ঢাকা | রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

দেশে ২৪ ঘন্টায় করোনায় ৩৭ জন মারা গেছেন, নতুন আক্রান্ত ৩,৪৬২

odhikar patra | প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২০ ০৩:৫৯

odhikar patra
প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২০ ০৩:৫৯

 

ঢাকা, ২৪ জুন, ২০২০ : দেশে করোন শনাক্তের ১০৯তম দিনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
গতকালের চেয়ে আজ ৬ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৪৩ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে দেশে মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৫৮২ জন।
শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ মৃত্যুর হার দশমিক ০১ শতাংশ কম।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ১৬ হাজার ৪৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ হাজার ৪৬২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৫০ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৬ হাজার ২৯২টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিল ৩ হাজার ৪১২ জন। দেশে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার ৬৬০ জন।
নমুনা পরীক্ষায় আজ শনাক্তের হার ২১ দশমিক ০৭ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ১৩ শতাংশ বেশি।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৩১ জন। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ১৫১ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ৮৮০ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৪৯ হাজার ৬৬৬ জন।
তিনি জানান, আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৩৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৭ হাজার ২৪৫টি। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৭ হাজার ৫৬৩টি। গতকালের চেয়ে আজ ৩১৮টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৬৬টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৬ হাজার ৪৩৩টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৬ হাজার ২৯২টি। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১৪১টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে মোট ৬ লাখ ৬০ হাজার ৪৪৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩৪ জন পুরুষ, ৩ জন নারী। এদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৯ জন এবং ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৮ জন রয়েছেন। বিভাগ বিশ্লেষণে ১০ জন ঢাকা বিভাগের, ৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৬ জন রাজশাহী বিভাগের, ৭ জন খুলনা বিভাগের, ৩ জন ময়মনসিংহ বিভাগের এবং ১ জন করে বরিশাল ও রংপুরে বিভাগের। ৩৪ জন মারা গেছেন হাসপাতালে এবং ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বাসায়।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ৭৪৯ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ২১ হাজার ৮৬১ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৫১৮ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৮ হাজার ৭০৩ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৩ হাজার ১৫৮ জন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৬৩১ জনকে, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ২৯১ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৮১৭ জন, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৩১ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৬৩ হাজার ৯০৭ জন।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) গত ২৪ ঘন্টায় বিতরণ হয়েছে ২ হাজার ৫শ’ টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২৫ লাখ ২৮ হাজার ২৪৫টি। এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২৩ লাখ ৬২ হাজার ৮১৪টি। বর্তমানে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৩১টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৭২ হাজার ৪৪৫টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ২৯ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৬টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৩৯৫ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ৫ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ১২৪ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ২৭ হাজার ৬০৯ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৩ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৯২৪ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ২০ হাজার ১১৫ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৮৫ জন এবং এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ১১৯ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৩ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩২৬ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮৯ লাখ ৯৩ হাজার ৬৫৯ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৮৪৭ জন এবং এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৭ জন বলে তিনি জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সর্বদা মুখে মাস্ক পরে থাকা, সাবান পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে গেলে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: