কোনো ধরনের টেন্ডার ছাড়াই চলছে লাগেজ র্যাপিংয়ের কাজ
রীতিমতো অবিশ্বাস্য কাণ্ড ঘটছে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
Mahbubur Rohman Polash |
প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০১৯ ০০:২৬
Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০১৯ ০০:২৬
একজন আপাদমস্তক বেয়াদব ব্যক্তি তিনি ।উনার কারণে সিলেটে কিছু আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা বারবার হুছট খেয়ে বন্ধ হতে হয়। ফ্লাই দুবাই এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। আমি এমন সিলেটবিদ্দেসী সিলেটি লোক আর দেখি নাই। এমন মন্তব্য করেছেন কায়েস চৌধুরী।
যাত্রীদের হয়রানি-হেনস্থা, লাগেজ নিয়ে দালাল, আনসার ও কর্মচারীদের টানাটানি, এ বিমানবন্দর দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালান, টেন্ডার ছাড়াই বিমানবন্দরে যাত্রীদের লাগেজ র্যাপিংয়ে কাজ দেয়া, ভিআইপি গেইট দিয়ে টাকার বিনিময়ে যার-তার অবাধে যাতায়াতসহ নানা অনিয়মের পাহাড় জমেছে ওসমানী বিমানবন্দরে।
রীতিমতো অবিশ্বাস্য কাণ্ড ঘটছে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। সিলেট বিভাগের একমাত্র এই বিমানবন্দরটিতে কোনো ধরনের টেন্ডার ছাড়াই চলছে লাগেজ র্যাপিংয়ের কাজ। সচেতন মহল অভিযোগ তুলছেন, বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদের ইন্ধনেই হচ্ছে এমন তুঘলকি কাজ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন শত শত প্রবাসী দেশে আসা-যাওয়া করেন। এছাড়া এ বিমানবন্দর ব্যবহার করে সিলেটের অনেকেই বিভিন্ন দেশে ঘুরতে যান। এসব বিমানযাত্রীদের লাগেজ র্যাপিংয়ে ওসমানী বিমানবন্দরে ২শ’-৫শ’ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে এ কাজ করা হচ্ছে কোনো ধরনের টেন্ডার ছাড়াই। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাগেজ র্যাপিংয়ের কাজ করছে একটি প্রতিষ্ঠান। কোনো ধরনের টেন্ডার ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটিকে এই কাজ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ নিজ স্বার্থেই টেন্ডার ছাড়া কাজ দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। টেন্ডার ছাড়াই একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে লাগেজ র্যাপিংয়ের কাজ করানোয় সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে।
অনিয়মের আখড়ায় পরিণত করা হয়েছে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে। এ বিমানবন্দর ঘিরে চলছে নানা অপকর্ম। এমনকি বিমানবন্দরের ভেতরে থাকা ডিউটি ফ্রি শপ থেকে শুল্কমুক্ত মদও একটি চক্র বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ।
নিয়মানুসারে, বিদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রীরা বিমানবন্দরের ডিউটি ফ্রি শপ থেকে শুল্কমুক্ত এক বোতল মদ ও দুই কার্টন সিগারেট কিনে নিজেদের সাথে নিতে পারেন। তবে বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীরা শুধু এক কার্টন সিগারেট কিনতে পারবেন।
কিন্তু ওসমানী বিমানবন্দরে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ ওঠেছে, ওসমানী বিমানবন্দরের ডিউটি ফ্রি শপ থেকে যার যেমন ইচ্ছা, সেভাবে মদ ও সিগারেট বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। একটি চক্র বিদেশীদের ভুয়া পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে এখান থেকে মদ বাইরে নিয়ে বড় অঙ্কে বিক্রি করে দিচ্ছে
পার্শ্ববর্তী একটি ক্লাবেও ওসমানী বিমানবন্দরের ডিউটি ফ্রি শপের মদ নিয়ে যাওয়া হয়। এমনকি খোদ অভিযোগ ওঠেছে, হাফিজ আহমদ বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক পদে প্রায় এক যুগ ধরে থাকার ফলে তিনি এখানে নিজের সা¤্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। তার ইশারাতেই ঘটছে সবকিছু। তবে অভিযোগ যথারীতি অস্বীকার করেছেন হাফিজ আহমদ।ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ টেন্ডার ছাড়াই লাগেজ র্যাপিংয়ের কাজ চলছে বলে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘টেন্ডার ছাড়াই লাগেজ র্যাপিংয়ের কাজ করছে একটি প্রতিষ্ঠান। অনেক আগে একবার টেন্ডার হয়েছিল, এরপর আর হয়নি।’ কেন টেন্ডার হচ্ছে না, এমন প্রশ্নে হাফিজ আহমদ বলেন, ‘অথিরিটি মনে করছে টেন্ডারের দরকার নেই, তাই হচ্ছে না। মূল লক্ষ্য হচ্ছে যাত্রীদের সেবা দেয়া। সেবা দেয়া হচ্ছে।’ হাফিজ আহমদ ‘যাত্রীদের সেবা’ দেয়ার কথা বললেও ওসমানী বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি যেন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। প্রতিনিয়ত এ বিমানবন্দরে প্রবাসীরা চরম হয়রানির শিকার হন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), সিলেট শাখার সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ওসমানী বিমানবন্দরে টেন্ডার ছাড়া কাজ কিভাবে হয়। এগুলো হচ্ছে অনিয়ম, সুশাসনের অভাব। স্বচ্ছতা নাই।’ অভিযোগ ওঠেছে, প্রায় এক যুগ ধরে ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপকের পদে থেকে নিজের একটি আধিপাত্যবাদী বলয় গড়ে তুলেছেন হাফিজ আহমদ। বিমানবন্দরের সব অনিময়-দুর্নীতির পেছনেও তার ইন্ধন রয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। টাওয়ার কন্ট্রোলার থেকে ব্যবস্থাপক বনে যাওয়া হাফিজের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। অবশ্য সকল অভিযোগই অস্বীকার করেন তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: