ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

মন:স্তাত্বিক দ্বন্দ্ব- সংঘাত ফ্রয়েড : শেক্সপিয়র

মো: এরফান রাশেদ | প্রকাশিত: ১ মার্চ ২০১৭ ২০:৩২

মো: এরফান রাশেদ
প্রকাশিত: ১ মার্চ ২০১৭ ২০:৩২

 মন:স্তাত্বিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত ফ্রয়েড : শেক্সপিয়র
                                                                      -    মো: এরফান রাশেদ


মন:স্তাত্বিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত সাহিত্যের অন্যবদ্য অংশ হিসেবে সাহিত্য মহলে বিশেষ স্থান পেয়ে আসছে। সাহিত্যের সর্ব শেখরে আরোহণ করেও শেক্সপিয়র পর্যন্ত এই মন:স্তাত্বিক দ্বন্দ্ব-সংঘাতকে উপেক্ষা করতে পারেননি। তাইতো শেক্সপিয়র তার অধিকাংশ রচনার (নাটকের ) চরিত্র রূপণের ক্ষেত্রে মন:স্তাত্বিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত বিষয়টিকেই সর্বাধিক প্রাধাণ্য দিয়েছেন।



ফ্রয়েডের মতে আমাদের সমাজে তিন ধরনের চরিত্রের মানুষ বিদ্যমান। যারা ID, EGO, SUPER -EGO এই তিন ভাগে বিভক্ত। মানুষ তার নিজের ইচ্ছাকে EGO এর কাছে বিষর্জন দেয় এবং SUPER-EGO  এর মাধ্যমে সে জাগতিক অপকর্ম থেকে বিরত থাকে। আর তার মনের অপূরণীয় ইচ্ছাগুলোকে সে স্বপ্নে  ID এর মাধ্যমে পূরণ করে (যা ফ্রয়েডের Theory of Dream এর মধ্যেই বিদ্যমান)।

শেক্সপিয়র তার নিজের ব্যক্তি জীবনের মন:স্তাত্বিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত ম্যাকবেথ, হ্যামলেট থেকে শুরু করে রোমিও জুলিয়েট পর্যন্ত সকল চরিত্রেই মধ্যেই খুঁজে বেড়িয়েছেন। ম্যাকবেথ যেমন স্ত্রীর ID এর প্রোরচনায় নিজেকে খুনি বানিয়েছে, আর ঠিক তেমনি একই কারনে হ্যমিলেট তার বাবার খুনিকে খুঁজে বেড়িয়েছে। হ্যামলেট স্বপ্নের সূত্রে বাবার খুনি সম্পর্কে যে আদেশ পেয়েছিল, তাকে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে সে তার EGO এর কাছে পরাজিত ছিল। আর  EGO এর বিষর্জন দিয়েই সে অবশেষে তার বাবা হত্যার প্রতিশোধ নিয়েছিল।

অন্যদিকে ম্যাকবেথ ও তার স্ত্রী SUPER-EGO এর দংশন থেকে নিজেদের বাঁচতে মরিয়া ছিল। তাই ভবিষ্যত বেত্তাদের স্মরনাপন্ন হওয়া মুক্তির প্রচেষ্টা মাত্র। শেক্সপিয়রের এই সকল মানসিক অভিপ্রায় তিনি তার রচনার মাধ্যমেই রূপদান করেছেন। যার মাধ্যমে ফ্রয়েডের এই মন:স্তাত্বিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত সাহিত্যের অন্যবদ্য অংশ হিসেবে সাহিত্য মহলে বিশেষ স্থান পেয়েছে।

অন্যদিকে রোমিও ও জুলিয়েট এই মন:স্তাত্বিক দ্বন্দ্ব-সংঘাতের কারণে একে অপরের প্রতি প্রবল ভালবাসা থাকার সত্ত্বেও তাদের জীবনকে একই সূতায় গাঁথতে পারেনি। আর তাইতো তারা মৃত্যুকে বেছে নিয়ে হয়েছে অমর। তাদের এই মৃত্যুই প্রকাশ করে তারা ফ্রয়েডের SUPER-EGO এর কাছে নিজেদেরকে সঁপে দিয়েছিল। যা আজও পাঠক নয়নকে অশ্রুশিক্ত করে। আর পাঠক নয়নে এই অশ্রুশিক্ত ভাবের প্রকাশই মন:স্তাত্বিক দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সার্থকতা।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: