
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পরিবেশ দূষণরোধে শুধু সরকারের ওপর নির্ভর করলে হবে না, শিল্পকারখানাকে নিজ দায়িত্বে দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে।
তিনি আজ সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশে সীসা দূষণ হ্রাসের সক্ষমতা উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক সহযোগী, বিশেষ করে ফ্রান্সের সহায়তায় পরিবেশ অধিদপ্তর এখন একটি সময়সীমাবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে পারে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সকল দূষণকারী শিল্পের বিরুদ্ধে একসঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব না হলেও, যেগুলোর পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই, সেগুলোর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তিনি জানান, শিল্প বন্ধ করা উদ্দেশ্য নয়, বরং তাদের ছাড়পত্র গ্রহণে বাধ্য করা এবং পুনর্বাসন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা জরুরি। পরিবেশগত ছাড়পত্রে নিয়মিত পুনর্বাসন কার্যক্রমের শর্ত সংযুক্ত করা উচিত, যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট শিল্পকারখানাগুলোকে দায়িত্ব নিতে হবে এবং তাদের পুনর্বাসন পরিকল্পনার প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা একটি দূষণ পুনর্বাসন তহবিল গঠনের প্রস্তাব দেন, যেখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দেবে। সফল পুনর্বাসনের পর তা ফেরত দেওয়া হবে, আর ব্যর্থ হলে সরকার ওই অর্থ দিয়ে পরিচ্ছন্নতার কাজ করবে। অন্যদিকে, তদারকি ও বাস্তবায়ন জোরদারে স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি ।
পরিবেশ উপদেষ্টা সীসাযুক্ত ব্যাটারির পরিবর্তে লিথিয়াম ব্যাটারি ব্যবহারে কর নীতির পরিবর্তন সহজ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-কে মাল্টিস্টেকহোল্ডার স্টিয়ারিং কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক শেখ সাইদুল হক, আইসিডিডিআরবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মায়া ভ্যানডেনেন্ট, পিওর আর্থ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক মিতালী দাস এবং ইয়ুথনেট গ্লোবাল এর এক্সিকিউটিভ কোওর্ডিনেটর সোহানুর রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: