odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Monday, 20th October 2025, ২০th October ২০২৫
এক দশক পর ইরানের ওপর পুনর্বহাল হলো জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা। ইউরোপ বলছে চুক্তিভঙ্গ, আর তেহরান বলছে অবৈধ ও অন্যায় পদক্ষেপ। পারমাণবিক উত্তেজনা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে ফের বাড়ছে উদ্বেগ।

চুক্তি ভেঙে চূড়ান্ত টানাপোড়েন: এক দশক পর ফের জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার মুখে ইরান

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২৩ September ২০২৫ ২৩:৫৪

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২৩ September ২০২৫ ২৩:৫৪

এক দশক পর ইরানের ওপর ফের জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা, ইরান বলছে, "অন্যায়, অবৈধ ও অযৌক্তিক"। জাতিসংঘের আরোপিত বহুমুখী অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা এক দশক পর ফের কার্যকর হলো ইরানের ওপর। ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তির (জেসিপিওএ) মাধ্যমে যে নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়া হয়েছিল, এবার তা পুনর্বহাল করেছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। ইউরোপীয় এই তিন দেশ শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইরান ধারাবাহিকভাবে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এর সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাদের আর কোনো বিকল্প ছিল না, তাই স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া চালু করে নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনতেই হয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা অন্যায়, অবৈধ ও অযৌক্তিক। তিনি দাবি করেন, তেহরান কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে হাঁটছে না, বরং কেবল শান্তিপূর্ণ বিদ্যুৎ উৎপাদনকেই লক্ষ্য করছে। পেজেশকিয়ান আরও সতর্ক করে বলেছেন, নতুন নিষেধাজ্ঞা আলোচনার পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তিনি জানিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলি হামলা বন্ধের নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে না।

২০১৮ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেওয়ার পর থেকেই সংকট ঘনীভূত হয়। এরপর তেহরান নিষিদ্ধ পারমাণবিক কার্যক্রম বাড়িয়ে দেয়। চলতি বছরের জুনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যৌথভাবে ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক ঘাঁটিতে বোমা হামলা চালায়। এর পরপরই ইরান আইএইএ পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়। যদিও সম্প্রতি আইএইএ নিশ্চিত করেছে, পরিদর্শন কার্যক্রম আবারও শুরু হয়েছে। তবুও ইউরোপীয় পক্ষগুলো বলছে, ইরান পর্যাপ্ত তথ্য দেয়নি এবং তাদের উচ্চমাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ সম্পর্কে রিপোর্ট প্রকাশ করেনি। ইসরায়েল নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালকে একটি বড় অগ্রগতি বলে স্বাগত জানিয়েছে এবং বলেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ইরান কখনোই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হতে না পারে। অন্যদিকে ইউরোপীয় দেশগুলো জোর দিয়েছে যে নিষেধাজ্ঞার পুনর্বহাল কূটনীতির শেষ নয়। তারা ইরানকে যেকোনো উত্তেজনাপূর্ণ পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিকে একসময় মধ্যপ্রাচ্যের অস্থির রাজনীতিতে আশা জাগানিয়া মোড় বলা হয়েছিল। কিন্তু পুনরায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার মধ্য দিয়ে তা আবারও অনিশ্চয়তার মুখে পড়ল। ইরান বলছে, তাদের জনগণের স্বার্থে যেকোনো আঘাতের যথাযথ জবাব দেওয়া হবে, আর পশ্চিমা শক্তিগুলো চাইছে, ইরান যেন নতুন করে সংকট তৈরি না করে। আগামী দিনে আলোচনার টেবিলে কতটা অগ্রগতি হয়, সেটিই এখন মূল প্রশ্ন।

- বিশেষ প্রতিনিধি (Special National Correspondent) মোঃ সাইদুর রহমান (বাবু)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: