ঢাকা | মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

সাত বছর পর ঘরের মাঠে সিরিজ হারলো বাংলাদেশ

odhikarpatra | প্রকাশিত: ৪ মার্চ ২০২৩ ০৭:৩০

odhikarpatra
প্রকাশিত: ৪ মার্চ ২০২৩ ০৭:৩০

ঢাকা, ৩ মার্চ, ২০২৩  : ওপেনার জেসন রয়ের সেঞ্চুরিতে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বিশ^ চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের কাছে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হারলো স্বাগতিক বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০১৬ সালের পর ঘরের মাঠে প্রথমবার দ্বিপাক্ষীক ওয়ানডে সিরিজ হারলো বাংলাদেশ। সর্বশেষ ইংল্যান্ডের কাছেই ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিলো বাংলাদেশ। আজ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ইংল্যান্ড ১৩২ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশকে। এর মাধ্যমে সিরিজ নিশ্চিত করে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ইংলিশরা। প্রথম ওয়ানডে ৩ উইকেটে জিতেছিলো জশ বাটলারের দল। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩২৬ রান করে ইংল্যান্ড। ১২৪ বলে ১৩২ রান করেন রয়। জবাবে ৪৪ দশমিক ৪ ওভারে ১৯৪ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সপ্তম ওভারে দ্বিতীয়বারের মত আক্রমণে এসে নাজমুল হোসেন শান্তর দারুন ক্যাচে ইংল্যান্ডের ওপেনার ফিল সল্টকে ৭ রানে থামান পেসার তাসকিন আহমেদ। দলীয় ২৫ রানে সল্ট ফেরার পর দ্বিতীয় উইকেটে ৫৪ বলে ৫৮ রানের জুটি গড়েন ওপেনার জেসন রয় ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ডেভিড মালান। ১৬তম ওভারে মালানকে ব্যক্তিগত ১১ রানে লেগ বিফোর আউট করে জুটি ভাঙ্গেন স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ২১তম ওভারে জেমস ভিন্সকে ৫ রানে থামিয়ে বাংলাদেশকে তৃতীয় উইকেট উপহার দেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ৯৬ রানে ৩ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। এরপর রয়ের সাথে জুটি বাঁধেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জশ বাটলার। ২২তম ওভারের শেষ বলে রান আউটের হাত থেকে রক্ষা পান বাটলার। ৩১তম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে ১ রান নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১২তম ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রয়। ১০৪ বলে শতকের পর দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেছেন রয়। শেষ পর্যন্ত ৩৬তম ওভারে রয়কে লেগ বিফোর আউট করেন সাকিব আল হাসান। আউট হওয়ার আগে ১৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ১২৪ বলে ১৩২ রান করেন রয়। চতুর্থ উইকেটে বাটলার রয় ৯৩ বলে ১০৯ রানের জুটি গড়েন। রয় ফেরার পর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৪তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন বাটলার। ৪৪তম ওভারে মিরাজের বলে পরপর দু’টি ছক্কা মারার পর আউট হন তিনি। এর আগে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৪ বলে ৭৬ রান করেন বাটলার। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে বাটলার-মঈন আলি ৪২ বলে ৫২ রান যোগ করেন। শেষ দিকে মঈন-স্যাম কারানের ঝড়ে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩২৬ রানের সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৫ বলে ৪২ রান করে তাসকিনের বলে লিটনকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন মঈন। ২টি বাউন্ডারি ও ৩টি ওভার বাউন্ডারিতে ১৯ বলে অপরাজিত ৩৩ রান করেন কারান। বাংলাদেশের তাসকিন ৩টি, মিরাজ ২টি এবং সাকিব-তাইজুল ১টি করে উইকেট নেন। ৩২৭ রানের বড় টার্গেটের জবাব দিতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। পেসার কারানের তোপে প্রথম ওভারেই খালি হাতে ফিরেন বাংলাদেশের ওপেনার লিটন দাস ও তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। তৃতীয় ওভারে মুশফিকুর রহিমকে ৪ রানে বিদায় দিয়ে তৃতীয় উইকেট তুলে নেন কারান। ৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। বিপর্যয় সামাল দিতে চতুর্থ উইকেটে লড়াই শুরু করেন ওপেনার তামিম ও সাকিব। ১৪তম ওভারে জুটিতে ৫০ রান পূর্ণ করেন তারা। মঈনের করা ২১তম ওভারে উইকেট ছেড়ে মারতে গিয়ে লং অফে ভিন্সকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৪টি চারে ৬৫ বলে ৩৫ রান করা তামিম। সাকিবের সাথে ১১১ বলে ৭৯ রান যোগ করেন তামিম। তামিম ফেরার পর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে দলের স্কোর ১শ পার করেন সাকিব। এই জুটিতেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫১তম অর্ধশতক করেন তিনি। চাপের মুখে অর্ধশতকের পর রশিদের বলে ভুলে শট খেলে মিড অফে কারানকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন সাকিব। ৫টি চারে ৬৯ বলে ৫৮ রান করেন তিনি। সাকিবের বিদায়ে উইকেটে এসে ভালো শুরুর পরও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে রশিদের দ্বিতীয় শিকার হন ৩৩ বলে ২৩ রান করা আফিফ হোসেন । সাকিব-আফিফের পর বাংলাদেশের শেষ স্বীকৃত ব্যাটার মাহমুদুল্লাহকেও শিকার করেন রশিদ। স্লিপে মঈনকে ক্যাচ দেয়ার আগে ৩টি চারে ৪৯ বলে ৩২ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। ৩৮ ওভার শেষে ১৬৭ রানে ৭ উইকেট পতনে হারের মুখে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ২শর আগেই গুটিয়ে যায় টাইগাররা। শেষ দিকে তাসকিনের ২১ বলে ২১ রানের ইনিংসে হারের ব্যবধানে কমে বাংলাদেশের। ৩২ বল বাকী থাকতে ১৯৪ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। ইংল্যান্ডের রশিদ ৪৫ রানে ও কারান ২৯ রানে ৪টি করে উইকেট নেন। আগামী ৬ মার্চ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে। স্কোর কার্ড : ইংল্যান্ড ব্যাটিং ইনিংস : জেসন রয় এলবিডব্লু ব সাকিব ১৩২ ফিল সল্ট ক শান্ত ব তাসকিন ৭ ডেভিড মালান এলবিডব্লু ব মিরাজ ১১ জেমস ভিন্স ক মুশফিক ব তাইজুল ৫ জশ বাটলার ক এন্ড ব মিরাজ ৭৬ জ্যাকস ক সাকিব ব তাসকিন ১ মঈন ক লিটন ব তাসকিন ৪২ কারান অপরাজিত ৩৩ রশিদ অপরাজিত ৬ অতিরিক্ত (বা-১, লে বা-১, নো-১, ও-১০) ১৩ মোট (৭ উইকেট, ৫০ ওভার) ৩২৬ উইকেট পতন : ১/২৫ (সল্ট), ২/৮৩ (মালান), ৩/৯৬ (ভিন্স), ৪/২০৫ (রয়), ৫/২০৮ (জ্যাকস), ৬/২৬০ (বাটলার), ৭/২৯৯ (মঈন)। বাংলাদেশ বোলিং : সাকিব : ১০-০-৬৪-১, তাইজুল : ১০-০-৫৮-১ (ও-১), তাসকিন : ১০-০-৬৬-৩ (ও-১), মুস্তাফিজুর : ১০-০-৬৩-০(নো-১), মিরাজ : ১০-০-৭৩-২ (ও-২)। বাংলাদেশ ব্যাটিং ইনিংস : তামিম ইকবাল ক ভিন্স ব মঈন ৩৫ লিটন দাস ক রয় ব কারান ০ নাজমুল হোসেন শান্ত ক বাটলার ব কারান ০ মুশফিকুর রহিম ক বাটলার ব কারান ৪ সাকিব আল হাসান ক কারান ব রশিদ ৫৮ মাহমুদুল্লাহ ক মঈন ব রশিদ ৩২ আফিফ হোসেন ক বাটলার ব রশিদ ২৩ মেহেদি হাসান মিরাজ ক রেহান ব রশিদ ৭ তাসকিন আহমেদ রান আউট ২১ তাইজুল ইসলাম অপরাজিত ১ মুস্তাফিজুর রহমান ক বাটলার ব কারান ০ অতিরিক্ত (বা-৪, লে বা-৭, নো-১, ও-১) ১৩ মোট (অলআউট, ৪৪.৪ ওভার) ১৯৪ উইকেট পতন : ১/১ (লিটন), ২/১ (শান্ত), ৩/৯ (মুশফিকুর), ৪/৮৮ (তামিম), ৫/১২২ (সাকিব), ৬/১৬০ (আফিফ), ৭/১৬৭ (মাহমুদুল্লাহ), ৮/১৮৪ (মিরাজ), ৯/১৯৪ (তাসকিন), ১০/১৯৪ (মুস্তাফিজ)। ইংল্যান্ড বোলিং : কারান : ৬.৪-১-২৯-৪ (নো-১), সাকিব : ৯-০-৪১-০, উড : ৪-০-১৪-০ (ও-১), জ্যাকস : ৬-০-২৭-০, মঈন : ৯-২-২৭-১, রশিদ : ১০-০-৪৫-৪। ফল : ইংল্যান্ড ১৩২ রানে জয়ী। সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ইংল্যান্ড।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: