
হঠাৎ যমুনার পানি বেড়ে যাওয়ায় টাঙ্গাইলে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত সাতদিনে সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের চরপৌলী ও উত্তর চরপৌলী এবং কালিহাতী উপজেলার আলীপুর, হাটআলীপুর, ভৈরববাড়ি, বিনোদলুহুরিয়া, কুর্শাবেনু গ্রামের কয়েকশ ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর সেতুর দেড় কিলোমিটার ভাটিতে নিউ ধলেশ্বরী নদীর মুখে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) চারটি পৃথক লটে ২৩৪ কোটি ২৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৫৩০ মিটার গাইড বাঁধ নির্মাণ করে। যমুনার মাঝ বরাবর নতুন চর জেগে ওঠায় পানির তীব্র স্রোতের ফলে গাইড বাঁধের ১ নম্বর লটের বিভিন্ন অংশে এরই মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে সদর উপজেলার চরপৌলী, উত্তর চরপৌলী আর কালিহাতী উপজেলার আলীপুর, হাটআলীপুর, ভৈরববাড়ি, বিনোদলুহুরিয়া, কুর্শাবেনু গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীপড়ের মানুষ ঘরবাড়ি ভেঙে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। গাছগুলোও কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। যাতে নতুন বাড়ি তৈরিতে কাজে লাগাতে পারেন। এরই মধ্যে চরপৌলী গ্রামের ইউনুস মন্ডলসহ ভাঙনে বিলীন হয়েছে ওই এলাকার আব্দুর রশীদ শেখ, খন্দকার আলমাস মিয়া, কাশেম মন্ডলের বাড়ি।
ভাঙন কবলিতরা অন্যের বা আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে উঠেছেন। ভাঙনের আশঙ্কায় অনেকে ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন। কেটে ফেলছেন হুমকির মুখে থাকা গাছ।
ভুক্তভোগীরা জানান, যমুনায় পানি বাড়ার সময় এবং পানি কমার সময় প্রতিবছর ওইসব এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। তবে এ বছর বর্ষার আগেই ভাঙন শুরু হয়েছে। গত সাতদিন যাবত ভাঙনের তীব্রতা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, ভাঙনের কারণে এ নিয়ে চার বার ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে হচ্ছে। মাত্র সাতদিনেই এ ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ এখন শুধু সময়ের দাবি নয়, জরুরি। তা না হলে আগামী দু-এক বছরের মধ্যে সদর উপজেলার মানচিত্র পাল্টে যাবে। এ বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও জানেন।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে জরুরি কাজ করে এ ভাঙন ঠেকানো যাবে না। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। দ্রুত কাজের দরপত্র আহ্বান করা হবে। আগামী শুষ্ক মৌসুমে ভাঙনকবলিত জায়গায় স্থায়ী বাঁধের কাজ শুরু হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: