
আগের অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের সঙ্গে তুলনা করলে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে সারা দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে গড় মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫.৫৭ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫.৪০ শতাংশ। তবে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) জুলাই মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার জুন মাসের তুলনায় কমে দাঁড়িয়েছে ৫.৫৭ শতাংশে। গত জুন মাসে ছিল ৫.৯৪ শতাংশ। এ সময় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৬.৯৫ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৭.৫১ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার কমে হয়েছে ৩.৫৩ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৩.৬৭ শতাংশ। গতকাল বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠক পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এসব তথ্য প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মে মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেল, চিনি এবং চালের দাম বেড়ে গিয়েছিল। ফলে জুন মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। কিন্তু এখন চালের দাম কিছুটা বাড়তি থাকলেও সয়াবিন তেল ও চিনির দাম কমে এসেছে। তাই মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমতির দিকে।
আশা করছি সামনের দিনগুলোতে দাম আরো কমবে। সেই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির হারও কমবে। তিনি আরো বলেন, শহরে চালের দাম বাড়লেও গ্রামে চালের দাম কমেছে, ফলে এর প্রভাব পড়েছে মূল্যস্ফীতিতে।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব অনুযায়ী জুলাইয়ে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি (পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে) কমে দাঁড়িয়েছে ৫.৪১ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫.৬৫ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার কমে দাঁড়িয়েছে ৬.৮৬ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৭.২০ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার কমে দাঁড়িয়েছে ২.৮৪ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ২.৯৪ শতাংশ। অন্যদিকে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে কমে দাঁড়িয়েছে ৫.৮৬ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬.৪৯ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৭.১৫ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৮.২১ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৪.৪৮ শতাংশ, যা এর আগের মাসে ছিল ৪.৬৭ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্য বলছে, আগের বছরের প্রথম মাসের সঙ্গে তুলনা করলে জুলাই মাসে খাদ্য খাতে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ৬.৯৫ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই মাসে ৪.৩৫ শতাংশ ছিল। আর খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার আগের বছরের জুলাইয়ের ৬.৯৮ শতাংশ থেকে কমে এ বছরের জুলাইয়ে হয়েছে ৩.৫৩ শতাংশ। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫.৫ শতাংশের নিচে রাখার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বিবিএস প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করলেও গত মে মাসে এসে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য প্রকাশ শুরু করে। এতে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা শুরু হলে এখন আবার প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: