
যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন অনেকটা নড়বড়ে অবস্থায় পৌঁছেছে। দেশটির একটি থিংক ট্যাংক এ আভাসই দিয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান দ্য ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সিনেটের আর ছয়জন সদস্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেই উচ্চকক্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অপসারণে আর কোনো বাধা থাকবে না।
এদিকে সিনেটের ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে নিজ দল রিপাবলিকানদেরও অনেকে ট্রাম্পের বিপক্ষে চলে গেছেন।
দ্য ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের গবেষক এলেইন কামার্ক জানিয়েছেন, আর মাত্র ছয়টি ভোট বিপক্ষে গেলেই অভিশংসনের মুখে পড়তে হতে পারে ট্রাম্পকে। তাঁর নানান কর্মকাণ্ডের কারণে ১২ জন রিপাবলিকান সিনেটর ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলে গেছেন। তাঁরা এখন আর প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন না। ১০০ সিনেট সদস্যর মধ্যে ৫২ জন রিপাবলিকান এবং ৪৮ জন ডেমোক্র্যাটের। ১২ রিপাবলিকান সিনেটর ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে অভিশংসন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আর মাত্র ছয়টি ভোট হলেই ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নিতে হতে পারে।
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, সিনেটে প্রেসিডেন্টের অপসারণের প্রস্তাব তখনই তোলা যাবে, যখন নিম্নকক্ষ তথা প্রতিনিধি পরিষদ তাঁর অভিশংসনের পক্ষে রায় দেবে। সেই প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্প চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন; এমন কোনো আশঙ্কার কথা কিন্তু বলা হয়নি ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের পক্ষ থেকে। তারা কেবলই সিনেটে ট্রাম্পের সমর্থন কমে আসার কথা জানিয়েছে অভিশংসনের আভাস দিয়েছে মাত্র।
মার্কিন সংবিধানের ১৯৬৭ সালে প্রণীত এক সংশোধনীতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট যদি তাঁর ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন, তাহলে তাঁকে অপসারণ করা যাবে। অভিশংসন প্রক্রিয়ার অধীনে, কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের বিচারিক কমিটি প্রথমে শুনানি শুরু করবে। এরপর প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করার প্রশ্নে ভোট দেবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য প্রেসিডেন্টের অভিশংসন করার পক্ষে থাকলে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে প্রস্তাবটি সিনেটে যায়।
এর আগে মার্কিন তিনজন প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের মুখে পড়তে হয়েছিল। ১৮৯৮ সালে অ্যান্ড্রু জনসন, ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে বিল ক্লিনটন এবং ১৯৭৪ সালে রিচার্ড নিক্সন অভিশংসনের মুখে পড়েছিলেন। অ্যান্ড্রু জনসন ও বিল ক্লিনটন অভিশংসন উতরে যেতে পারলেও রিচার্ড নিক্সন অভিশংসনের কারণে পদত্যাগ করেছিলেন। তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: