ঢাকা | শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

করোনার দুঃসময়ে অসহায় মানুষের পাশে ওসি ফরিদ উদ্দিন

ahsanul islam | প্রকাশিত: ৩ জুন ২০২০ ২৩:৩৪

ahsanul islam
প্রকাশিত: ৩ জুন ২০২০ ২৩:৩৪

করোনার দুঃসময়ে অসহায় মানুষের পাশে ওসি ফরিদ উদ্দিন 
 
মোহাম্মদ রোমান হাওলাদার,সিরাজদিখান প্রতিনিধিঃবর্তমানে দেশের করোনা পরিস্থিতিতে পুলিশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনসাধারণকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে আনা নেওয়া থেকে শুরু করে দাফন কাফনের কাজও করছে পুলিশ। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ পুলিশের ভুমিকা প্রশংসনিয়। করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম ও নিরলস পরিশ্রমের ফলে পুলিশের প্রতি জনসাধারণের ভিন্ন ধারণাকে পাল্টে দিয়েছে। মানুষ এখন পুলিশের প্রতি আস্থা ফিরে পেয়েছে। অন্যদিকে প্রাতিষ্ঠানিক সেবামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি অসহায় মানুষকে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে প্রসংসার জোয়ারে ভাসছে পুলিশ। তেমনি এক পুলিশ অফিসার মো. ফরিদ উদ্দিন। যিনি জনসাধারণকে প্রাতিষ্ঠানিক সেবা দেয়ার পাশাপাশি ব্যক্তিগত ভাবেও অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের প্রতি মানবতা হাত। "মানবতা এখনো মরেনি" অসহায়  মানুষের প্রতি তার উদার মানবতা এই কথাটিকেই প্রমান করে। ওসি ফরিদ উদ্দিন বর্তমানে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জের দায়ীত্ব পালন করছেন। তিনি এ থানায় যোগদানের পর থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণসহ জনসাধারণের জান মালের নিরাপত্তায় নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। দেশে করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব হওয়ার পর থেকে করোনা মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছেন। সেই সাথে করোনার কবলে পরে কর্মহীন হওয়া অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে তাদেরকে খাদ্য, বস্ত্র ও আর্থিক সাহায্য সহযোগীতা করে আসছেন তিনি। কখনো দিনে কখোনা বা রাতে বিবেকের তারনায় অসহায় মানুষের দুয়ারে দুয়ারে  ছুটে গিয়ে তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এমনকি কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও অসহায় মানুষকে থানায় ডেকে নিয়ে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। এছাড়া সিরাজদিখান থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের বেতন থেকে অর্থ যোগান দিয়ে কর্মহীন অসহায় মানুষের বাড়ী বাড়ী খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়ে তাদের পাশে দাড়িয়েছেন। অসহায় মানুষের প্রতি ওসি ফরিদ উদ্দিনসহ থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের উদার মানবিকতা বাংলাদেশ পুলিশের সম্মানকে আরো এক ধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনার প্রাদূর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই "মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য" কথাটিকে বুকে ধারণ করে ওসি ফরিদ উদ্দিন তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে করোনার দুঃসময়ে উপজেলার বেদে পল্লী, প্রতিবন্ধী পরিবারসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার কর্মহীন অসহায় মানুষ থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ছিন্নমূল মানুষকে খাদ্য, বস্ত্র ও আর্থিক সহযোগী করেন। এছাড়া গত ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে তাদেরকে থানায় ডেকে এনে ঈদ উপহার প্রদান করেন। সম্প্রতি ওসি ফরিদ উদ্দিন ও তার অফিসার ফোর্সদের জণসেবা মূলক কার্যক্রমকে সাধূবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সিরাজদিখান উপজেলা বাসীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অন্যদিকে উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিসহ সুশিল সমাজের বিত্তবান লোকজন ওসি ফরিদ উদ্দিনের জণবান্ধব কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ হয়ে অসহায় মানুষের পাশে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। সিরাজদিখান থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, যে সময পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব না কাটবে সে সময় অবদি সিরাজদিখান থানা পুলিশের প্রাতিষ্ঠানিক সেবামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ভাবে অসহায় মানুষকে খাদ্য, বস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করার জণবান্ধব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। 
 
এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতাকালে ওসি ফরিদ উদ্দিন বলেন, বিশ্বব্যপী করোনা (কভিড-১৯) মহামারী আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশেও এর ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে। সারা দেশের ন্যায় সিরাজদিখান থানা এলাকায়ও করোনার বিস্তার লাভ করেছে। করোনা ভাইরাসের আক্রমনের শুরু থেকেই আমরা জনসাধারণকে সচেতন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। এ সংক্রান্তে জণসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে থানা এলাকায় মাইকিং করা সহ লিফলেট  বিলি করেছি। মানুষ যেন স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলে এবং লকডাউনে ঘরে থাকে সেই জন্য কাজ করেছি। লকডাউনের কবলে পরে সিরাজদিখানের নিম্ন আয়ের মানুষ কর্মহীন হয়ে  অসহায় হয়ে পরে। তাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেলো তারা আর্থিক ভাবে অভাব অনটনের মধ্যে পরে যায়। সেই সময়ে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে চেষ্টা করেছি মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য। ভুপেন হাজারিকার যে বিখ্যাত গান ‘‘মানুষ মানুষের জন্য,জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না” মহান এই গানটির চেতনায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছি। সকল মানুষেরই এই চিন্তা চেতনা নিয়ে গরীব অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানো উচিৎ। মানুষ যখন কর্মহীন হয়ে পরে তখন খুব সমস্যায় পড়ে যায়। ঠিক মতো তাদের ঘরে খাবার থাকে না। অনেকে আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে তাদের ঘরে খাবার নেই। আমি গভীর রাতে চেষ্টা করেছি তাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মানুষের পাশে দাড়িয়েছি আর প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে সিরাজদিখান থানা পুলিশ তাদের বেতনের টাকা থেকে অর্থ দিয়ে ত্রাণ সামগ্রী অসহায় মানুষের মাঝে বিলি করেছে। আমি সমাজের সকল বিত্তবান মানুষকে অনুরোধ করবো অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য। এই দুর্যোগ মোকাবেলায় সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারলে করোনা মোকাবলা করা সম্ভব। আপনারা সবাই যার যার ঘরে থাকবেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। সরকার লকডাউন শিথিল করেছে। এখন এই মূহুর্তে আমাদের আরো বেশী সতর্ক হতে হবে। বিশেষ করে গণপরিবহনে যেন স্বল্প সংখ্যক যাত্রী উঠে। সরকারের বেধে দেয়া নিয়ম অনুযায়ী অর্ধেক যাত্রী উঠবে দাড়িয়ে কোন যাত্রী যাতায়াত করবেন না। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলবেন। করোনা প্রতিরোধ ও এর সংক্রমণ ঠেকাতে ঘনঘন হাত ধোবেন, স্যানিটাইজার ব্যাবহার করবেন এবং বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করবেন। সকলেই অসহায় মানুষের পাশে দাড়াবেন আমরাও চেষ্টা করবো। 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: