
জেলার মহম্মদপুর উপজেলার মধুমতি নদীর উপর এলাংখালী-জাঙ্গালিয়া এলাকায় ‘শেখ হাসিনা’ সেতুর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে এটির ৯০ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কাঙ্খিত এ সেতু জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হলে মাগুরা, নড়াইলসহ অত্র এলাকার মানুষ ফরিদপুর হয়ে ঢাকার সাথে যোগাযোগ সহজতর হবে। সেই সাথে এসব এলাকার মানুষের জীবমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ‘উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কে দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের’ অধীনে মহম্মদপুর উপজেলার এলাংখালি-জাঙ্গালিয়া ঘাটে মধুমতি নদীর উপর ৫৯ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৬০০.৭০ মিটার ‘শেখ হাসিনা সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুতগতিতে।
২০১৩ সালের ৭ নভেম্বর মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার এ সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর ম্যাক্স-রেনকিন নামের ঠিাকাদারী প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণের কার্যাদেশ পান। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে মাটি পরীক্ষা ও টেষ্ট পাইল বসানো হয়। এরপর একই বছরের এপ্রিল মাস থেকে মূল সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের আগষ্টে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মধুমতি নদীর দুই পাড়ে নির্মাণ কাজ চলছে। সেতুটি ঘিরে স্থানীয় এলাকাবাসির মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার সৃষ্টি হয়েছে। চলতি বছরের আগষ্ট মাসের মধ্যে সেতু নির্মাণে শ্রমিকরা রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছে। নির্মাণ কাজ দেখতে প্রতিদিন শত-শত মানুষ সেতুর দু’পাড়ে ভিড় জমাচ্ছেন।
এলাংখালি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান, মোখলেছুর রহমান, সুব্রত সরকারসহ অনেকেই বলেন, শেখ হাসিনা সেতুর নির্মাণ কাজ হওয়ায় মহম্মদপুর উপজেলাসহ মাগুরাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্থানীয় এলাকাবাসী ব্যাপকভাবে কৃতজ্ঞ প্রকাশের পাশপাশি ও আনন্দ প্রকাশ করেন। এই সেতুটি চালু হলে মাগুরাসহ বিভিন্ন এলাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ মানুষ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।
সেতু নির্মাণের দায়িত্বে নিয়োজিত ম্যাক্স-রেনকিন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী রনজিৎ পাল জানান, শেখ হাসিনা সেতুর প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। বর্তমানে সেতুর এলাংখালি ও জাঙ্গালিয়া এলাকার দু’পাশে প্রায় ২ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের কাজ চলছে। আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে এটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে কর্তৃপক্ষের কাছে উদ্বোধনের জন্য হস্তান্তর করা সম্ভব হবে।
জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মীর্জা মোঃ ইফতেখার আলী জানান, জেলার মহম্মদপুর উপজেলার মধুমতি নদীর উপর নির্মিত ‘শেখ হাসিনা সেতুটি’ আধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে সেতুটি হওয়ায় এটি নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দিপনার সৃষ্টি হয়েছে। সেতু নির্মাণের জন্য বিআইডাব্লুটিএ’র সকল প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। চলতি বছরের আগষ্ট মাসে এটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে। সেতুটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হলে অত্র এলাকার যোগাযোগ, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জীবনযাত্রার মানন্নোয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার ‘শেখ হাসিনা সেতু’ সর্ম্পকে বলেন, মহম্মদপুর উপজেলার মধুমতি নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন ও দাবি ছিল উপজেলাবাসির। তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় মহম্মদপুরবাসি অত্যন্ত আনন্দিত। সেতুটি জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নামকরণ করার জন্য তিনি আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ তা মঞ্জুর করে। তার প্রচেষ্টায় সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়, যার এখন কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সেতুটি নির্মাণের ফলে মহম্মদপুরবাসির দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হলো। এরফলে মাগুরা-ফরিদপুর হয়ে ঢাকার সাথে যোগাযোগ অনেক সহজ হবে, সেই সাথে উপজেলার মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা সেতুসহ মাগুরা-২ আসনে তার নির্বাচনী এলাকায় আরো ৫টি ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: