ঢাকা | Tuesday, 14th October 2025, ১৪th October ২০২৫
সম্পাদকীয়

শিক্ষকের মর্যাদা হারালে জাতি হারায় দিশা: সম্মানহীন শিক্ষায় থাকে না কোনো প্রত্যাশা।

odhikarpatra | প্রকাশিত: ৫ October ২০২৫ ১০:১৬

odhikarpatra
প্রকাশিত: ৫ October ২০২৫ ১০:১৬

সম্পাদকীয়

When Teachers Lose Dignity, the Nation Loses Direction: Education without Respect Yields No Future

শিক্ষা একটি জাতির আত্মা, আর শিক্ষক তার শ্রেষ্ঠ রূপকার। মনে রাখরেত হবে,

When teachers lose dignity, the nation loses direction.
For in education without respect, no brilliance ever blossoms.

৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে, আমরা যখন শ্রদ্ধা জানাই জ্ঞানের পথপ্রদর্শকদের, তখন প্রশ্ন জাগে—এই শ্রদ্ধা কি শুধু আনুষ্ঠানিক? নাকি অন্তরে ধারণ করি সেই মহৎ মানুষের মর্যাদা, যাঁর হাতে গড়ে ওঠে আগামী দিনের মানুষ?

আজকের বাস্তবতায় শিক্ষক হয়ে ওঠা যেন এক কঠিন সাধনা। মর্যাদার আসনে বসার আগে পেরোতে হয় বঞ্চনার দীর্ঘ পথ। ন্যায্য বেতন নেই, চাকরির নিরাপত্তা নেই, নেই সামাজিক স্বীকৃতির নির্ভরতা। যেন শিক্ষকতা এক অভিশপ্ত ব্রত, যেখানে ত্যাগ আছে, কিন্তু স্বীকৃতি নেই।

বেসরকারি শিক্ষকদের বড় একটি অংশ মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে জীবন চালান দায়ে পড়ে যান। এমপিওভুক্তির আশায় বছরের পর বছর অপেক্ষা করে যাঁরা ক্লান্ত, তাঁদের চোখে ভর করে হতাশা। আর সরকারি শিক্ষকরা বারবার প্রশাসনিক জটিলতার গোলকধাঁধায় আটকে পড়েন।

জাতির ভবিষ্যৎ যদি শিক্ষক নির্মাণ করেন, তবে সেই নির্মাতারই যদি আশ্রয় না থাকে, তবে ভবিষ্যৎকে আমরা কীভাবে রক্ষা করব?

সম্মানহীন শিক্ষা কখনোই উদার মানস গড়তে পারে না। সেখানে না থাকে নৈতিকতার শিকড়, না থাকে স্বাধীন চিন্তার ডানা। শিক্ষক যদি অপমানিত হন, তাহলে শিক্ষার পবিত্রতা হারায়।

সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, পদে পদে শিক্ষকদের অপমান, এমনকি হচ্ছেন শারীরিক নির্যাতনের শিকার। শিক্ষকদের করা হচ্ছে মবের অন্যতম টার্গেট, কেননা ঢাল তলোয়ার বিহীন এই শিক্ষক প্রজাতির উপর ক্ষমতা দেখানো যে সবচেয়ে সহজ। অপরদিকে বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষকদেরকে রাজপথে নামতে হচ্ছে—যা একটি সভ্য রাষ্ট্রের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। শিক্ষককে লাঠিচার্জের মুখে পড়তে হলে, জাতি হিসেবে আমাদের আত্মসমালোচনার সময় এসেছে। ভুলে গেলে চরবে না, শিক্ষক হচ্ছেন সেই প্রদীপ, যিনি নিজের আলো দিয়ে অপরকে আলোকিত করেন। কিন্তু যদি তাঁর শিখায় আগুন না থাকে, তবে আলো কীভাবে ছড়াবে? তাই, এখনই সময় আমাদের চেতনার চোখ খুলে দেওয়ার:

  1. শিক্ষকতার পেশাকে মর্যাদার আসনে বসাতে হবে।
  2. বেতন কাঠামো, পেনশন, চাকরি সুরক্ষা—এই তিনটি স্তম্ভে শিক্ষককে শক্ত ভিত্তি দিতে হবে।
  3. নিয়োগ ও পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতাভিত্তিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
  4. শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মব বন্ধ করতে হবে।

সামাজিক মানসিকতায়ও পরিবর্তন আনতে হবে। শিক্ষককে আর শুধু "পাঠদাতা" হিসেবে নয়, বরং জাতি গঠনের প্রথম সারির নায়ক হিসেবে ভাবতে হবে।

আজ, বিশ্ব শিক্ষক দিবসে আমরা শুধু ফুল দিয়ে নয়—প্রতিজ্ঞার মালা গেঁথে তাঁদের হাতে তুলে দিতে চাই।

শিক্ষকের মর্যাদা হারালে জাতি হারায় দিশা,
সম্মানহীন শিক্ষায় বিকশিত হয় না প্রতিভার নিভৃত চাঁদরা।

তাই সেই প্রতিভার দীপ্ত তারা বিকশিত করতে শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকের সম্মান ও মর্যাাদা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের সবার।

— লেখক: . মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান (লিটু), অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং উপদেষ্টা সম্পাদক, আমাদের অধিকা্রপত্র, odhikarpatranews@gmail.com

আপনার মতামত দিন: 

আপনার মতে, বাংলাদেশে শিক্ষক বঞ্চনা: গৌরব না লজ্জা?

আমরা প্রতি বছর ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ পালন করি ফুল, বক্তৃতা আর ফেসবুক পোস্টে ভরিয়ে। কিন্তু বাস্তবে—
যে শিক্ষক জাতি গড়েন, তিনিই আজ সবচেয়ে অবমূল্যায়িত পেশাজীবী।
কম বেতন, প্রশাসনিক হয়রানি, পদোন্নতিতে বৈষম্য, আর শিক্ষানীতি তৈরিতে শোনা হয় না তাদের কণ্ঠ।
একজন শিক্ষক যখন নিজের সন্তানকে শেখাতে টিউশনি ধরেন, তখন সেটি শুধু ব্যক্তিগত সংকট নয়—এটি জাতির নৈতিক পরাজয়।

???? প্রশ্ন: আপনি কি মনে করেন—বাংলাদেশে শিক্ষকরা আজ সত্যিই “বঞ্চিত”?
কমেন্টে লিখুন — Agree / Disagree ????

#TeachersDay #শিক্ষক_বঞ্চনা #EducationCrisis #RespectTeachers #Bangladesh



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: