-2021-09-20-15-57-15.png)
নিজস্ব প্রতিবেদক
ভূয়া বেতন বিবরণীসহ বিভিন্ন ভূয়া কাগজ পত্র দাখিল করে ৮ম ওয়েজবোর্ডের সুবিধা নেয়া এবং করোনাকালীন সময়ে অবৈধভাবে সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতির উদ্দেশ্যে কাজে বিরত রাখার অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। গতকাল রোববার দৈনিক নিউ নেশন পত্রিকার কনফারেন্স রুমে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এস এম মাহফুজুল হক যুগ্মসচিব (প্রেস), তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাপতিত্বে তদন্তে অংশ নেন মো. শাহেনুর রহমান, প্রধান তথ্য অফিসার (চ:দা:), তথ্য অধিদফতর এবং মো. মতিউর রহমান তালুকদার, সভাপতি, বাংলাদেশ সংবাদপ্রত কর্মচারী ফেডারেশন, ঢাকা।
নিউ নেশন পত্রিকায় কাজ থেকে বিরত রাখা সাংবাদিকদের মধ্যে শুনানীতে অংশ নেন শাহজাহান মজুমদার, বার্তা সম্পাদক, জয়নাল আবেদীন খান, চীফ রিপোর্টার, মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক (গাযী আনোয়ার), সিনিয়র রিপোর্টার, সৈয়দা ডলি ইকবাল, সহ-সম্পাদক এবং আহছান উল্লাহ, সার্কুলেশন ম্যানেজার। নিউ নেশন কর্তৃপক্ষের পক্ষে শুনানীতে অংশ নেন মোয়াজ্জেম হোসেন, জেনারেল ম্যানেজার।
সূত্র জানায়, ব্যরিস্টার মইনুল হোসেনের প্রকাশনায় নিউ নেশন পত্রিকা অধিকাংশ সাংবাদিক ও কর্মচারীদের সরকার ঘোষিত ওয়েজবোর্ড দেয়া হয় না। মিথ্যা ঘোষণা ও ভূয়া বেতন বিবরনী দাখিল করে ওয়েজবোর্ডের সর্বশেষ সুবিধাদি নিচ্ছে নিউ নেশন কর্তৃপক্ষ। এই অনিয়মের বিরুদ্ধে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নিউ নেশন ইউনিট চিফ মো হেমায়েত হোসেনের নেতৃত্বে ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের জন্য একাধিকবার সভা আহবায়ন করে দাবি জানানো হয়।নিউ নেশন ইউনিট ওয়োজবোর্ড বাস্তবায়ন বিষয়ক সর্বশেষ ২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি নিউ নেশন পত্রিকার অফিসে একটি সভা করে প্রকাশককে রেজুলেশন দেয়। এতে প্রকাশক ব্যরিস্টার মইনুল হোসেন চরম ক্ষিপ্ত হন। এর পর থেকেই ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে আন্দোলনরত সাংবাদিকদের চাকরিচ্যূতিতে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখে।
এরই মধ্যে মার্চ মাসের শেষের দিকে করোনা মহামারি শুরু হলে করোনার অযুহাত দেখিয়ে সম্পাদক, বার্তা-সম্পাদকসহ ১১জন সাংবাদিককে কাজ করা থেকে বিরত রাখা হয়। ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে এখন পর্যন্ত তাদের বেতন-ভাতাও বন্ধ রাখা হয়।
সূত্র আরো জানায়, ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া এবং ১১জন সাংবাদিককে অবৈধভাবে কাজে বিরত রাখার প্রেক্ষিতে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নিউ নেশন ইউনিট চিফ মো হেমায়েত হোসেন গত ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদফতর (ডিএফপি) এর মহা-পরিচালক বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
ওই অভিযোগে বলা হয়, নিউনেশনের প্রকাশক মঈনুল হোসেন ও চেয়ারপার্সন সাজু হোসেন কর্তৃক অবৈধভাবে সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতির উদ্দেশ্যে কাজে বিরত রাখা ও ভূয়া বেতন বিবরণীসহ বিভিন্ন ভুয়া কাগজ পত্র দাখিল পূর্বক ৮ম ওয়েজবোর্ডের সুবিধা নেয়া হয়েছে। ডিএফপিতে তারা ৮ম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী কয়েকজন সাংবাদিকের বেতন বিবরনী দাখিল করলেও বাস্তবে তাদের ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী কোন প্রকার বেতন-ভাতা প্রদান করেন নাই। এমনকি অনেককে ওয়েজবোর্ডের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে নিয়োগপত্র ছাড়াই কাজ করাচ্ছে।
ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে জালিয়াতি ও প্রতারণার প্রতিকারের জন্য ডিএফপিতে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় নিউ নেশন পত্রিকার অফিসে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, করোনার অযুহাত দেখিয়ে নিউনেশন প্রকাশক যে সকল সাংবাদিকদের কাজের বাইরে রেখেছেন, তাদের কাজে যোগদান এবং নিয়মিত বেতন প্রদান বিষয়ে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ এবং সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু স্বাক্ষরিত ২৬ জুলাই ২০২০২ ইং তারিখে একটি চিঠি নিউনেশন প্রকাশক বরাবর ইস্যু করা হয়। সাত দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বলা হলেও প্রকাশক এর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি ইউনিয়নের চিঠির কোনো জবাবও দেয়নি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: