ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
সাধু সাবধান বিচিত্র এই বাংলার বিচিত্র মানুষ আমরা আজ

যে কিশোর রং রোডে হাই স্প্রিডে গাড়ী, হেলমেট বিহীন মোটরবাইক, লাইসেন্স বিহীন অতিরিক্ত রাফ গাড়ী চালায়, তারাই আজকে রাজপথে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লাইসেন্স চেক করে

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৫ আগস্ট ২০১৮ ২২:০৬

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৫ আগস্ট ২০১৮ ২২:০৬

নাগরিক সেবা নিশ্চিতে আপোষহীন হোন।।।।কিশোরদের সাময়িক এডভেঞ্চার যে বিষয় আমাদের সামনে এনেছে তাহল মোটাদাগে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নিয়োজিত সংস্থাগুলোর দূর্বলতা। ১৯৭১ থেকে ২০১৮ এই কবছরের বিভাজন যদি করা হয় এবং প্রতি দশকে অনেক নতুন সিদ্ধান্ত আইন বিধি বাস্তবায়নের মূল্যায়ন করা হয় তাহলে অনেক সফলতার সাথে দূর্বলতাও দেখা যাবে। আর এ জন্যই দায়ী বাস্তবায়নকারীরা। চাকরির সুযোগ সুবিধা তুলনায় নাগরিক সুবিধা প্রদানে গাফিলতি হয়রানি অনিয়ম দূর্ণিতি প্রমাণিত। প্রমাণ আছে দেখেই আজকের এই কিশোর কিশোরী রাস্তায় নেমে পুরো রাস্তার কন্ট্রোল নিয়ে নিচ্ছে। এই কিশোররাই কিন্তু হাই স্পিডে গাড়ি চালানো, ভাংচুর, উলটা দিকে গাড়ি /মোটর বাইক চালানো ইত্যাদি অনিয়ম করেছে আজ তারাই এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে নিয়মকে প্রতিষ্ঠা করছে। তবে তারা কিন্তু বি আর টি এ বা পুলিশ বা সড়ক ও জনপথ বা সিটি বা পৌরসভাকে সাহায্য করছে না বরং ঐসব সংস্থার লোকজন তাড়িয়ে দিয়ে নিজেরা দখল করেছে। এই আইনত ক্ষমতা ও দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত এই লোকজনকে কেন সরিয়ে বা তাড়িয়ে দিলো। এরকারণ ঐ বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর নৈতিক দূর্বলতা, প্রাতিষ্ঠানিক দূর্বলতা। আজ যদি এই কিশোররা হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পণ্য, অন্যান্য সেবা প্রদানকারী অফিস, আদালত, সিটি/পৌরসভার সেবার বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তাতে অবাক হবার কিছু নাই। এক গাড়ি চালনায় দিনের পর দিন অনিয়ম করতে করতে আজকের এই অবস্থানে চলে আসে তাহলে অন্যগুলোর কি অবস্থা? এই শিক্ষার্থীরা কিন্তু অতিরিক্ত টিউশন ও হাবিজাবি ফি, প্রাইভেট টিউশনি ও কোচিংয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি, কোন কোচিং সেন্টারের কক্ষে তালা লাগায় নি। অর্থাৎ এই অনিয়মগুলো মেনে নিচ্ছে অন্যদিকে রাস্তা দখল করলে প্রকাশ্যে নিজেকে দেখানো যায় সংবাদ ও সোস্যাল মিডিয়াতে দেখানো হচ্ছে নিজেকে হিরো হিরো লাগে এডভেঞ্চারে পরিপূর্ণ, এখন ক্লাসে যেতে হয় না, খুব মজার!! সন্দেহ করি এ অযুহাতে পরীক্ষা না দিয়ে উপরের ক্লাসে যাবার জন্য রাস্তা দখল করে কি না! এই শিক্ষার্থীরা তাদের এলোমেলো, অযৌক্তিক ও বিশাল সিলেবাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিত, স্কুলে ল্যাবরেটরি �,লাইব্রেরীর উন্নয়নের জন্য, ভবনের উন্নয়নের জন্য, পরীক্ষা ও মূল্যায়নের সংস্কারের জন্য আন্দোলন করতো তাহলেও যৌক্তিকতা থাকতো। তারা রাস্তায় এডভেঞ্চার দেখাতে বেশি মজা পাচ্ছে কেননা অনেকে জানেই না। সচেতন থেকে অচেতনে অর্থাৎ এই এডভেঞ্চার এমন পর্যায়ে গেছে যে তারা মিথ্যা হুজুগে একটা রাজনৈতিক দলের অফিসে হামলা করে! একজন নায়িকা মিথ্যা তথ্য ছড়ায় উস্কে দিচ্ছে! �দোষ কাকে দিবেন? এই কিশোরদের না কি দ্বায়িত্বপ্রাপ্তদের? আমাদের সরকার অনেক উদার জনগণ চায় সরকার আইন করে, অফিস করে, বেতন ভাতা সুযোগ সুবিধা প্রতিবছর বাড়ায় সেতুলনায় সেবার মান বাড়ে না। সেবার মান নাবাড়ানোর কারণ সেবা প্রদানের গাফিলতি। এইসকল গাফিলতি সরকার জানে কারণ সরকার রাজনৈতিক দল এবং তৃণমূল নেতা কর্মীরা এসব জানে। এইসব ত্যাগী নেতা কর্মীর সরকারের দূর্নাম হয় প্রতিক্ষণ অন্যের সাথে এসব নিয়ে বাহাস করতে হয়, জবাব দিতে হয় নিজ কর্মীদের কাছেও তথাপি সরকার এই গাফিলতির অধিকাংশকেই রেহায় দেয়। এই রেহায় হল প্রশ্রয় যা পেতে পেতে গায়ের চামড়া শক্ত হয়ে গেছে। কিন্তু সরকারকে নাগরিক সেবা নিশ্চিতে কঠোরতর হতেই হয়। জনগণ খুশি থাকলে হাজার হাজার বছর ক্ষমতায় থাকা যায়, না থাকলে স্বৈরাচার এরশাদের মত পতন হয়, নির্বাচনেও হয়। জনগণ কিসে বিরক্ত হয় এসব মাপার কোন সংস্থা আছে? সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো কি সেবা গ্রহীতার খুশি, অখুশি ও বিরক্ত হওয়া পরিমাপ করে? করা হয় না, গতানুগতিক ভাবেই চলছি। �এই কিশোর কিশোরী এডভেঞ্চার সুসংগঠিত নয় ওরা করছে আমরাও করব এমন ভাবেই আবেগের ও প্রেস্টিজ রক্ষায় কিশোররা রাস্তায় নেমে যাচ্ছে, গাড়ি চেকিং করছে। এই ধরনের চেকিং প্রতিবছর একটা নির্দিষ্ট সপ্তাহে করা যায়। এসব ভলান্টারি কাজ হিসেবে তাদের পরীক্ষায় যুক্ত হতে পারে। এধরনের ভলান্টারি কাজ শুধু ট্রাফিক কেন রাস্তা পরিস্কার, গ্রামেও আছে অনেক, মাঠেও আছে ইত্যাদিতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করে শিক্ষা নিতে পারে। এজন্য এভাবে এলোমেলোভাবে নয় সুসংগঠিতভাবে হতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার সমন্বয়ে হতে হবে। এজন্য সরকার বাধ্যতামূলক আইন, বিধি, নিয়ম কানুন এবং পুরস্কার প্রণোদনা দিতে পারে। পুলিশ ট্রাফিক সপ্তাহ ঘোষণা করেছে এখন এই কিশোরদের ডাকলেও রাস্তায় আসবে না বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাঠাবে কারণ মানসিকভাবে বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এ ধরনের নিয়মতান্ত্রিক কাজে অভ্যস্ততা না থাকা। সেটাও তৈরি করতে হবে। বই পুস্তক রেখে স্বেচ্ছাশ্রম দিবে না প্রাইভেট কোচিং করতে দৌড়াবে! কোন কিছু ভালো করার কাজে সবার অংশগ্রহণ বাজে কিছু নয় তাই ট্রাফিক সপ্তাহে স্কুল কলেজ অংশ নিক, অংশ নিক সরকারি বেসরকারি চাকুরে ও সমাজের সকল এবং সুশীল সমাজ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: