
মিয়ানমারের সেনা প্রধান মিন অংসহ দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর আমন্ত্রণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। সোমবার ইইউ’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেখানে বলা হয়, মিয়ানমারের সঙ্গে সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা তারা পুনর্মূল্যায়ণ করবে।
এছাড়া অভ্যন্তরীণ দমননীতিতে ব্যবহার করা সম্ভব, এমন কোনও অস্ত্র মিয়ানমারের কাছে বিক্রি করা হবে না বলে সংস্থাটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদি তাতেও পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তবে ইউরোপীয় কাউন্সিল বাড়তি পদক্ষেপ নেবে। ইতিবাচক পরিস্থিতির দেখা মিললে দেশটির উপর পুনরায় সমর্থন দেবে ইইউ।
এছাড়া রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য মিয়ানমারকে আহবান জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। বৈঠকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফেডেরিকো মুগোরিনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, স্পেন, ফ্রান্স, ইটালি, সাইপ্রাস, লাটভিয়া, ডেনমার্ক, এস্তেনিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ,হাঙ্গেরি, নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ক্রোয়েশিয়া ও চেক প্রজাতন্ত্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ছাড়াও আয়ারল্যান্ড ও গ্রিসের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং মাল্টার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ঘর-বাড়িতে আগুন লাগানো, মানবাধিকার লংঘন, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ, স্থলমাইনের ব্যবহার, যৌন নির্যাতন ও সহিংসতার ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে বৈঠকে বলা হয়, এটি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিধন অভিযানের ফলে হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের কারণে গত ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
ইইউভুক্ত দেশগুলো বৈঠকে জানায়, যখন কোনো দেশ থেকে এতবেশি সংখ্যক লোক পালিয়ে আসে তখন বুঝতে হবে সংখ্যালঘুদের উচ্ছেদের জন্য এটি পরিকল্পিত কার্যক্রম। ফলে এখন সবচেয়ে বেশি যেটি প্রয়োজন তা হল, শরণার্থীদের নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে আনা।
ইইউ জানায়, বর্তমানে রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মিয়ানমার সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে মিডিয়ারও কোনো প্রবেশাধিকার নেই। তাই সেখানকার প্রকৃত অবস্থা ও প্রয়োজন সম্পর্কে ধারণা করা সম্ভব হচ্ছে না।
আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য আসেম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনার ওপর জোর দেয়া হবে বলে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে সংস্থা এশিয়ার অন্য দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে বলেও জানানো হয়।
কেবিএ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: