ঢাকা | সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২
.

ছেলে মানুষ করতে মরণ-কুয়ায় মায়ের খেলা!

shahidul Islam | প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০১৭ ১২:৩০

shahidul Islam
প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০১৭ ১২:৩০

অনলাইন ডেস্ক
পাঁচ বছরের ছেলেকে মানুষ করতে মরণ-কুয়ায় মোটরসাইকেলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এক মা।

ভারতের ঝাড় খণ্ডের রাঁচীর জগন্নাথপুর মেলায় এখন এই ‘মা’ রেহানাকে দেখার জন্যই ভিড় জমছে।

যে খেলায় পুরুষদেরই আধিপত্য সেই বিপজ্জনক খেলা দেখিয়ে হাততালি কুড়িয়ে রেহানা জানাচ্ছেন, এই ‘স্টান্ট’ শুধুমাত্র তার ছেলে রেহানের জন্যই।

আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, রাঁচীর জগন্নাথপুরে শতাব্দী প্রাচীন মেলায় বসেছে তিন তিনটা মরণ-কুয়া। কিন্তু যত ভিড় ওই ‘গুড়িয়া মরণ-কুয়া’কে ঘিরেই। তিরিশ ফুটের গভীর কুয়ার দেওয়াল ঘিরে রেহানার স্টান্টবাজি দেখে হাততালির ঝড় বইছে।

কুয়া ঘিরে মাচার মতো একটা জায়গায় মই দিয়ে উঠে দর্শকদের খেলা দেখতে হয়। রেহেনার খেলা দেখতে এতটাই ভিড় হচ্ছে যে মাচা ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় মেলা কর্তৃপক্ষ। ফলে নামতে হয়েছে পুলিশকে। দর্শক সামলাচ্ছেন তারাই।

এক সঙ্গে নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি দর্শককে পুলিশ ঢুকতেই দিচ্ছে না। খেলা দেখান মরণ-কুয়ায়, কিন্তু রেহানার মন পড়ে থাকে দিল্লির সন্তনগরে। ওখানেই তো দাদু-দিদার কাছে মানুষ হচ্ছে তার পাঁচ বছরের ছেলে রেহান।

দুটি শোয়ের মাঝে রেহানা বলেন, ‘ছেলেকে মানুষ করার জন্য মায়েরা তো কত কিছুই করে। আমি এই বিপজ্জনক খেলা দেখাচ্ছি। উপার্জন করছি।’ ছেলের মুখ মনে পড়লে কোনও বিপদকেই আর বিপদ বলে মনে হয় না রেহানার।

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লির সন্তনগরের খুবই গরীব পরিবারের মেয়ে রেহানা একটু বড় হতেই এক পড়শির মোটরবাইকে শিখেছিল বাইক চালানো।

রেহানা বলেন, ‘বন্ধুর বাইক নিয়ে টোটো করে ঘুরে বেড়াতাম। একবার আমাদের পাড়ায় এ রকম মরণ-কুয়োর খেলা বসেছিল। আমি ঠিক করলাম ওই খেলা আমিও দেখাব।’

ওই সংস্থার এক কর্মী রিয়াজ বলেন, ‘প্রথমে আমরা ওকে নিতে রাজি হইনি। ছেলেদের এই খেলা মেয়েরা কী ভাবে দেখাবে! কিন্তু ওর জেদ দেখে ওকে নিয়ে নিলাম। এখন রেহানা পুরুষ স্টান্টবাজদের পিছনে ফেলে দিয়েছে।’

এই রিয়াজকেই পরে বিয়ে করেন রেহানা। রেহানার কথায়, ‘আমি বেশিদূর পড়াশোনা করতে পারিনি। কিন্তু ছেলেকে ভাল ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে পড়াচ্ছি।’

ছেলেকে নিয়ে মায়ের স্বপ্ন অনেক। সেই স্বপ্নের কাছে এই ৩০ ফুটের মরণ কুয়া তো কিছুই নয়!



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: