ঢাকা | শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শহীদ নূর হোসেন দিবস পালিত

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২২ ০৮:০১

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২২ ০৮:০১

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে আজ শহীদ নূর হোসেন দিবস পালিত হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকালে  রাজধানীর গুলিস্থানে শহীদ নূর হোসেন স্কয়ারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত এবং আলোচনা সভা। 

দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রথমে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ফুল দিয়ে নূর হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 
এসময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গণতন্ত্র একটি বিকাশমান প্রক্রিয়া, এটি কোনো ম্যাজিক্যাল ট্রান্সফরমেশন নয় যে রাতারাতি পরিবর্তন হয়ে যাবে। আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রকে শৃংখলমুক্ত করার আন্দোলন করেছেন।’ আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর শহীদ নূর হোসেনের প্রতি যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। 
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটি আজ সকাল ৭টা ৩০মিনিটে শহীদ নূর হোসেন স্কয়ারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহিল কাইয়ূম প্রমুখ। 
সকাল সাড়ে ৮টায় শহীদ নূর হোসেন স্মরণে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শহীদ নূর হোসেন, আমিনুল হুদা টিটো সহ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। 
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে সকাল ৮টায় শহীদ নূর হোসেন স্কয়ারে ও মুক্তি ভবনের সিপিবি কার্যালয়ে শহীদ সৈয়দ আমিনুল হুদা টিটোর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এসময় সিপিবি’র সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সসহ নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সচিবালয়ের সামনে ১৫ দল, ৭ দল ও ৫ দল- এ তিন জোটের অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি ছিল। ছাত্র সংগঠনগুলোর সমর্থনে অবস্থান ধর্মঘট পরবর্তীতে ঘেরাও কর্মসূচিতে রূপ নেয়। সকল বাধা উপেক্ষা করে ১০ নভেম্বর সকাল থেকেই সচিবালয়ের চারদিকে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে সমবেত হয়। তখন পল্টন মোড় পুলিশ বক্স পেরিয়ে শুরু হয় নূর হোসেনদের সাহসী মিছিল। তার খালি গায়ে বুকে এবং পিঠে লিখা ছিল ‘গণতন্ত্র মুক্তিপাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’।
সমাবেশ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ। পল্টন তখন রণক্ষেত্র। এরই মধ্যে খবর আসে পুলিশের গুলির্বষণে শহীদ হয়েছেন নূর হোসেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য।
তিনি যে স্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত হন, তার নামানুসারে সেই জিরো পয়েন্টের নামকরণ করা হয়েছে নূর হোসেন চত্বর।
১০ই নভেম্বর তার মৃত্যুর কিছু সময় পূর্বে তোলা তার গায়ে লেখাযুক্ত আন্দোলনরত অবস্থার ছবিটি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।
নূর হোসেনের আত্মদানের মাধ্যমে সেদিন গণতন্ত্রের নতুন সংগ্রাম শুরু হয়। সেই সংগ্রামের ধারায় ১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী শাসক পদত্যাগের ঘোষণা দেন। নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকার তার নামে স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করেছে। 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: