
অধিকারপত্র প্রতিবেদক :প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরেই সোনিয়াকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল তানভীর। গত বৃহস্পতিবার রাতে ফোনে তানভীর তার স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়ে সোনিয়াকে বিয়ে করবে বলে চাপ দেয়। সোনিয়া তাত্ক্ষণিক এ বিষয়ে ‘না’ বলে দেন। ঘটনাটি জানান তানভীরের মা-বাবাকে। ফোনালাপের রেকর্ড তুলে দেন তানভীরের বোনের কাছে। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সোনিয়াকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে আহত করেছে তানভীর।
আহত সোনিয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সন্ধ্যায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। হামলার ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বিকেল ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার দক্ষিণ কালীবাড়ীর মোড়ে। সদর হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, সোনিয়ার হাত ও মুখে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁর শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে।
সোনিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অনার্স কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেএন ডেন্টাল পয়েন্টে কর্মরত। তিনি নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের মলাই মিয়ার মেয়ে। তানভীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার পীরবাড়ির মো. মিজানুর রহমানের ছেলে। সে টিএ রোডের তানভীর টেলিকম নামে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সোনিয়া জানান, বিকেল ৩টার দিকে তিনি ডেন্টাল পয়েন্টে দায়িত্ব পালনের জন্য যান। এর কিছুক্ষণ পরই তানভীর এসে জানতে চায় কেন তার অভিভাবকের কাছে বিচার দেওয়া হলো। একপর্যায়ে সোনিয়াকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় তানভীর।
সোনিয়া আরো জানান, কয়েক মাস ধরেই তানভীর তাঁকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। গত বৃহস্পতিবার রাতে ফোন করে সে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এসব বিষয় তানভীরের মা-বাবাকে জানানো হয়। শনিবার সকালে তানভীরের বোন তুসি তাঁর কাছে এলে মোবাইল ফোনালাপের রেকর্ড দিয়ে দেওয়া হয়। এর পরই তানভীর এ ঘটনা ঘটায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অনার্সের ছাত্রী রুমি জানান, সোনিয়ার সঙ্গে তিনিও ডেন্টাল পয়েন্টে যান। কিছুক্ষণ পরই তানভীর নামে ওই যুবক ছুটে এসে প্রথমে সোনিয়ার সঙ্গে বিবাদে জড়ায়। একপর্যায়ে সে সোনিয়াকে ছুরিকাঘাত করে।
খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে আসে। হাসপাতালের চিকিৎসক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার হাত ও মুখে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ’
সোনিয়ার বাবা, মা ও অন্য স্বজনরা জানান, গত ডিসেম্বর মাস থেকেই তানভীর সোনিয়ার পিছু লেগে ছিল। বিষয়টি তানভীরের পরিবারের লোকজনকে জানানো হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচার দাবি করেন তাঁরা।
সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. বেলাল হোসেন জানান, মেয়েটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: