
আতিকুর রহমান আতিক (বগুড়া প্রতিনিধি): বগুড়ার ধুনটে বেপরোয়াভাবে বেড়ে গেছে হিজরাদের চাঁদাবাজি।
চাঁদা না দিলে মারধর ও অশ্লীলতাও করছে তারা। এতে সাধারন মানুষ ও ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তবে তৃতীয় লিঙ্গ হওয়ায় প্রশাসনও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। আর এই সুযোগেই তারা সাধারন মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে।
শনিবার সকাল ১১টায় হিজরাদের চাঁদা না দেওয়ায় গোসাইবাড়ী বাজারের এক ব্যবসায়ী ও তার ছেলেকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।
আহতরা হলেন উপজেলা গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের পূর্বগুয়াডহুরী গ্রামের মৃত আইনুদ্দিনের ছেলে আইয়ুব আলী (৫৫) ও তার ছেলে আরিফুল ইসলাম (২৫)। আহতদের ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে ভর্তি করা হয়েছে।
এঘটনায় স্থানীয় জনতা দুই হিজরাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। স্থানীয়সূত্রে জানাগেছে, ধুনট পৌর এলাকা সহ আশপাশের এলাকায় প্রায় ৫০/৬০জন হিজরা বসবাস করে আসছে।
যাদের অধিকাংশই অন্যান্য জেলা বা উপজেলা থেকে এসে ধুনট উপজেলায় বাসবাস করছে। তবে তাদের কোন কর্মসংস্থান না থাকায় ব্যবসায়ী এবং সাধারন মানুষের কাছ থেকে মালামাল ও টাকা তুলেই তারা জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু সম্প্রতি হিজরাদের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারন মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।
তারা বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করে না পেলে জোরপূর্বক নিজের ইচ্ছামতো পণ্য বা মালামাল তুলে নিয়ে যাচ্ছে। শনিবার সকাল ১১টায় গোসাইবাড়ী বাজারের ব্যবসায়ী আইয়ুব আলীর কাছে চাঁদা দাবি করে ১০/১৫জন হিজরা। কিন্তু আইযুব আলী তাদের দাবিকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা তার ছ-মিল থেকে খড়ি লুট করতে থাকে।
এসময় আইয়ুব আলী ও তার ছেলে আরিফুল ইসলাম বাধা দিতে গেলে হিজরারা তাদেরকে পিটিয়ে আহত করে। এসময় তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন দুই হিজরাকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আইয়ুব আলী জানান, আমার ছ-মিলে এসে ১০/১৫জন হিজরা পাঁচশত টাকা চাঁদা দাবি করে। কিন্তু তাদের এত টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা জোরপূর্বক আমার ছ-মিল থেকে খড়ি লুট করতে থাকে। এসময় বাধা দিলে তারা আমাকে ও আমার ছেলেকে পিটিয়ে আহত করেছে।
ধুনট বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, ধুনটের হাটের দিন হিজরাদের অত্যাচারে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারা দোকানে এসে যে যার ইচ্ছা মতো মালামাল তুলে নিয়ে যায়। এতে বাধা দিতে গেলেই তারা প্রকাশ্যে অশ্লীলতা করে। তাই বাধ্য হয়েই নীরব থাকতে হয়। ধুনট থানার এসআই খোকন কুন্ডু জানান, এক ব্যবসায়ী ও তার ছেলেকে পিটিয়ে আহত করায় দুই হিজরাকে স্থানীয় জনতা আটক করে রাখেছিল।
পরে তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তবে এবিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: