ঢাকা | বুধবার, ৭ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

ইউক্রেনের টানা ড্রোন হামলার পর মস্কোর সব বিমানবন্দর বন্ধ

odhikarpatra | প্রকাশিত: ৬ মে ২০২৫ ২৩:৫১

odhikarpatra
প্রকাশিত: ৬ মে ২০২৫ ২৩:৫১

দ্বিতীয বিশ্ব যুদ্ধের বিজয় দিবসের মাত্র কয়েকদিন আগে ইউক্রেন মস্কোর বিভিন্ন বিমানবন্দরে টানা দুই রাত ধরে ১শ’রও বেশি ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। দেশটির বিমান চলাচল পর্যবেক্ষণ সংস্থা রোসাভিয়াতসিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তাদের রাজধানীর চারটি বিমানবন্দরের সবগুলোই সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

মস্কোর পাশাপাশি, পেনজা এবং ভোরোনেজসহ অন্যান্য রাশিয়ান শহরের গভর্নররাও বলেছেন, মঙ্গলবার রাতে তাদের এলাকা লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে।

মস্কো থেকে এএফপি এই খবর জানায়।

রাশিয়ান সামরিক ব্লগারদের অসমর্থিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মস্কোর দক্ষিণে একটি অ্যাপার্টমেন্টের জানালা ড্রোন হামলায় ভেঙে গেছে। টানা দ্বিতীয় রাতের মতো রাশিয়া ইউক্রেনের ড্রোন হামলার খবর দিলো। এরআগে সোমবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায় তারা রাতভর ২৬টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে।

ইউক্রেন এই বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে খারকিভের মেয়র দাবি করেছেন, রাশিয়াও রাতে তার শহরে এবং কিয়েভেল আশপাশে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

তিন বছরেরও বেশি সময় আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রার আক্রমণের পর কিয়েভ মস্কোর ওপর বেশ কয়েকবার ড্রোন হামলা চালিয়েছে। মার্চ মাসে তাদের সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলায় তিনজন নিহত হয়।

সোমবার ইউক্রেনীয় সেনারা রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করছেু এমন খবর প্রকাশের পর মস্কোয় ড্রোন হামলার বিষয়টি সামনে এলো। ইউক্রেনীয় সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে কিয়েভ জানিয়েছে, তারা রোববার রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে টিওটকিনো গ্রামের কাছে একটি ড্রোন কমান্ড ইউনিটে আঘাত করেছে।

গত এপ্রিল মাসে, মস্কো বলেছিল, ইউক্রেনীয় বাহিনী আকস্মিক আক্রমণ শুরু করার নয় মাস পর তারা পুরো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে। তবে কিয়েভ জোর দিয়ে বলেছে, সীমান্ত পেরিয়ে এখনো তাদের সেনারা কাজ করছে।

এছাড়াও রাশিয়ান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার ইউক্রেনের আক্রমণে কুরস্কে অঞ্চলের রিলস্ক শহরের একটি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে একটি পোস্টে কুরস্ক অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আলেকজান্ডার খিনস্টাইনের মতে, রিলস্কের সাবস্টেশনের দুটি ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বিস্ফোরণের ফলে দুই কিশোর আহত হয়েছে।

একাধিক রুশ সামরিক ব্লগার আরো জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী গ্রামে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। তারা সীমান্তে ট্যাংকের ফাঁদ ভেঙে যানবাহনের ছবি পোস্ট করেছেন- যা এখনও যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

ব্লগারদের মতে, সোমবার ইউক্রেনীয় বাহিনী সীমান্তের ওপর দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে এবং বিশেষ যানবাহনে মাইনফিল্ড অতিক্রম করেছে।

ব্লগার আরভিভোয়েনকরের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শত্রুরা রাতে রকেট দিয়ে সেতু উড়িয়ে দিয়েছে এবং সকালে সাঁজোয়া গোষ্ঠীর সাথে আক্রমণ শুরু করেছে।

‘মাইন পরিষ্কারকারী যানবাহনগুলো মাইনফিল্ডগুলোয় প্রবেশ করতে শুরু করেছে, তারপরে সৈন্যদের সাথে সাঁজোয়া যান। সীমান্তে তীব্র যুদ্ধ চলছে।’

সোমবার এক বিবৃতিতে ইউক্রেন বলেছে, কুরস্ক অভিযান শুরুর নয় মাস পরও ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনী রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের ভূখণ্ডে সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে।

এ বিষয়ে মস্কো থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে কিছু সামরিক ব্লগার জানিয়েছে, তিওতকিনোর দিকে দুটি জায়গায় বিরোধী বাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করছে এমন মানচিত্রও প্রকাশ করেছেন - যেখানে ড্রোন কমান্ড ইউনিটটি আঘাত হানা হয়েছিল।

এদিকে, উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের তিওতকিনো থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে সুমি এলাকায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দুটি বসতি থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বলে রয়টার্স জানায়।

ইউক্রেন মূলত ২০২৪ সালের আগস্টে কুরস্কে আকস্মিকভাবে অনুপ্রবেশ করেছিল। একটি বাফার জোন তৈরি, সুমি ও আশেপাশের এলাকাগুলোকে সুরক্ষিত করার জন্য এবং ভবিষ্যতের আলোচনায় এটিকে দর কষাকষির একটি উপায় হিসেবে ব্যবহার করার আশা থেকে তারা এই অনুপ্রবেশ করেছিল বলে দাবি করেছিল ওই সময়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: