odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Wednesday, 22nd October 2025, ২২nd October ২০২৫
আদালতের ঐতিহাসিক রায়ে বলা হয়, অভিযুক্ত নারীরা “আইনের সীমার মধ্যেই ছিলেন” — নাগরিক অধিকার কর্মীদের নতুন উদ্যম দিয়েছে এই রায়।

সিঙ্গাপুরে ফিলিস্তিন সংহতি পদযাত্রা মামলায় আদালতের রায়ে খালাস পেলেন তিন নারী

Special Correspondent | প্রকাশিত: ২২ October ২০২৫ ২০:৫২

Special Correspondent
প্রকাশিত: ২২ October ২০২৫ ২০:৫২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

সিঙ্গাপুরে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে আয়োজন করা এক পদযাত্রার মামলায় অভিযুক্ত তিন নারীকে আদালত খালাস দিয়েছে। তারা ছিলেন মোসাম্মাদ সোবিকুন নাহার, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সিতি আমিরাহ মোহাম্মদ আসরোরি এবং কমিউনিটি সংগঠক কোকিলা আন্নামালাই। এই তিন নারীকে অননুমোদিত মিছিল আয়োজনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু বিচারক রায়ে বলেন, তাদের কার্যক্রম আইনের পরিপূর্ণ লঙ্ঘন নয় এবং তারা জানতেন না যে পদযাত্রার রুটটি নিষিদ্ধ এলাকায় পড়ে।

ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। প্রায় ৭০ জন অংশগ্রহণকারী একটি শপিং মল থেকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ইস্তানা পর্যন্ত হেঁটে যান। অংশগ্রহণকারীরা ফিলিস্তিনের প্রতীকী তরমুজ রঙের ছাতা বহন করছিলেন। র‌্যালির ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর কর্তৃপক্ষ তিন নারীকে আদালতে তোলেন। অভিযোগ করা হয়, তারা নিষিদ্ধ এলাকায় অনুমতি ছাড়া পদযাত্রা আয়োজন করেছেন। রায়ে বিচারক বলেন, প্রমাণ থেকে স্পষ্ট যে তিনজনই আইনের সীমার মধ্যে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। তারা সরকারি রাস্তায় হেঁটেছেন এবং কোথাও কোনো চিহ্ন ছিল না যে এটি নিষিদ্ধ এলাকা। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রতিজন নারীর সর্বোচ্চ ১০ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার (প্রায় ৭,৭০০ মার্কিন ডলার) জরিমানা অথবা ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারত। রায় ঘোষণার পর আদালতকক্ষে আসামিদের একজন কোকিলা আন্নামালাই বলেন, আমরা রায়ে বিস্মিত হলেও খুশি, কারণ এটি নাগরিক অধিকার আন্দোলনে নতুন উদ্যম আনবে। তিনি আরও বলেন, আমরা জানতাম হয়তো দণ্ডিত হব। কিন্তু আমাদের অভিযোগই তোলা উচিত ছিল না। তবুও এই খালাস আমাদের সম্প্রদায়ের জন্য এক প্রয়োজনীয় জয়।

সিঙ্গাপুরে জনসম্মুখে প্রতিবাদ বা রাজনৈতিক সমাবেশের অনুমতি খুব কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। কোনো রাজনৈতিক বা সামাজিক কারণ তুলে ধরে জনসমাবেশ করতে হলে পুলিশ অনুমতি প্রয়োজন। ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ সম্পর্কিত যেকোনো সমাবেশের অনুমতি কর্তৃপক্ষ আগেই নিষিদ্ধ করেছে, কারণ এ ধরনের বিষয়ে জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের আশঙ্কা রয়েছে বলে তাদের যুক্তি। সিঙ্গাপুরের প্রসিকিউশন অফিস বিবিসিকে জানিয়েছে, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে। এর আগে কর্তৃপক্ষ ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ সম্পর্কিত অনলাইন ও অফলাইন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে তদন্তও চালিয়েছে। তবে সিঙ্গাপুর সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে দুই রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন করে আসছে। চলতি বছর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনে কার্যকর সরকার গঠিত হলে এবং তারা ইসরায়েলের অস্তিত্ব মেনে নিলে সিঙ্গাপুর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।

-মো: সাইদুর রহমান (বাবু), বিশেষ প্রতিনিধি. অধিকারপত্র



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: