ঢাকা | রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে

odhikar patra | প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২০ ০৫:১৬

odhikar patra
প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২০ ০৫:১৬

 

ঢাকা, ১৩ জুন, ২০২০ : গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে।
গত ২৪ ঘন্টায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৬ হাজার ৬৩৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৮৫৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৬১৫ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল শনাক্ত হয়েছিল ৩ হাজার ৪৭১ জন।
নমুনা পরীক্ষায় আজ শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২১ দশমিক ৭১ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ কম।
দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪ হাজার ছাড়িয়েছে। বর্তমানে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ৮৪ হাজার ৩৭৯ জন রোগী রয়েছেন।
এদিকে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ৪৪ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশে করোনায় মারা গেছেন ১ হাজার ১৩৯ জন। গতকালের চেয়ে আজ ২ জন কম মারা গেছেন। আগের দিন মারা গিয়েছিলেন রেকর্ড সংখ্যক ৪৬ জন।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৭ হাজার ৮২৭ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৫৭৮ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ১৩ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ২১ দশমিক ১৬ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ কম।
তিনি জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৩৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৬ হাজার ৯৫০টি। গতকালের চেয়ে আজ ২;হাজার ৯১৫টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৫৯টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ৬৩৮টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৯৯০টি। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৬৪৮টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে মোট ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬৬০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ।
তিনি জানান, ২৪ ঘন্টায় মৃতদের মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ ও ১১ জন নারী। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের ১ জন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩ জন, সিলেট বিভাগে ২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, খুলনা ও রংপুর বিভাগে ১ জন করে এবং বরিশাল বিভাগে ৪ জন। হাসপাতালে মারা গেছেন ২৭ জন এবং বাসায় মারা গেছেন ১৪ জন। আর হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এসেছেন ৩ জন।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৪৯৬ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৯ হাজার ৩৪০ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৬৮ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ হাজার ২২৯ জন। দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২টি।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৪১৪ জনকে। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ১৭ হাজার ৬৪৪ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৪৮০ জন। এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৫৬ হাজার ৮৫৯ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬০ হাজার ৭৮৫ জন। দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোারেন্টিনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২৫ লাখ ৯ হাজার ১৪২টি। এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২২ লাখ ৯৮ হাজার ৮৭৫টি। বর্তমানে ২ লাখ ১০ হাজার ২৬৭টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৩৭টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার ৩১৮টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৩৩২ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ৫ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৬৭৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ১৭ হাজার ২১২ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১২ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৪১১ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ২২ হাজার ৮২৫ জন। ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৪৭৪ জন এবং এ পর্যন্ত ১১ হাজার ৬৪৫ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১২ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭২ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪ লাখ ১০ হাজার ৫১০ জন। ২৪ ঘন্টায় মার গেছেন ৪ হাজার ৯২৫ জন এবং এ পর্যন্ত ৪ লাখ ১৮ হাজার ২৯৪ জন।
হাতে উল্লেখ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সর্বদা মুখে মাস্ক পরে থাকা, সাবান পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে গেলে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: