ঢাকা | সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

মামলা প্রত্যাহারের দাবি, উপাচার্যের নাকচ

Admin 1 | প্রকাশিত: ২৯ মে ২০১৭ ০৮:২২

Admin 1
প্রকাশিত: ২৯ মে ২০১৭ ০৮:২২

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে মামলা প্রত্যাহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।

গত শুক্রবার ভোর পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল-সংলগ্ন সিঅ্যান্ডবি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারসহ কয়েকটি দাবিতে গতকাল শনিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে এবং লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনার জের ধরে বিকেলে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন শতাধিক শিক্ষার্থী। উপাচার্য না এলে শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালান। পরে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতর থেকে ৪২ শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তাঁদের আজ গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাঁদের জামিন দেন।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্য মঞ্চের ব্যানারে শিক্ষকদের একটি অংশ উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। সাক্ষাৎ শেষে তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তাঁরা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঐক্য মঞ্চের অন্যতম মুখপাত্র দর্শন বিভাগের শিক্ষক রায়হান রাইন। তিনি গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন, আন্দোলনে হামলাকারীদের বিচার, হল বন্ধের নির্দেশ বাতিল ও প্রক্টরের জবাবদিহির দাবি জানান।

এরপর বিকেল চারটার দিকে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। তাদের সব দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছি। তাদের কথামতো লিখিত দিয়েছি। কিন্তু এরপরও তারা মহাসড়কের অবরোধ প্রত্যাহার করেনি। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করেছে। আমার হাতে আর কিছু ছিল না। এরপর তারা আমার বাসা ভাঙচুর করেছে।’

মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মামলা প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়। তবে সবদিক বিবেচনা করে কী করা যায়, সেটা আমরা ভাবছি।

নিহত দুই ছাত্রের জানাজা ক্যাম্পাসে কেন পড়তে দেওয়া হয়নি, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন কিছু হয়নি। আমাদের দিক থেকে কোনো আপত্তি ছিল না। ওই দিন বেশ গরম ছিল। নিহত মেহেদি হাসানের পরিবারই লাশ দ্রুত নিয়ে যেতে চেয়েছে।

হল বন্ধের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগে সন্ধ্যাকালীন কোর্স চলবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা এখনো ভাবিনি। ভেবে দেখব।

বিকেল পাঁচটার দিকে সংবাদ সম্মেলন শেষ হয়। এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল হোসেন, রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক, প্রক্টর তপন কুমার সাহা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক বশির আহমেদ প্রমুখ।

এদিকে গতকাল শনিবার রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ভাঙচুরের ঘটনায় অধ্যাপক অসিত বরণ পালকে প্রধান এবং উপ–রেজিস্ট্রার মো. আবু হাসানকে সদস্যসচিব করে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অধ্যাপক মো. শাহেদুর রশিদ, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক রাশেদা আখতার, সহযোগী অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: