odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Wednesday, 22nd October 2025, ২২nd October ২০২৫

নারীদের হাড়ক্ষয়জনিত জটিলতা, প্রতিরোধের উপায়

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২০ February ২০২০ ০৪:২৮

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২০ February ২০২০ ০৪:২৮

 

 

ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ : মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। বার্ধক্যের সঙ্গে সঙ্গে রোগের যেন কোন শেষ নেই। এসব রোগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হাড়ক্ষয় বা অস্টিওপোরোসিস। যাকে হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া বলেও বোঝানো হয়।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দিতে পারে। পুরুষ-মহিলা সবার ক্ষেত্রেই এটা হতে পারে। তবে, নারীদের বেলায় এ সমস্যা বেশি হয়ে থাকে এবং তা অত্যন্ত জটিল আকার ধারণ করতে পারে। কেননা, পরিবারের বেশির ভাগ কাজই একজন নারীকে সামলাতে হয়।
হাড়ক্ষয়ের এই সমস্যায় দেখা যায় সামান্য আঘাতেই হাড় ভেঙ্গে যেতে পারে। সমস্যা মারাত্মক হলে হাঁচি বা কাশি দিলেও হাড় ভেঙ্গে যেতে পারে। বয়স্ক নারীদের বিকলাঙ্গ বা মৃত্যুর অন্যতম কারণ এটি। বয়স ৫০ বছর পার হওয়ার পর হাড় ÿয়ের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ সমস্যার সূত্রপাত হতে পারে আরও আগেই। নারীদের মেনোপজ বা মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরবর্তী সময়ে হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি আরো বেড়ে যায়। এছাড়া, আরো অনেক কারণেই হাড়ক্ষয়ের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।
নারীর হাড়ÿয় রোগ নিয়ে কথা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. শাহাজাদ সেলিমের সঙ্গে।
তিনি বলেন, যে কোন মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই রোগ হতে পারে। এ জন্য আগে থেকেই সতর্ক হয়ে কিছু ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে হবে। তিনি বলেন, ‘হাড়ক্ষয়ের মধ্যে সংশোধনযোগ্য ঝুঁকিগুলো হলো- ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি, ধুমপান, অপুষ্টি (ক্যালসিয়াম, জিংক, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-কে ইত্যাদি ঘাটতি), ক্ষীণকায় শরীর, আমিষ নির্ভর খ্যাদ্যাভ্যাস, বেশি বয়সে অতিরিক্ত চা, কফি, চকলেট খাওয়ার অভ্যাস, খাদ্যে বা বাতাসে ভারী ধাতু, কোমল পানীয় ও মদ্যপান।’
তিনি বলেন, ‘আবার কিছু ঝুঁকি আছে অসংশোধনযোগ্য, মানে চাইলেও এড়ানো যায় না। যেমন- বয়স, জিনগত ত্রুটি, স্ত্রোপচার করে জরায়ূ ফেলে দেয়া, সময়ের আগে মেনোপজ, রক্তে সেক্স হরমোনের ঘাটতি, অতি খর্বাকৃতি ইত্যাদি। দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকা, স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন, হরমোনজনিত রোগ যেমন হাইপারথাইরয়েডিজম, আ্যড্রিনাল গ্রন্থির সমস্যা, রিউসাটয়েড আর্থারাইটিজের মত কিছু বাতরোগ, কিডনি অকার্যকর হলে অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে।’
তবে, এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে, যথেষ্ঠ ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে উলেøখ করে ডা. শাহাজাদ সেলিম বলেন এই রোগ প্রতিরোধের উপায়ও আছে।
প্রতিরোধের উপায়: প্রাথমিক অবস্থায় হাড়ক্ষয়ের তেমন উপসর্গ থাকে না। বয়স্ক নারীদের কোমড়ে বা পিঠে ব্যথা হলে এবং স্বাভাবিক সময়ের মধ্যে তা না কমলে মেরুদন্ডের হাড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে কিনা তা দেখতে হবে। কুঁজো হয়ে যওয়া, সামনে ঝুঁকে দাঁড়ানো বা হাঁটা এই ধরণের সমস্যার লক্ষণ। রোগীর ব্যক্তিগত ইতিহাস, উপসর্গ মিলিয়ে চিকিৎসক ঝুঁকি নির্নয় করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে প্রধান ও প্রথম পদক্ষেপ হলো-ঝুঁকি শনাক্ত করা এবং সম্ভব হলে অতিদ্রত তা দূর করার চেষ্টা করা। অস্টিওপোরোসিসজনিত ঝুঁকি কমাতে নারীদের জীবনব্যাপী সচেতন থাকতে হবে। কৈশোর থেকেই খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। নিয়মিত ব্যয়াম করতে হবে, সচল থাকতে হবে। যথেষ্ঠ ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। কারো সময়ের আগে মেনোপজ হলে (যেমন অস্ত্রোপচার করে জরায়ূ ডিম্বাশয় ফেলে দেওয়ার কারণে) অস্টিওপোরোসিসের চিকিৎসা নিন।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: