ঢাকা | মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

রাইসের ফ্রি-কিক যাদুতে বিধ্বস্ত রিয়াল

odhikarpatra | প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৪৩

odhikarpatra
প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৪৩

ডিক্লান রাইসের দুটি দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে আর্সেনাল ৩-০ গোলে রিয়াল মাদ্রিদকে বিধ্বস্ত করেছে।

এমিরেটস স্টেডিয়ামে দ্বিতীয়ার্ধে রাইসের ফ্রি-কিক দুটি পুরো রিয়াল শিবিরকে হতবাক করে দেয়। ইংল্যান্ডের এই মিডফিল্ডারের দুর পাল্লার দুই রকেট গতির ফ্রি-কিকের পরে মিকেল মোরিনোর গোলে গানার্সরা দাপুটে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। আর এই জয়ে ২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছে গেছে আর্সেনাল।

অথচ ক্যারিয়ারে এর আগে কখনই রাইস ফ্রি-কিক থেকে গোল করতে পারেননি। কিন্তু সেট-পিস থেকে তার করা গোলদুটি যেভাবে রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কুর্তোয়া পরাস্ত হয়েছেন তাতে মনেই হয়নি রাইস এই ধরনের গোলে পারদর্শী নয়। রাইস যে নিখুঁত শট দুটি নিয়েছে তাতে কার্যত কুর্তোয়ার কিছুই করার ছিলনা।

ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত রাইস বলেছেন, ‘এটা কিভাবে হলো আমি এখনো বুঝতে পারছিনা। সবসময়ই আমার শট হয় ডিফেন্ডারদের দেয়ালে লেগেছে, অথবা বারের উপর দিয়ে গেছে। এবার আমি সামনে শুধুমাত্র দেয়াল দেখেছি এবং এরপর গোলরক্ষকের পজিশন লক্ষ্য করেছি। এরপর শট নিয়েছি। প্রথম গোল হবার পর দ্বিতীয়টিতে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি। দুটোতেই সফল হয়েছি। আমি সত্যিই দারুন খুশী। আজ রাতে আমি যে বিশেষ কাজটি করে দেখিয়েছি তা অনেকদিন আমাকে উদ্বেলিত করবে।’

ওয়েস্ট হ্যাম ও বর্তমানে আর্সেনালে খেলা রাইস পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই মূলত ডিফেন্সিফ মিডফিল্ডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু সবসময়ই দলকে গোল করে সহযোগিতা করতে চাইতেন। গানার্স বস মিকেল আর্তেতা এক্ষেত্রে তাকে পুরোপুরি সহযোগিতা করেছে। এ প্রসঙ্গে রাইস বলেন, ‘এমনকি ওয়েস্ট হ্যামেও সবাই আমাকে আরো বেশী শট নিতে বলতো। আমার মধ্যেও প্রতি ম্যাচে গোল করার একটি মানসিকতা তৈরী হয়েছি। আমার মধ্যে সেই যোগ্যতা ছিল। তবে আত্মবিশ্বাস পাচ্ছিলাম না। এজন্য প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। এটাই ফুটবল। যতটা সম্ভব দলকে সহযোগিতা করা যায়, সেটাই সবসময় লক্ষ্য থাকবে।’

এখনো পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা না জেতা আর্সেনাল এখন শেষ চারের পথে বেশ শক্তিশালী অবস্থানে আছে।

৫৮ মিনিটে রাইসে ৩২ গজ দুরের শটটি রিয়ালের চারজনের দেয়াল ঘেঁষে কোনাকুনি ভাবে জালে প্রবেশ করে। আর ৭০ মিনিটে দ্বিতীয়টি হয়েছে দেয়ালের উপর দিয়ে। দুটি গোলই কুর্তোয়া বামদিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও আটকাতে পারেননি। পাঁচ মিনিট পর মেরিনোর দারুন ফিনিশিংয়ে আর্সেনালের বড় জয় নিশ্চিত হয়।

স্টপেজ টাইমে এডুয়ার্ডো কামভিনগা দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গেলে মাদ্রিদের দু:শ্চিন্তা আরো বেড়েছে।

এই ম্যাচে ১৫ বারের চ্যাম্পিয়ন্স রিয়াল মাদ্রিদই সুস্পষ্ট ফেবারিট ছিল। কিন্তু আর্সেনাল ইনজুরির কারণে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতি উপেক্ষা করে এমন একটি পারফরমেন্স দেখিয়েছে যা তাদের ইতিহাসে অণ্যতম সেরা ম্যাচ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ইউরোপের সর্বোচ্চ আসরের এখনো পর্যন্ত শিরোপা না জেতা আর্সেনাল এর আগে ২০০৬ সালে ফাইনালে উঠেছিল। কিন্তু ঐ আসরে বার্সেলোনার কাছে পরাজিত হয়ে তাদের হতাশ হতে হয়।

মাদ্রিদের দুই তারকা ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পে ও ভিনিসিয়াস জুনিয়র এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মৌসুমে নিজেদের ভালই প্রমান করেছে। আরেক ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে প্রথম লেগে ভিনিসিয়াস আধিপত্য দেখিয়েছেন। বার্নাব্যুতে দ্বিতীয় লেগে এমবাপ্পে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। এমিরেটস স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে দুজনই সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত তাদের ব্যর্থতার দায় দলীয় ফলাফলে পড়েছে।

এমবাপ্পে ও ভিনিসিয়াস উভয়ই তিনটি করে শট নিয়েছিল। কিন্তু কোন শটই আর্সেনালের গোলরক্ষক ডেভিড রায়াকে বড় পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি।

আগামী সপ্তাহে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে দ্বিতীয় লেগে রিয়াল ফিরে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। যদিও কালকের এই পারফরমেন্সে ভর করে আর্সেনাল যে অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে তা অনেকটাই অনুমেয়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: