
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে সংক্রমিতের সংখ্যা এক অংকে নামলেও ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৬ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, আগের ২৪ ঘণ্টায় ৮৭ ডেঙ্গু রোগি শনাক্ত হন।
চট্টগ্রামের করোনা ও ডেঙ্গু সংক্রান্ত হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রেরিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, করোনা পরীক্ষার জন্য ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি ও নগরীর পাঁচ ল্যাবরেটরিতে গতকাল চট্টগ্রামের ৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ৬ পজিটিভের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪ জন এবং রাঙ্গুনিয়া ও পটিয়া উপজেলার একজন করে। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ২৯ হাজার ৪৪০ জনে। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৯৪ হাজার ৩৮০ জন এবং গ্রামের ৩৫ হাজার ৬০ জন। করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৩৬৭ জন রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ৭৩৭ জন ও গ্রামের ৬৩০ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৩২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৪ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৭ নমুনার মধ্যে শহরের গ্রামের ২ টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে।
এছাড়, বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে ২২, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ৭, এপিক হেলথ কেয়ারে ৮, ও এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৮ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। চার ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষিত ৪৫ নমুনার সবগুলোরই নেগেটিভ রেজাল্ট আসে।
এদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেকহা), চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় (চবি), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল, মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল, ল্যাব এইড, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ও এভারকেয়ার হসপিটাল ল্যাব এবং এন্টিজেন টেস্টে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, বিআইটিআইডি’তে ১২ দশমিক ৫০ ও আরটিআরএলে ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং শেভরন, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল, এপিক হেলথ কেয়ার ও এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতাল ল্যাবে ০ শতাংশ।
এদিকে, চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর প্রকোপ মোটেই কমছে না ।
সিভিল সার্জন কার্যালয় গতকাল এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ৮৭ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর জানিয়েছে। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ১০৪ জন হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি মনিটরিং ও দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগতির জন্য চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন অফিসে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলা কীটতত্ত্ববিদ এনতেজার ফেরদাওছের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি কমিটি কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকবে। টেলিফোনে ০২৩৩৩৩৫৪৮৪৩ নম্বরে সাধারণের যোগাযোগের সুবিধা রাখা হয়েছে।
জেলা কীটতত্ত্ববিদ এনতেজার ফেরদাওছ আজ দুপুরে বাসস’কে জানান, গতকালের ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে এডিস মশাসহ সব ধরণের প্রাপ্তবয়স্ক মশা মরে যাওয়ার কথা। কারণ পাখা ভিজে গেলে মশা আর উড়তে পারে না এবং সেখানেই মরে যায়। তবে এ ঝড়ে লার্ভা ও ডিম ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। সাধারণত বৃষ্টির পর ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত লার্ভা ও ডিম সজীব থাকে। তাই আগামী ৪ সপ্তাহ ঝুঁকিপূর্ণই থাকছে।
তিনি জানান, মশা মরার উপযোগী ওষুধ বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ছিটালে বেশি ফল পাওয়া যাবে। এ সময়ে মশার বিচরণ দিনের অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। তাই সকালে বা দুপুরে মশার ওষুধ ছিটালে বেশি সুফল পাওয়া যাবে না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: