ঢাকা | সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

রাজনৈতিক অপরাধ ও বিত্তপ্রদর্শনী থেকে সমাজ রক্ষায় কাজ করুন : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী

আহসানুল ইসলাম আমিন | প্রকাশিত: ২৪ জুলাই ২০২৩ ০১:১৩

আহসানুল ইসলাম আমিন
প্রকাশিত: ২৪ জুলাই ২০২৩ ০১:১৩

প্রধান প্রতিবেদক :

রাজনৈতিক অপরাধ ও বিত্ত-বৈভব প্রদর্শনীর কলুষতা থেকে সমাজ রক্ষায় কাজ করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী  এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি আজ রবিবার (২৩জুলাই) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্র্যাব) এর ৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশে এখন তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার প্রবণতা। যতো দিন যাচ্ছে, ততো এই প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এর পেছনে ‘ডেমোনেস্ট্রেশন অব ওয়েলথ’ বা বিত্ত-বৈভব প্রদর্শনীর মতো মনস্তাত্ত্বিক বিষয় যেমন আমার এতো সুন্দর বাড়ি, এতো সুন্দর গাড়ি -সেটিকে ‘ডেমোনেস্ট্রেট’ করা, এটি সমাজকে কলুষিত করছে, অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি করছে।  সেই প্রতিযোগিতায় নানাভাবে অর্থ উপার্জন করতে গিয়ে মানুষ অর্থনৈতিক ও সামাজিক অপরাধের সাথে যুক্ত হচ্ছে, অন্যায্যভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়াচ্ছে, মুনাফা লুটছে যা পুরো সমাজ ও রাষ্ট্রকে কলুষিত করছে, রাষ্ট্রের স্বাভাবিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি যেন না হয় সেজন্য এর বিরুদ্ধে আপনারা সাংবাদিকরা লিখবেন।

সামাজিক অপরাধের পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অপরাধও বৃদ্ধি পেয়েছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতির নামে মানুষ পোড়ানো, মানুষের সহায়-সম্পত্তিতে আগুন দেওয়া পৃথিবীর কোথাও ঘটেছে কি না আমি জানি না। কোনো জায়গায় কমিটি নিয়ে বিরোধ হলে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া কি সমীচীন! কমিটি পছন্দ হলো না বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে তালা লাগিয়ে দিলো, এটি কি সমীচীন! এগুলো কোনভাবেই সমীচীন নয়।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন নরসিংদীতে বিএনপি’র একজন শীর্ষ নেতা মামলায় হাজিরা দিতে গেছেন, তার দলের নেতারাই তার ওপর হামলা পরিচালনা করছে, তার গাড়ি ভাংচুর করেছে। রাজনীতির নামে এভাবে মানুষ পোড়ানো, সম্পত্তিতে আগুন দেওয়া কিম্বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য অপরের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করা, এগুলো রাজনৈতিক অপরাধ।’ এইসব অপরাধের বিরুদ্ধেও লেখা প্রয়োজন এবং তাহলে ক্রাইম রিপোর্টারদের ভূমিকা আরো শানিত হবে এবং দেশ, সমাজ, রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ হলেও যেটি সঠিক সেটি বলতে হবে। তাহলে সমাজ সঠিক পথে হাঁটবে। ক্রাইম রিপোর্টারদের অনেকেই নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এরপরও তারা পিছপা হননি। যারা অতীতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন এখনও করছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আমি যখন এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলাম না, তখনও আপনাদের পাশে ছিলাম, যখন মন্ত্রী থাকবো না তখনও আপনাদের পাশে থাকবো এবং আমি কখনো কোনো সাংবাদিক বা কোনো সাংবাদিক সংগঠনকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখি না।

অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিকতার প্রশংসা করে তিনি আরো  বলেন, ‘আপনাদের নানা অনুসন্ধানী রিপোর্টের কারণে, অনেক অপরাধ যেমন মাদক বিস্তার, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রাষ্ট্রের সুবিধা হয়। আপনারা রিপোর্ট করলে সেটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সরকারের পক্ষে সুবিধা হয়। সেই সাথে তিনি বলেন, ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন ৪০ বছর ধরে ঐক্যবদ্ধ আছে এটিই বড় আশার বিষয়। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি যেমন বিভক্ত হয়নি, আমি আশা করবো আপনারাও ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। রাজনীতি মতাদর্শ থাকবে, পছন্দ-অপছন্দ থাকবে কিন্তু রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত হওয়া মোটেই সমীচীন নয়। ’

ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমালের সভাপতিত্বে সহ সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ, সাবেক সভাপতি খায়রুজ্জামান কামাল, মিজান মালিক ও আবুল হোসেন, ডিআরইউয়ের সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এবং ক্র্যাবের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মন্ত্রীর সাথে কেক কাটায় অংশ নেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: