদ্দ ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় চার হাজার ২৭৩ কোটি টাকা বেড়েছে; কিন্তু দেশে মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে না করোনা পরিস্থিতির কারণে। এ থেকে উত্তরণের জন্য প্রচারণা, সচেতনতা ও সুরক্ষা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার সময় এসেছে। লক্ষনীয় যে, করোনাবহির্ভূত স্বাস্থ্যসেবায় বড় সংকট দেখা দিয়েছে।
এবার বাজেট ঘাটতি বেশি ধরা হয়েছে এবং এ ঘাটতি বিদেশি অর্থায়ন ও অভ্যন্তরীণ ঋণ ব্যাবস্থার উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এর পাশাপাশি জনগণের অংশ নিশ্চিত করে কোন বিশেষ তহবিল গঠন করলে এবং সে তহবিলের অর্থ লাভজনক লগ্নি করলে আপদ মোকাবেলা করা সহজ হয়। এ বিষয় ভেবে দেখতে পারে।
বর্তমানে ৪৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশি অর্থায়ন পাইপলাইনে রয়েছে। এর অর্থ ব্যয়ের নানান শর্ত ও প্রক্রিয়া ধীর করে তোলে উন্নোয়ন গতিকে। আবার সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।
তাই বিদেশি অর্থায়ন খুব বেশি আশা করা যায় না।
আর ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারকে ব্যয় সাশ্রয়ী এবং দক্ষ হবার বিকল্প নাই। বাজেটের আকার বড়লেও সেই একই জনবলের দক্ষতার উন্নতি যেমন ঘটানো যায় নি তেমনি আচরণগত পরিবর্তন আসে নি। এর সাথে দুষ্টের দমন , শিষ্টের পালন জড়িত।
সরকারের বাজেট ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে নি:সন্দেহে। সাথে প্রয়োজন জনগণের অংগ্রহণের । এ জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের গুণগত ও আস্থাশীল পরিবর্তন খুব জরুরি।
কারণ অর্থনৈতিক উন্নোয়নের সাথে সাথে নাগরিক দায়বদ্ধতা ব্যাপক হারে নিশ্চিত করতে হবে। না হলে উন্নয়ন ধরে রাখা সম্ভব হবে না । এ দায়িত্ব রাজনীতিকেই নিতে হবে। জনগণ সুখে থাকলে সে শাসন হাজারো বছর স্থায়ী হয়।
কঠিন সময়ে এবং এত অনিশ্চয়তা ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে জাতীয় বাজেট তৈরির কোনো নজির নেই। নাগরিক দায় হিসেবে আসুন এই বর্তমান পরিস্থিতিতে
নিজেরা শক্তভাবে বিভিন্ন সামাজিক দূরত্বের নিয়মগুলো কার্যকর করি। কেননা, এখানেই জীবন ও জীবিকা এসে মিশে গেছে আজ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: