
বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা—এ যেন হয়রানির আরেক নাম।
সাধারণ মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতাল মানে, চিকিৎসার জন্য নয়, বরং হয়রানির এক অব্যর্থ ক্ষেত্র।
সামান্য চিকিৎসার জন্য রোগীর পরিবারকে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালের দরজায় দরজায় ছুটতে হয়, ভরসা রাখতে হয় শেষ পর্যন্ত আল্লাহর দরবারে।
একটি বাস্তব উদাহরণ—
মাত্র তিন বছরের এক শিশু ভুলে একটি বিষাক্ত লিথিয়াম ব্যাটারি ঘিলে ফেলে।
উদ্বিগ্ন পিতা-মাতা শুরু করলেন মরিয়া হয়ে ছুটোছুটি।
প্রথমে এক ডাক্তারের পরামর্শে গেলেন একটি বেসরকারি হাসপাতালে, সেখানে এক্স-রে করে এক পরিচিত ডাক্তারকে দেখালেন।
ডাক্তার বললেন—“জরুরি চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান।”
রাত তখন ৯টা।
শিশুটিকে নিয়ে ছুটে গেলেন ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে।
এক্স-রে রিপোর্ট দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক জরুরি ভিত্তিতে রেফার করলেন জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে।
পিতা-মাতা বুকভরা আশা নিয়ে সেখানে পৌঁছালেন। রাত তখন ১০ ঘটিকা।
কিন্তু বিধিবাম—ইমার্জেন্সিতে একজন নার্স ছাড়া কাউকে পাওয়া গেল না।
শত অনুরোধেও নার্স কোনো ডাক্তারের যোগাযোগ নম্বর দিলেন না।
হাসপাতালের প্রধানের অফিসিয়াল নম্বরে ফোন করেও সাড়া মিলল না।
অবশেষে জানিয়ে দেওয়া হলো—“রাতে রোগী মারা গেলেও আমাদের কিছু করার নেই।”
এটাই আমাদের স্বাস্থ্যখাতের নির্মম চিত্র। জনগণের সাথে অমানবিক বাস্তবতা।
আর কতদিন এভাবে পিতামাতার চোখের জল হাসপাতালের বারান্দা ভিজিয়ে যাবে?
আর কবে মানুষ পাবে উন্নত, মানবিক চিকিৎসা?
মাত্র তিন বছরের এই শিশুর কিছু হয়ে গেলে—
তার দায় কি হাসপাতাল নেবে?
জনগণের টাকায় পরিচালিত এসব প্রতিষ্ঠানের ‘জমিদারি ব্যবহার’ কবে ‘জনবান্ধব আচরণে’ পরিণত হবে?
এ প্রশ্ন আজ প্রতিটি বিবেকবান নাগরিকের।
এ প্রশ্ন প্রতিটি পিতা-মাতার—যাদের সন্তান চিকিৎসা ব্যবস্থার অবহেলায় ঝুঁকির মুখে।
সমাধান কবে?
নাকি আমরা অপেক্ষা করব আরেকটি অমূল্য প্রাণ ঝরে পড়ার জন্য?
অধিকারপত্র অধিকারের কথা বলে। এধরনের অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আমাদের জানান।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: