ঢাকা | শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ!

| প্রকাশিত: ১ এপ্রিল ২০২২ ২০:২৩


প্রকাশিত: ১ এপ্রিল ২০২২ ২০:২৩

বাংলাদেশে মাঝেমধ্যেই ছোট ও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প কাঁপন ধরাচ্ছে। এসব ভূমিকম্পে তেমন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও বড় মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আছে। সাম্প্রতিককালে বড় মাত্রার ভূমিকম্প না হলেও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু ভূমিকম্পের তেমন কোনো পূর্বাভাস ব্যবস্থা নেই। সেজন্য দিন-ক্ষণ সুনির্দিষ্ট করে বলতে না পারলেও বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বড় মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ, সেটা হতে পারে যে কোনো সময়।

কিন্তু ঝুঁকি থাকলেও তা মোকাবিলার প্রস্তুতিতে অনেকটাই পিছিয়ে বাংলাদেশ। বহু পুরোনো ভবন, অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড অনুসরণ না করা—ভূমিকম্প ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষিত জনবলেরও সংকট রয়েছে।

এতে প্রমাণ হয়, বাংলাদেশে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে। এটা কখন হবে, আমরা হিসাব করে বের করতে পারিনি। অনেকে বলেন, ১০০ বছর পরপর বড় ভূমিকম্প হয়, এটা ঠিক নয়। ৩০০ বছর পর, ৫০০ বছর পরও হতে পারে। তবে অবশ্যই ঝুঁকিতে আছি আমরা 

ভূমিকম্প মোকাবিলায় বাংলাদেশের সামর্থ্য বোঝাতে অনেকে ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের ঘটনাকে তুলে ধরেন। সেসময় পুরো শক্তি কাজে লাগিয়ে ওই ভবনটি পুরোপুরি উদ্ধারে প্রায় এক মাস লেগে যায়।

গত বছরের ২৯ মে দেশের ইতিহাসে প্রথম একই অঞ্চলে একদিনে চার দফা ভূ-কম্পন অনুভূত হয়। আবহাওয়া ও ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ওইদিন সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে রিখটার স্কেলে ৩ মাত্রার, সকাল ১০টা ৫০ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডে ৪ দশমিক ১ মাত্রার, বেলা ১১টা ২৯ মিনিট ৫১ সেকেন্ডে ২ দশমিক ৮ মাত্রার এবং দুপুর ১টা ৫৮ মিনিটে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এগুলোর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের জৈন্তাপুর ও এর আশপাশে। এর পরদিন ৩০ মে ভোর ৪টা ৩৫ মিনিট ৭ সেকেন্ডে ফের দুই দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়।

কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন, দফায় দফায় স্বল্প মাত্রার ভূমিকম্প বড় ধরনের ভূমিকম্পের পূর্বাভাস।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ভূতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ভূমিকম্পের ঝুঁকিপ্রবণ অঞ্চলে রয়েছে। অতীতে বড় ধরনের ভূমিকম্প বাংলাদেশ ও আশপাশে হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে। এটা কিন্তু হবে। বাংলাদেশের আশপাশে ভূমিকম্পের ইপি সেন্টার বা কেন্দ্র আছে। এই কারণে ৭ মাত্রার বেশি ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ। তবে এটা কবে হবে, সেটা বলা যাচ্ছে না। আগামীকাল হবে, নাকি ১০০ বছর পরে হবে, নাকি ২০০ বছর পরে হবে- এটা স্টাডির ব্যাপার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ৭ মাত্রার মতো বড় ভূমিকম্প হয়েছে মানিকগঞ্জে ১৮৮৫ সালে। এটার নাম ছিল বেঙ্গল আর্থকোয়াক। আরেকটা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে ১৯১৮ সালে, এটার নাম শ্রীমঙ্গল আর্থকোয়াক। শ্রীমঙ্গল আর্থকোয়াকের উৎপত্তিস্থলের আশপাশে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১৮৮৫ সালের ভূমিকম্পে টাঙ্গাইল, শেরপুর, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। তবে ওই ভূমিকম্পে ঢাকা শহরের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: