
ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা জোরদার করেছে ইসরাইল। গাজায় ইসরাইলি আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়নি শরণার্থী শিবিরও।
অব্যাহত বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং গোলাবর্ষণে গাজায় নিহত বেড়ে ১৩৭ জনে দাঁড়িয়েছে। আল জাজিরা জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৩৭ শিশু রয়েছে। এখন পর্যন্ত আহত হয়েছে প্রায় ১ হাজার।
গাজার আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইহুদি বাহিনী। এতে দুই নারী ও ছয় শিশু নিহত হয়েছে। অনেকে ভবনের ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়ায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার (১৪ মে) ভোররাতে ৪০ মিনিটের হামলায় ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে এক মা ও তাঁর তিন শিশু সন্তান রয়েছে। বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে, শুক্রবারের এই হামলায় বিমান ও পদাতিক বাহিনী অংশ নিয়েছে। ফিলিস্তিনিদের ঘর-বাড়ি লক্ষ্য করে গোলা নিক্ষেপ করেছে তারা। তবে গাজা সীমান্তে প্রবেশ করেনি সেনাবাহিনী।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল জনাথন কনরিকাস বলেছেন, ১৬০টি জঙ্গি বিমান এই অভিযানে অংশ নেয়। এর পাশাপাশি গাজার বাইরে অবস্থান নিয়ে ট্যাংক ও কামান থেকে গোলা নিক্ষেপ করা হয়।
শুক্রবার পশ্চিম তীরেও ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সেখানে ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে একশ'র বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রামাল্লার উত্তরে অফরায় সেনা চৌকিতে এক দুষ্কৃতকারী একজন সেনা সদস্যকে ছুরিকাঘাত করতে এলে তাকে 'নিরস্ত্র' করা হয়। সেখানে গুলিতে নিহত ব্যক্তি পশ্চিম তীরে নিহত চারজনের মধ্যে একজন।
এই হামলাকে 'যুদ্ধাপরাধ' আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে গাজার প্রতিরোধ সংগঠন হামাস। শুক্রবার পঞ্চম দিনের মতো গাজা থেকে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে।
গাজায় হামলার প্রতিবাদে পশ্চিমতীরে বিক্ষোভ করছেন ফিলিস্তিনিরা। বিক্ষোভে হামলা চালিয়ে ১১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এছাড়া পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনিদের বাসা-বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়েছে ইহুদি সেটলাররা।
ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার চলমান সংঘাত ২০১৪ সালের পর সবচেয়ে বড়। গত সোমবার (১০ মে) রাত থেকে চলা এই পাল্টাপাল্টি হামলায় গাজায় ১৩৭ জন এবং ইসরাইলে আটজন নিহত হয়েছে।
রাশিয়া ও মিসরের দেওয়া 'যুদ্ধবিরতি' প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজায় হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার তিনি বলেন, তারা আমাদের রাজধানীতে হামলা করেছে। তারা আমাদের শহরগুলোতে রকেট নিক্ষেপ করেছে। এর মাশুল তারা দিচ্ছে এবং দিতে থাকবে। এটা এখনো শেষ হয়নি।
অপরদিকে হামাসের এক সামরিক মুখপাত্র বলেন, ইসরাইলি সেনাবাহিনী স্থল অভিযানের দিকে গেলে তাদের 'চরম শিক্ষা' দেওয়ার জন্য প্রস্তুত তাঁরা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: