ঢাকা | বুধবার, ৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

তানোরে চার ফসলি জমিতে ইট ভাটা কাজ করছে শিশু শ্রমিক

আহসানুল ইসলাম আমিন | প্রকাশিত: ৩ মে ২০২৩ ০৩:০৯

আহসানুল ইসলাম আমিন
প্রকাশিত: ৩ মে ২০২৩ ০৩:০৯

তানোর প্রতিনিধি:

রাজশাহীর তানোরে নীতিমালা লঙ্ঘন করে চার ফসলি জমিতে ইট ভাটা নির্মাণ করে শিশু আইন লঙ্ঘন করে সামান্য মুল্যে শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে মুন্ডুমালা পৌর এলাকার মাহালী পাড়া ও বাধাইড় ইউপির গোয়ালপাড়া ইট ভাটায়। এতে করে ওই এলাকার শিশুরা স্কুলে না গিয়ে ভাটার কাজে ব্যস্ত থাকছেন বলে একাধিক ব্যক্তি জানান। ফলে ইট ভাটার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালিয়ে শিশুদের স্কুলগামী করার জোর দাবি তুলেছেন ওই এলাকার সচেতন নাগরিকরা।

জানা গেছে, তানোর মুন্ডুমালা পৌরসভার মাহালীপাড়া গ্রামে ও উপজেলার বাধাইড় ইউপির প্রত্যন্ত পল্লী গোয়ালপাড়া গ্রামে এসব চার ফসলি জমিতে বিভিন্ন নাম দিয়ে ইট ভাটা গুলো নির্মাণ করা হয়েছে। এদিকে লোকালয় ও ফসলি জমিতে ইট ভাটা নির্মাণের ফলে আশপাশের জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। এছাড়াও ইট তৈরীতে উর্বরা কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) ব্যবহার করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাজি আবুল কালাম নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি আলু চাষের কথা বলে গোয়ালপাড়া মাঠে প্রথমে চার বিঘা চার ফসলি জমি কিনেন,পরবর্তীতে আরো প্রায় ২০ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে প্রায় ত্রিশ বিঘা জমির ওপর ইটভাটা নির্মাণ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলেন, ইটভাটা নির্মাণে বাধা দিলে তাদের মামলা-হামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে হাজি আবুল কালাম। এই ইটভাটা নির্মাণ করে ফসলী মাঠের সর্বনাশ করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের জারি করা পরিপত্র (২০ অক্টোবর ২০০৩) অনুযায়ী ইট ভাটায় ১২০ ফুট উঁচু চিমনি স্থাপন বাধ্যতামুলক। এছাড়াও ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (৪ ধারার ৫ উপ-ধারা) অনুযায়ী আবাসিক এলাকা, উপজেলা সদর ও ফল বাগানের আশপাশের ৩ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ইটভাটা স্থাপন সম্পূর্ণ অবৈধ। কিন্তু লোকালয় ও স্কুলের পাশে চারফসলী জমিতে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এতে ইটভাটার নির্গত ধোঁয়া অতি সহজেই লোকালয় ও ছাত্রছাত্রীদের চোখে মুখে এবং খেত-খামারে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবেশ, দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। এছাড়াও ইটভাটায় শিশু শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। স্থানীয়রা এই দুটি ইট ভাটা বন্ধের জন্য ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যম প্রশাসনের অভিযান পরিচালনার দাবি করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এব্যাপারে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, কৃষি জমিতে ইটভাটা নির্মাণের কোনো সুযোগ নাই। এব্যাপারে বাধাইড় গোয়ালপাড়া ইট ভাটার মালিক হাজি আবুল কালাম ও মুন্ডুমালা পৌরসভার মাহালীপাড়া ইট ভাটার মালিক শামসুল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,সারাদেশে যেভাবে যে নিয়মে ইটভাটা চলছে তারাও সেই ভাবে ইটভাটা চালাচ্ছেন। এতে সমস্যা কি।

এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: