ঢাকা | শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ইংরেজি উচ্চারণে বাংলা না বলতে তরুণ প্রজন্মকে প্রধানমন্ত্রীর আহবান

Admin 1 | প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৭:০১

Admin 1
প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৭:০১

নিজের আঞ্চলিক বা কথ্য ভাষায় কথা বলা স্বকীয়তার পরিচায়ক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কিন্তু বাংলা ভাষাকে কোনোভাবেই বিকৃত করা যাবে না। তিনি বাংলা ও ইংরেজির মিশেলে ‘বাংরেজি’ থেকে ছেলেমেয়েদের সরিয়ে আনতে শিক্ষক ও শিক্ষাবিদদের প্রতি তাগিদ দিয়েছেন। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০১৭ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা রয়েছে। আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে আমরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি এবং বলি। কিন্তু ইদানীং ইংরেজির সাথে বংলা মিশিয়ে একটা বিচিত্র শব্দ ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ছেলেমেয়েদের মধ্যে এটা সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে যাচ্ছে। তারা এমন ভাব দেখায়, যেন এভাবে কথা না বললে তাদের মর‌্যাদাই থাকে না। এই জায়গা থেকে তাদের সরিয়ে আনতে হবে।’

নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যখন যেটা বলবে সেটা ঠিকমতো সঠিকভাবে বলবে, সঠিকভাবে উচ্চারণ করবে এবং ব্যবহার করবে।’

আমাদের ভাষার মধ্যে বৈচিত্র্য রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা সাতই মার্চের ভাষণে গোপালগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করেছেন। তিনি এ ভাষা সব সময় ব্যবহার করতেন।’

বঙ্গবন্ধুর আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে তার শিক্ষকদের আলোচনার স্মৃতিচারণা করে বঙ্গবন্ধু-তনয়া বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে পড়তাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোনো শিক্ষক মাঝে মাঝে বলতেন, “উনি (বঙ্গবন্ধু) এভাবে বলছেন কেন?” তখন আমি বলতাম, “স্যার উনি (বঙ্গবন্ধু) যখন কথা বলেন জনগণের জন্যই বলেন। জনগণ সহজে উপলব্ধি করবে এবং জনগণের হৃদয়ে পতিত হবে সেটাই বলতেন। এটাকে সংশোধন করা যায় না। এটা স্বতঃস্ফূর্ত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের আঞ্চলিক ভাষা বলব। কিন্তু আমাদের প্রচলিত ভাষাকে যেন বিকৃত করে বাংরেজি না হয়। সেই বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি দেয়া উচিত।’

মাতৃভাষায় কথা বলার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ভাষাকে গুরুত্ব সব সময়ই দিব, কিন্তু এর জন্য অন্য কোনো ভাষার সাথে বৈরিতা নয়। জ্ঞান অর্জনের জন্য আমরা অন্য যেকোনো ভাষা শিখতে পারি।’ বাংলা ভাষার পাশাপাশি অন্য ভাষা শেখার জন্য তার সরকার একটি অ্যাপস তৈরি করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে নয়টি ভাষা শেখা যাবে।

বাংলা ভাষার মর‌্যাদা রক্ষার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভাষাশহীদরা এই ভাষা আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন। অনেক রক্ত আর জীবনের বিনিময়ে এই ভাষা অর্জন। এর যেন অমর‌্যাদা না হয়।’ তিনি বলেন, ভাষাভাষীর দিক দিয়ে বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহৎ ভাষা বাংলা। ভাষাশহীদদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা এই ভাষার অধিকার রঅর্জন করেছি। কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এটি তেমন করে তুলে ধরা হচ্ছে না। এটি বিশ্বের দরবারে আরো বেশি করে তুলে ধরতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: