
ঢাকা ছাড়ার আগেই দলের মধ্যে যেন ছড়িয়ে পড়েছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার ‘ধরে দিবানি’ বিশ্বাসটা। ম্যাচের আগের দিন দুর্ঘটনায় মানজারুল ইসলাম (রানা) ও সাজ্জাদুল হাসানের (সেতু) মৃত্যু সেই বিশ্বাসকে যেন রূপ দেয় প্রতিজ্ঞায়—শোক নয়, সব শক্তি নিয়েই ভারতের বিপক্ষে ঝাঁপাবে বাংলাদেশ!
ঝাঁপাল। এমনভাবেই, পুরো বিশ্ব স্তম্ভিত হলো। মুগ্ধ হলো। মাশরাফি-ঝড়ে এলোমেলো হয়ে টেন্ডুলকার-গাঙ্গুলী-দ্রাবিড়ের ভারত অলআউট মাত্র ১৯১ রানে। সেটি বাংলাদেশ পেরিয়ে গেল তামিম, সাকিব ও মুশফিকের তিন ঝলমল ফিফটিতে। এল ৫ উইকেটের জয়। লেখা হলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুর্দান্ত এক উপাখ্যান।
তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই মাশরাফির অফ কাটার উড়িয়ে দেয় বীরেন্দর শেবাগের স্টাম্প। জয়ের বীজও তাঁর হাতেই বোনা। ইনিংস শেষে তাঁর বোলিং ফিগার: ৯.৩-২-৩৮-৪। ম্যাচসেরা হতে আর কী লাগে! তবে মাশরাফির গতির পাশাপাশি ভারতকে ভোগায় তিন বাঁহাতি রাজ্জাক-রফিক-সাকিবের স্পিনও। এমনই ভোগান্তি, পাঁচ থেকে নয়—এই পাঁচটি উইকেট ভারত হারায় মাত্র ২ রানের ব্যবধানে!
জহির-হরভজনদের সামনে ১৯১ রান নিয়েও একটু শঙ্কা ছিল ঠিকই। কিন্তু সব ঝেঁটিয়ে বিদায় করলেন ওই তিন তরুণ। তামিম ইকবালের ৫৩ বলের ৫১ রানে ঝোড়ো শুরু। জহির খানকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মিড উইকেটে আছড়ে ফেলা তামিমের সেই ছক্কা তো ওই বিশ্বকাপেরই সেরা মুহূর্তগুলোর একটি। চতুর্থ উইকেটে সাকিব-মুশফিকের ৮৪ রানের দুর্দান্ত জুটি বাংলাদেশকে নিয়ে যায় জয়ের আরও কাছে। শেষটা রাঙান মুশফিক, মুনাফ প্যাটেলকে সীমানা ছাড়া করে।
পোর্ট অব স্পেনের সোনারঙা সেই গোধূলিতে রচিত হয় রূপকথা। আর প্রায় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়াও।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: